অসুস্থ মায়ের অপমানেও গর্বিত মুখে দাঁড়িয়ে ছেলে! বাবা-সম মানুষটার অপমানেও সে নীরব! “স্বার্থপর একটা, বউয়ের হাতের পুতুল!”— ‘চিরসখা’য় বুবলাইয়ের চরিত্র নিয়ে ভীষণ বিরক্ত দর্শকরা!

বলুন তো একটা ছেলে ঠিক কতটা নিচে নামলে, মায়ের মতো একজন মানুষকে অপমানিত হতে দেখে মুখে কুলুপ এঁটে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে? হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন! কথা হচ্ছে ‘চিরসখা’র (Chiroshokha) বুবলাইকে নিয়ে। ছোটবেলায় যে ‘নতুন কাকু’ তাকে স্কুলে নিয়ে যেত, রাতে ঘুমপাড়িয়ে দিত, খিদের সময় খাবার তুলে দিত—আজ সেই মানুষটার সন্মনে আঘাত পড়লেও একফোঁটা প্রতিবাদ নেই! বরং চোখে-মুখে যেন এক গর্বের ছাপ, “আমার বউ, আমার শ্বশুরবাড়ির লোক, কিছু বলব না!”

বুবলাইয়ের এইরূপ আচরণে বেজায় চটেছেন দর্শকেরা। কেউ কেউ বলছেন, “বুবলাইয়ের চরিত্র দেখে এখন আর রাগ হয় না, কেমন একটা করুণা জাগে! যে নিজের মায়ের অপমান চোখের সামনে দাঁড়িয়ে দেখেও মুখ বন্ধ রাখে, সে আদৌ মানুষ তো?” “স্বতন্ত্রর মতন মানুষের অপমানেও যে চুপ থাকে, এখন মায়ের অপমানেও জাস্ট ‘সাইলেন্ট মোড’? অভিনন্দন বুবলাই, তুমি এবার নিজেকেই হারিয়ে ফেললে।” আর বর্ষা ও তার মা?

Chiroshokha, Aparajita Ghosh Das, Sudip Mukherjee, Kamalini, Swatantra, Bublai, Barsha, Leena Ganguly, Star Jalsha, Bengali Serial, চিরসখা, অপরাজিতা ঘোষ দাস, সুদীপ মুখোাধ্যায়, কমলীনি, স্বতন্ত্র, লীনা গাঙ্গুলি, স্টার জলসা, বাংলা সিরিয়াল

তাদের কথা তো আর বলার মতনই নয়। বর্ষা বা তার মায়ের মতো চরিত্ররা টিভির পর্দা ছেড়ে বাস্তবে বেরোলে মানুষের কাছে জুতো পেটা হতে পারেন নিঃসন্দেহে! একজন অসুস্থ মহিলাকে বিছানা থেকে তুলে এনে অপমান করাটাই কি পারিবারিক শিক্ষা! তাও আবার অতিথি হয়ে এসে? এটা যে শাশুড়ির তার মাকে নিয়ে করা নোংরা অপমান, বুবলাইয়ের জন্মকর্মের প্রতি থুতু ছুড়ে দেওয়া, সেটা যেন বুঝেও অবুঝের মতো থেকে গেল বুবলাই। ন্যূনতম লজ্জাও যেন নেই তাদের মধ্যে।

দর্শকেরা বলছেন একজন মা হয়ে কিভাবে বর্ষার মা কমলিনীকে এভাবে নোংরা আক্রমণ করতে পারেন? স্বতন্ত্রর অবদান যে কতটা এই পরিবার এবং বুবলাইয়ের জীবনে, তার সিকিভাগও জানেন না। সুতরাং দর্শকের সব সহ্যের সীমা পার করে গেছে এই পর্ব দেখে। এবার আসা যাক আসল ঘটনা যাকে কেন্দ্র করে এই পরিবেশের সৃষ্টি।
নেমন্তন্ন কাণ্ড! মানে বর্ষার মা নববর্ষ উপলক্ষে মেয়ের শশুরবাড়ি এসেছিলেন নেমন্তন্ন করতে। সেখানে নতুনকে ছাড়া সবাইকে নেমন্তন্ন করা হলো, এমনকি নতুনের দাদা বৌদিকেও!

আর সেই সিদ্ধান্তকে বুবলাই বলছে, “ওটা ওনাদের ব্যাপার।” নিজের শ্বশুরবাড়ি কাকে নেমন্তন্ন করবে, করবে না—সেটা ওনাদের ব্যাপার। কিন্তু নিজের পরিবারের কেউ কোথাও যাবে কি না, সেটা নিয়ে বর্ষা আর বুবলাইয়ের মাথাব্যাথা! তখন কোথায় থাকে এটা ওনাদের ব্যাপার? সমাজেরও এত নিয়ম থাকে না, যতটা বুবলাই তার মায়ের মাথার উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। ছেলে তো নয়, যেন হিপোক্রেট!

আবার নাকি নতুন কাকু যে বুবলাইয়ের চাকরি কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন, সে কথাও নাকি বর্ষা তার মাকে জানিয়েছে! দর্শকেরা বলছেন, “দয়া করে নিন, চাকরিটা শুধু একবার কেড়ে নিন নতুন বাবু! অন্তত এই ছেলেটার হুস ফিরবে। বুঝবে, যে মানুষটা ‘বাবার মতো ছিলেন’ তিনি শত্রু নন, বরং এমন হীরার মূল্য বোঝার ক্ষমতা তার এখনও হয়নি। আজ যদি সেই চাকরি যায়, তবে অন্তত বুবলাই একটাবার হলেও ভাববে, সে কার পাশে ছিল আর কার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল।”

আরও পড়ুনঃ “একসাথে শুয়েছি বলেই বিয়ে করব নাকি!” “সম্মতি নিয়ে শুলে ওটা পরকীয়া হয়না!”—এক বিছানায় শুতে রাজি, বিয়েতে নয়! রুদ্রনীলের বিস্ফোরক স্বীকারোক্তিতে ক্ষুব্ধ নেটপাড়া!

লীনা গাঙ্গুলির এই ‘চিরসখা’ এখন আর শুধুই ধারাবাহিক নয়, হয়ে উঠেছে বাস্তবের এক জ্বলন্ত উদাহরণ! দর্শক হিসেবে আমাদেরও একটাই কথা—সংসার রক্তে নয়, হৃদয়ের বন্ধনে, একে অপরের ভালোবাসা আর সন্মানে গড়ে ওঠে। আর যেখানে হৃদয়টাই নেই, সেখানে পরিবারের মুখোশ পড়া মানুষগুলো শুধু কুৎসা রতায়। ‘চিরসখা’ দেখে চোখ খুলুন, আর বুবলাইদের চিনে রাখুন!আপনার পাশের লোকটা যদি কখনও এমন হয়, যেন চিনতেও ভুল না হয়।