স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) এখন যেন হয়ে উঠেছে এক সামাজিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু। একাংশের দর্শকদের মনে প্রশ্ন— মধ্যবয়সে এসে এক মহিলার নতুন করে আবার সংসার পাতার সিদ্ধান্তকে কতটা সফল হবে? অতীতকে মাথায় রেখে সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্যতাই বা কতটা? এর নেপথ্যে রয়েছে স্বতন্ত্র ও কমলিনীর বিয়। এই নিয়ে যেমন কেউ উচ্ছ্বসিত, তেমনই কেউ ভাবছেন, এই সিদ্ধান্তের প্রয়োজন ছিল কি? অভিনেত্রী অপরাজিতা ঘোষ দাস (Aparajita Ghosh Das) অভিনীত কমলিনী বরাবরই এক মায়ের দৃঢ়তা ও আত্মসম্মানের প্রতীক।
সংসারে হাজার সমস্যার মধ্যেও সে নিজের জায়গা থেকে সরে আসেনি। তাই তাঁর জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়কে দর্শকরা শুধু ভালোবাসা নয়, জীবনের পরিপূর্ণতা হিসেবে দেখেছেন। কিন্তু গল্পের ভেতরেই দেখা গেছে, কমলিনীর এই সিদ্ধান্তে খুশি নয় অনেকে। বিশেষত বড় ছেলে বুবলাইয়ের প্রতিক্রিয়া যেন সমাজেরই এক প্রতিচ্ছবি— যেখানে এখনও মায়ের ব্যক্তিগত ইচ্ছাকে সন্তানরাও সহজে মেনে নিতে পারে না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গেই নিজের স্পষ্ট মতামত জানিয়েছেন অপরাজিতা ঘোষ দাস। তিনি বলেছেন, “কুড়ি বছর পঁচিশ বছরের দাম্পত্যের পর, অনেক সময় দেখা যাচ্ছে যে বিচ্ছেদ হচ্ছে।
আমার মনে হয় দু’জন মানুষ বা বলা ভালো নির্দিষ্টভাবে একজন যদি মনে করেন তিনি জীবনে একজন বন্ধু চান, সেটাও যেমন সমান গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত। আবার উল্টোটা হলেও একই হওয়া উচিত। একটা মানুষ কিভাবে তার জীবন যাপন করতে চায়, সেটার অধিকার একান্ত তার। এর বাইরে কারও মতামত তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। সেই দিক থেকে যারা মতামত দেন, তাদের উচিত একবার নিজেকে সেই জায়গায় বসিয়ে দেখে।” অপরাজিতার এই কথাগুলোর মধ্যেই যেন লুকিয়ে আছে সমাজের প্রতি এক স্পষ্ট বার্তা— নারীর জীবন শুধু সম্পর্ক বা দায়িত্বের পরিসরে সীমাবদ্ধ নয়।
তারও আছে নিজস্ব ইচ্ছা, পছন্দ ও বেছে নেওয়ার অধিকার। বিশেষ করে মধ্যবয়সে এসে নতুন করে সম্পর্ক গড়া বা জীবনের সঙ্গী খোঁজার সিদ্ধান্তকে কেন বিচার করা হবে, সেই প্রশ্নই তুলেছেন তিনি। তাঁর মতে, সুখের সংজ্ঞা ব্যক্তিগত, তাই সেটা অন্যের চোখে যাচাই করা অন্যায়। কিন্তু অনেকের চোখেই এই সিদ্ধান্ত সমাজ বিরোধী এবং স্বেচ্ছাচারিতা! কেউ বলছেন, “এই নিজের মতো ভালো থাকার কনসেপ্টটা সন্তানদের জীবন ছারখার করে দিতে পারে সেটা একবারও ভেবে দেখেছেন! নিজের মতো জীবন যাপন করার প্রবল ইচ্ছা থাকলে সন্তান আসার আগে ভাববেন দয়া করে।
আরও পড়ুনঃ ‘তোমাদের কাছে হাত পাততে হচ্ছে…’, রাজা-মধুবনীর আবেগঘন বার্তা ভাইরাল, ভক্তদের কাছে কী চাইলেন এই তারকা দম্পতি
বন্ডিং বা পরিবার বজায় রাখতে গেলে কিছুটা করে ত্যাগ সবাইকে করতে হয়। সেটা করতে না চাইলে পরিবার তৈরি করার দরকারই নেই।” অন্যজন বলেছেন, “নিজেদের ফুর্তি শেষ হয়ে গেলে সন্তানকে একটা অনিশ্চিত জীবন দিয়ে নিজের মতো যাপন করলে তাকে পশু বলে মানুষ নয়। মানুষ আর পশুর মধ্যে নইলে তফাৎ থাকে কি করে? তাহলে সবাই স্বৈরাচারী হয়ে উঠবে আর কেউ কাউকে সম্মান করবে না কেউ কাউকে কিছু মনে করবে। আর এটা সমাজের জন্য প্রযোজ্য নয়!”






