স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরসখা’তে (Chiroshokha) দিন দিন আরও বাড়ছে অশান্তি। প্লুটোর পরিণতির আগে পর্যন্ত ধারাবাহিকটি নিজস্বতা ছিল, কিন্তু বর্তমানে যেন একেবারে এর পাঁচটা ধারাবাহিকের মতো প্রতিদিনের দ্বন্দ্বের ওপর নির্ভর করেই গল্প এগোচ্ছে।চন্দ্রের জীবনে একসঙ্গে দুটি নারী— কমলিনী ও সোহিনী। একসময় যাঁরা একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, আজ তাঁরা একই ছাদের তলায় থেকেও প্রতিদিন সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছেন। ঘরের ভেতর ষড়যন্ত্র থেকে শুরু করে প্রকাশ্য কটাক্ষ— সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নিচ্ছে।
দর্শকের মতে, এই দ্বন্দ্ব শুধু গল্পের নাটকীয়তাই বাড়াচ্ছে না, বরং সমাজের কাছে একধরনের অপসংস্কৃতির বার্তা দিচ্ছে। একসময় চন্দ্রের প্রতারণার বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিতে এগিয়ে এসেছিলেন সোহিনী। এমনকি কমলিনীর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে ন্যায় পাইয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সোহিনী আজ একেবারেই ভিন্ন চেহারায়। বর্তমানে স্বামীর কথায় সুর মিলিয়ে কমলিনীকে আক্রমণ করতে বিন্দুমাত্র পিছপা হচ্ছেন না। চন্দ্রের প্রতারণার কাহিনি যাঁর মুখেই প্রথম শোনা গিয়েছিল, আজ সে-ই আবার চন্দ্রকে আঁকড়ে ধরে কমলিনীকে দোষারোপ করছেন।
অন্যদিকে কমলিনীর অবস্থাও কম করুণ নয়। একসময় যাঁকে মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছিলেন, সেই সোহিনীই আজ তাঁকে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ঘরের কাজের চাপ বৃদ্ধ শাশুড়ির উপর চাপিয়ে দিয়ে বর্ষা আর সোহিনী নিশ্চিন্তে দিন কাটাচ্ছেন, এমন দৃশ্যই দেখানো হচ্ছে ধারাবাহিকে। অথচ প্রতিবাদ করতে এগিয়ে এলে কমলিনীকেই শুনতে হচ্ছে চরিত্র নিয়ে নোংরা কটাক্ষ। যে মানুষ একদিন নিজের সব টাকা খরচ করে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিল, আজ তার অস্তিত্বই যেন মুছে দিতে চাইছে বাকিরা।
একদিকে পরিবারের বৃদ্ধদের অসম্মান, অন্যদিকে গল্পে দুই নারী বারবার একে অপরের চরিত্র নিয়ে অপমান করছে। একজন অন্যজনকে দোষারোপ করছে, স্বামীর নামে দোষ চাপিয়ে নিজের অবস্থানকে ন্যায্য প্রমাণ করতে চাইছে। আর এই টানাপড়েনের মাঝেই দর্শকদের প্রশ্ন, সত্যিই কি এই গল্প সমাজের জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করছে? নাকি এর মাধ্যমে একধরনের অশালীন দ্বন্দ্ব ও পারিবারিক বিদ্বেষকেই স্বাভাবিক করে তুলছে?
আরও পড়ুনঃ “ক্ষমা চাইতে হবে”— অনির্বাণকে কড়া হুঁশিয়ারি রুদ্রনীলের, প্রথমে তিন ঘোষ তারপর সনাতন ধর্ম নিয়ে বিত’র্কিত গান বেঁধে টলিউডে বিত’র্কের মুখে অনির্বাণ
দর্শকদের বড় অংশের দাবি, এই ধারাবাহিক এখন আর সম্পর্কের মধুরতা বা পরিবারের শক্তি দেখাচ্ছে না, বরং এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করছে। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের ভাঙন, দুই নারীর মধ্যে হিংসা, প্রতিদিনের অপমান— সবই যেন দৃষ্টিকটু লাগছে অনেকের কাছে। তাঁদের মতে, এভাবে নাটকীয়তা বাড়াতে গিয়ে সমাজে অপসংস্কৃতি ছড়ানো হচ্ছে। তবুও বিতর্কের মাঝেই জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে ‘চিরসখা’, যদিও দর্শকরা চাইছে এবার বন্ধ করা হোক এই ধারাবাহিক।