“নুন ভাত খেয়ে দিন কাটিয়েছি! একা চালিয়েছি সংসার” সুপারহিট ‘মা’ ধারাবাহিক শেষ হতেই জীবনে নেমে আসে চরম সংকট! অকপট তিথি বসু

বাংলা ধারাবাহিকের ইতিহাসেই যে ধারাবাহিকগুলোর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম স্টার জলসার (Star Jalsha) মা (Maa) ধারাবাহিক। একটানা ৬ বছর স্টার জলসার পর্দায় রাজত্ব করেছিল ধারাবাহিকটি। টিআরপি তালিকাতেও সবচেয়ে বেশি শীর্ষস্থান দখল করেছিল ধারাবাহিকটি। আজও একইভাবে ধারাবাহিকের কাহিনী এবং গান দর্শকদের মনের মধ্যে গেঁথে রয়েছে। আর স্টার জলসায় মা ধারাবাহিকের মাধ্যমেই দর্শকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ঝিলিক চরিত্রটি।

মা সিরিয়ালের সেই ছোট ঝিলিক আজ অনেক বড় হয়ে গেছে। জীবনের নানান চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজ সে একজন পরিপূর্ণ মানুষ। কোন অডিশন ছাড়াই স্টার জলসার মতো একটি চ্যানেলের ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুযোগ আসে অনেক ছোটবেলায়। খোদ এসভিএফের তরফ থেকেই যোগাযোগ করা হয়েছিল তার সঙ্গে। প্রথম ধারাবাহিকে অভিনয় করেই পেয়েছিল বিপুল জনপ্রিয়তা। কথা হচ্ছে অভিনেত্রী তিথি বসুর ব্যাপারে।

মা বাবার সেপারেশন, নুন ভাত খেয়ে দিন কাটিয়েছেন তিথি বসু

যদিও জীবনের লড়াই শুরু হয়েছিল ধারাবাহিকটি শেষ হওয়ার পর। যখন তিথির বয়স মাত্র ১৫ বছর। আলাদা হয়ে যায় তার বাবা মা। ৪-৫ মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় সমস্ত জমানো টাকা। মাধ্যমিকের সময় কখন সবার বাবা মায়েরা তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে দিতে আসতেই, তিথি আসতেন একা। বাবা চলে যাওয়ার পর সংসারের সমস্ত দায়িত্বে কাঁধে তুলে নেয় তিথি। বাজার করা থেকে ব্যাঙ্কের কাজ সামলানো সবটাই একা হাতে করতেন তিনি। এমনও দিন গেছে খালি নুন ভাত খেয়ে কাটিয়েছেন দিন।

বাবার চলে যাওয়ার পর ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছিলেন অভিনেত্রী মা। কষ্ট হয়েছিল তারও। লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদতেন তিনিও যাতে কো মা দেখতে না পারেন। পরিবারের প্রায় সকলেই তাকে দেখতে থাকে তাচ্ছিল্যর চোখে। সকলেই ভেবেই নিয়েছিল বাবার চলে যাওয়ার পর আর কিছুই হবে না তার। পাড়াপ্রতিবেশীরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তার দিক থেকে। তবুও হাল ছাড়েননি তিনি। নিজেদের হাতে স্কুলের টাকা জমা দিয়ে চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা।

আরও পড়ুন: তুমি আসে পাশে থাকলে থেকে কেন বাদ পড়লেন পার্বতী অর্থাৎ অঙ্গনা রায়? সামনে এলো আসল কারণ

টিউশন ছাড়াই নিজের পরিশ্রমে উচ্চমাধ্যমিকে ৯২% নম্বর পেয়েছিলেন তিথি বসু

উচ্চমাধ্যমিকের সময়ও অর্থাভাবে কারণে টিউশন ফি দেওয়ার মতোই টাকা ছিল না তার হাতে। কোনরকম টিউশন ছাড়া নিজে একা পড়াশোনা করেই উচ্চমাধ্যমিকে ৯২% নম্বর পেয়েছেন তিনি। মার্কশিট হাতে আসতেই নিয়ে গিয়েছিলেন বাবাকে দেখাতে। আজ ফের এক হয়েছেন তার বাবা মা কিন্তু তিথি ভোলেনি তার অতীতের এই কালো অধ্যায়। বরং সেই কালো দিনগুলোকেই হাতিয়ার করে মানসিকভাবে আরও শক্ত হয়েছেন তিথি। নিজের টাকায় আজ তিনি কিনেছেন গাড়ি। বাবার মায়ের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। ঝিলিক থেকে হয়ে উঠেছেন তিথি বসু।

Back to top button