বাংলা ধারাবাহিকের কাছে আইনস্টাইন-নিউটনের থিওরি কিছুই না! বাংলা ধারাবাহিক মানেই অলৌকিক ব্যাপার। যতই বিজ্ঞান বলুক, “নিউটনের তৃতীয় সূত্র”, আমাদের সিরিয়ালগুলো বলবে, “তোর ফিজিক্স আমার ধারাবাহিকের ধারেকাছেও আসে না!” নাসার বিজ্ঞানীরা যেখানে মাথার চুল ছিঁড়ে ফেলছে, সেখানে আমাদের ধারাবাহিকের নায়িকা জলের নিচে থেকেও পার্লার ফ্রেশ চুল নিয়ে উঠে আসছে! আর এবার স্টার জলসা তাদের নতুন ধারাবাহিক “রাঙামতি তীরন্দাজ” (Rangamati Tirandaj) -এর প্রোমোতে সেই কথাটাই আবার প্রমাণ করল!
সম্প্রতি স্টার জলসার তরফ থেকে এই ধারাবাহিকের একটি প্রোমো রিলিজ পেয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে দোলের দিন সবাই রঙ খেলায় মেতেছে আর রাঙামতিও তাই তাঁর উরণ বাবুকে পায়ে আবির দিয়ে প্রণাম করে। এবং উরন বাবুও রাঙার গালে আবির দিয়ে বলে, “বুরা না মানো হোলি হায়”। এই আনন্দের মুহূর্তেই ব্যাঘাত ঘটে যখন রাঙা লক্ষ করে একটি বাচ্চা ছেলে জলে ডুবে যাচ্ছে। ব্যাস, নায়িকার হিরো মোমেন্ট! নায়িকা বীর বিক্রমে ঝাঁপ দিলেন, জলের নিচে ঢুকে গেলেন, আর এক লহমায় তীরন্দাজির গুনে তাকে বাঁচিয়ে তুললেন!
এই দৃশ্য দেখেই তো নেটিজেনদের হাসির দমক! একদিকে কেউ লিখেছেন, “জলের নিচেও চুল শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনের মতো ওড়ে কেমন করে?” তো আরেকজনের প্রশ্ন, “গুলতি দিয়ে তীর ছোড়া আর তীরের এত আত্মসম্মান যে হিট করেও ফিরে আসে! বাংলা সিরিয়ালের তীর না হয়ে গেল বুমেরাং!” আবার কেউ তো বলেন, “জলে ডুব দেওয়ার সময়ে তো নায়িকার হতে কিছু ছিলোনা তাহলে গুলতি, তীর এসব এলো কোথা থেকে?” আরও একজন লিখেছেন,”জলের নিচে চোখ খুললেই যেখানে দৃষ্টি ঘোলা হয়ে যায়, সেখানে বাংলা সিরিয়ালের নায়িকা ফুল মেকআপ, পারফেক্ট কাঁচা কাজল আর লাল টিপ পরে দিব্যি তীরন্দাজি করছে!
নাসার বিজ্ঞানীরা এক্ষুনি মাথা ঠুকতে বসবেন!” কেউ সরাসরি ‘ডিজাস্টার সিরিয়াল’ বলে দিলেন, তবে ট্রোলের মধ্যেও হাসির রোল পরে গেছে! কেউ লিখেছেন, “বাংলা সিরিয়াল মানেই অলৌকিক ঘটনা, এখন শুধু অপেক্ষা করছি জলের নিচে বটগাছ বেড়ে ওঠা দেখার!” আরেকজন লিখেছেন, “গাঁজার ওভারডোজ”। অন্যজন তো ওটাকে ‘ওয়াটারপ্রুফ শাড়ি-চুল’ বলে ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েননি! আরেক জনের পর্যবেক্ষণ, “জলের নিচেও শাড়ির প্লিট উড়ে যায়, ভাবা যায়?” শেষমেষ দর্শকদের একটাই অনুরোধ—”দয়া করে আমাদের নিউটনকে শান্তিতে থাকতে দাও!”
আরও পড়ুনঃ রঙের খেলায় মেতে আরাত্রিকা! মাটির থালায় আবির, সঙ্গে রহস্যময় প্রেমিক! পর্দার রাইকে আবিরে রাঙালো কে?
বাংলা ধারাবাহিক মানেই নতুন কিছু, মানে নতুন উদ্ভাবন! কল্পনার সীমানা ছাড়িয়ে বিজ্ঞানকেও হার মানানোর ক্ষমতা রাখে আমাদের টিভি দিদিরা! কিন্তু প্রশ্ন একটাই—এই ধারাবাহিকগুলো কি আসলেই নতুন ধরনের কনটেন্ট দিচ্ছে, নাকি দর্শকদের হাসির খোরাক জোগাচ্ছে? ‘রাঙামতি তীরন্দাজ’-এর মতো ধারাবাহিক কি আদৌ বাংলা টেলিভিশনের নতুন দিশা দেখাবে, নাকি আবারও সেই অলৌকিক তীরন্দাজি দেখিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলের মুখে পড়বে? আপনাদের মতামত কী?