মায়ের অপমানে আর নয়! ‘চিরসখা’তে বুবলাইয়ের মাকে অপমানে ফুঁসে উঠলো বাকি দুই সন্তান বাবিল ও মিঠি! ‘আদর্শ সন্তান’ বলছেন দর্শকরা!

স্টার জলসার ‘চিরসখা’ (Chiroshakha) ধারাবাহিকে এবার উঠে এল সেই চিরন্তন সত্য— মা সবার জন্য এক হলেও সব সন্তান একরকম হয় না। মা-ই হয়তো সবার জন্যই এক, কিন্তু মায়ের প্রতি সবার ব্যাবহার আর মানসিকতায় বিস্তর ফারাক। এই ধারাবাহিকে যেখানে একদিকে বড় ছেলে বুবলাই মা কে প্রতিনিয়ত যেভাবে মানসিক নির্যাতন ও অপমান করে চলেছে, সেখানে ছোট ছেলে বাবিল আর মেয়ে মিঠি যেন এক অন্যরকম বার্তা দিয়ে গেল—মাকে কাঁদতে দেওয়া যাবে না, মাকে অসম্মান করলে তাঁরা চুপ করে থাকবেন না।

‘চিরসখা’-র সাম্প্রতিক পর্বে দেখা গেল, মায়ের অপমান আর সহ্য করতে না পেরে বাবিল ও মিঠি যেভাবে দাদাকে পাল্টা জবাব দিল, তা যেন বাস্তব জীবনের প্রতিফলন। বুবলাইয়ের আচরণ দিন দিন যেন আরও কঠোর, আরও অবিবেচক হয়ে উঠছে। যে মা কমলিনী দিনের পর দিন নিঃশব্দে সংসার সামলেছেন, একের পর এক পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়ে ছেলেমেয়েদের বড় করেছেন—সেই মায়ের চোখের জলও যেন বুবলাইয়ের কাছে তুচ্ছ, শুধুই অপ্রয়োজনীয় আবেগ। না শরীর খারাপ, না মানসিক অবনতি, মায়ের যন্ত্রণার কোনও অনুভবই যেন তার হৃদয়ে স্থান পায় না।

বরং, মা যদি নিজের মত প্রকাশ করেন, তার প্রতিবাদ করেন—তাহলে তার ‘অসন্তুষ্ট মুখ’টাই যেন শেষ কথা! এই অন্ধ অহংকারের বিপরীতে, বাবিল ও মিঠির দৃঢ় অবস্থান যেন দর্শকদের হৃদয়ে আলাদা স্থান করে দিয়েছে। তারা দুজনেই খুব স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছে—এই বাড়িতে মায়ের অসম্মান আর সহ্য করা হবে না। বাবিল তার বড় দাদাকে মুখের উপর বলেছে, “তোর যদি না পোষায়, বউকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যা, কিন্তু মায়ের মাথায় আর আঘাত দিস না।” মিঠিও মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের দায়িত্ববোধ দেখিয়েছে, যা দর্শকদের আবেগে ভাসিয়েছে।

কমলিনী নিজে যদিও চুপচাপ, কিন্তু তাঁর চোখের ভাষা স্পষ্ট। সন্তানদের এই দ্বন্দ্বে তাঁর হৃদয় টুকরো টুকরো হচ্ছে, কিন্তু অন্তত মিঠি আর বাবিলের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর নিরুপায় মুখে কিছুটা আশার ছায়া দেখা যাচ্ছে। এই দুই সন্তান যেন সমাজে এক উদাহরণ স্থাপন করছে—মা শুধুই জন্মদাত্রী নন, তাঁর সম্মান রক্ষাও সন্তানের কর্তব্য। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্পে প্রতিটি চরিত্রই জীবন্ত, প্রতিটি সম্পর্ক এক একটি ধাঁধার মতো। কিন্তু এই মুহূর্তে যে পাঠ সবচেয়ে গাঢ়ভাবে ফুটে উঠছে তা হল—মাকে যে ভালোবাসে, সে তাঁর পাশে দাঁড়াতেই জানে।

আরও পড়ুনঃ খাদান দেখে বুঝে গেছি, টাকা না থাকলে পুরস্কার নেই! টালিউডের কালো সত্যি ফাঁস করলেন জনপ্রিয় পরিচালক!

একজন মা কখনোই অবজ্ঞার যোগ্য নন। বরং তাঁর চোখের জল চেপে রাখে যে অভিমান, সেটাই একদিন প্রশ্ন তোলে—এই ঘর কি আদৌ আমার? ‘চিরসখা’-র সাম্প্রতিক কাহিনি আমাদের এই ভাবনার মুখোমুখি দাঁড় করায়— মায়ের প্রতি আমাদের দায়িত্ব কতটা? আমরা কি কেবল সম্পর্কের নামেই বাঁচি, নাকি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার আসল রূপ বুঝি?