টলিউডের দুই জনপ্রিয় মুখের মধ্যে ফের তর্ক-বিতর্ক। অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে ঘিরে তৈরি হল নতুন বিতর্ক, যার কেন্দ্রে এবার ‘সনাতন ধর্ম’। গত কয়েকদিন ধরে তাঁর ব্যান্ডের গান নিয়ে একের পর এক মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। প্রথমে ‘তিন ঘোষ’ নিয়ে গানের ছড়া, আর এবার সরাসরি ধর্ম নিয়ে মন্তব্য। সেই বক্তব্য ঘিরেই এবার প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিলেন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ।
রবিবার ‘হুলি গান ইজ়ম’-এর শোয়ের পরই শোরগোল শুরু হয়। অনির্বাণ ভট্টাচার্যের গানে উঠে আসে লাইন— “সনাতন এসে গেছে… আর সনাতনী? …সনাতন মানে আমি সনাতন ধর্মের কথা বলছি… আসেনি তো এখনো? …সনাতন ভারতে পৌঁছাতে হলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে…” এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই একাংশের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন অনির্বাণ। কেউ প্রশংসা করলেও, অনেকে ধর্ম নিয়ে এমন মন্তব্যকে ‘অসচেতন’ ও ‘অপমানজনক’ বলেই চিহ্নিত করছেন।
এবার আসরে নামলেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “বন্ধু অনির্বাণ ভট্টাচার্য, তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি আপনার এই জ্ঞানহীন বক্তব্যের।” রুদ্রনীলের অভিযোগ, অনির্বাণ নিজের ধর্মকে ছোট করছেন। তিনি কড়া সুরে মন্তব্য করেন, “অন্য কোনও ধর্ম নিয়ে এভাবে মন্তব্য করলে আজ আপনাকে কোথায় ঠাঁই হতো জানেন নিশ্চয়ই। সনাতন ধর্ম পৃথিবীর প্রাচীনতম ধর্ম।” এখানেই থামেননি তিনি। অনির্বাণকে সরাসরি বলেন, যদি সত্যিই ভুল করে থাকেন তবে ক্ষমা চাইতে হবে, নইলে সজ্ঞানে অপমান করেছেন।
রুদ্রনীল কেবল গান নয়, আরও একাধিক বিষয়েও অনির্বাণকে খোঁচা দেন। তাঁর কথায়, টলিউডের মাফিয়াদের সঙ্গে সংঘাতের জেরে কাজ হারাচ্ছেন অনির্বাণ, তাই গানের দলে মন দিচ্ছেন। কিন্তু দুর্নীতি, চিকিৎসক হত্যাকাণ্ড বা শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে মুখ না খুলে নিজের ধর্মকেই নিশানা করছেন— এমন অভিযোগ তোলেন রুদ্রনীল। এখানেই শেষ নয়। অনির্বাণ-ফেডারেশন বিবাদও মনে করিয়ে দেন তিনি। উল্লেখযোগ্য, গত এক বছর ধরেই অনির্বাণ অভিযোগ করে আসছেন যে তাঁকে সাইডলাইন করা হচ্ছে, কাজ মিলছে না। তখনই তিনি বলেন, “একজন শিল্পীকে কখনও বসিয়ে দেওয়া যায় না, মঞ্চ আমার আছে।”
আরও পড়ুনঃ “কদাকার লাগছে, পুরো ডাইনির মতো! টাকার জন্য এখনও এইসব কেন করছেন?” সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে কটাক্ষ, চরম অপমান সইছেন টলিউডের জীবন্ত কিংবদন্তি! এই বয়সেও এমন সাজ কি সত্যিই মার্জিত?– প্রশ্ন নেটিজেনদের!
এই মন্তব্যকে ঘিরে নেটদুনিয়া আরও দুইভাগে বিভক্ত। একদল অনির্বাণকে সমর্থন জানিয়ে বলছে, শিল্পী সবসময় রাজনৈতিক বা সামাজিক বক্তব্য রাখতে পারেন। আবার অন্যদল তাঁর বক্তব্যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ। কারও দাবি, “সনাতন ধর্ম নিয়ে এভাবে ঠাট্টা করা যায় না, বয়কট করা উচিত।” কেউ লিখছেন, “এরা নিজেদের অত শিক্ষিত ভাবে। আগে বেদ-উপনিষদ পড়ুন, তারপর সমাজ নিয়ে মন্তব্য করুন।” যদিও কুণাল ঘোষ বা শতরূপ ঘোষ অনির্বাণের ব্যঙ্গাত্মক গানকে মজা হিসেবেই নিয়েছিলেন, তবে রুদ্রনীলের অবস্থান একেবারেই আলাদা। এখন দেখার, এই চাপের মুখে অনির্বাণ ভট্টাচার্য আদৌ ক্ষমা চান কি না।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।