“কমলিনীর চোখে আর জল চাই না, এবার অন্য রূপে দেখতে চাই!” “যে মা কে আজ ফিরিয়ে দিলো, একদিন যেন তার পায়ে মুখ থুবড়ে পড়ে বুবলাই!”— মায়ের মর্যাদাকে পদদলিত করায়, বুবলাইয়ের নিষ্ঠুর আচরণে ক্ষোভে উত্তাল দর্শকদের দাবি– আগুন জ্বলে উঠুক নতুন কমলিনীর মনে!

স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) এখন এমন এক মোড়ে পৌঁছেছে, যেখানে প্রতিটি চরিত্রের মুখোশ যেন একে একে খুলে পড়ছে। এতদিন যে বুবলাইকে দর্শক তার মায়ের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে দেখেছিলেন, হঠাৎই সে আবার সেই পুরনো তিক্ততায় ফিরে গেছে। স্বতন্ত্রর অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত গোটা পরিবারকেই চমকে দিয়েছে। একদিকে মায়ের সম্মান রক্ষায় দৃঢ় ছিল বুবলাই, কিন্তু যখন জানতে পারল যে স্বতন্ত্রর আইনি বিয়ে আসলে পার্বতীর সঙ্গে নয়, কমলিনীর সঙ্গেই হয়েছে— তখন যেন মুহূর্তেই তার আসল চেহারা আবার বেরিয়ে এল।

পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন বুবলাই মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। বয়কট করে স্বতন্ত্রকে বাবা হিসেবে ডাকতে, এই সবকিছুতেই পাশে থেকেছে তার স্ত্রী বর্ষা। শিশুকাল থেকেই বুবলাই মাকে ভুল বুঝেছে— কখনও মনে করেছে মা অন্যায় সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে স্বতন্ত্রর সঙ্গে, কখনও মায়ের চরিত্র নিয়েও কটাক্ষ করেছে সে। হঠাৎ করে বুবলাইয়ের তার মায়ের প্রতি ভালোবাসা দেখে, দর্শকদের একাংশ আগে থেকেই বুঝেছিলেন যে, মা-ছেলের এই সম্পর্কের ভিত এতটাই দুর্বল যে সত্য প্রকাশ পেলেই সবকিছু ভেঙে পড়বে।

ঠিক তাই-ই হয়েছে, সত্যিটা বেরিয়ে আসতেই বুবলাইয়ের মুখোশ খুলে গেছে। সবচেয়ে খারাপ লাগার মতো ঘটনা, মায়ের ফুলশয্যার খবর পেয়ে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আ’ত্মহ’ত্যার চেষ্টা করে বুবলাই! ছেলের এই করুণ পরিস্থিতির খবর পেয়ে, হাসপাতালে ছুটে যান মা কমলিনী। চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় প্রাণে বেঁচে গেলেও, মায়ের মুখোমুখি হতে অস্বীকার করল সে। ঠান্ডা গলায় জানিয়ে দেয়, “আমার কাছে আমার মা অনেকদিন আগেই মারা গেছে। ওই মহিলার যদি ফুলশয্যা বাকি থাকে সেটা যেন পূর্ণ করে।”

এই কথাই যেন ছুরির মতো বিঁধছে দর্শকদের মনে! কেউ কেউ সমাজ মাধ্যমে লিখেছেন, “এতটা নির্মম সন্তান কল্পনাতেও আনা যায় না। মাকে সারা জীবন একা থাকতে দেখেই তার সুখ!” একজন বলেছেন, “আজকের পর্বের পর কমলিনীর চোখে এই কুলা’ঙ্গার ছেলের জন্য একফোঁটা জলও যেন না থাকে!”— এমনই তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে নেটপাড়ায়। কমলিনীর অবস্থা এখন চূড়ান্ত ভগ্ন। তবু দর্শকরা চান না তিনি আবার কান্নায় ভেসে যান। তাঁরা এখন দেখতে চান এক দৃঢ়, স্বনির্ভর, লড়াকু নারী— যিনি আর কারও অপমান সহ্য করবেন না।

আরও পড়ুনঃ “আমাদের সময় বাংলা ছবিতে ‘বাঙালিয়ানা’ ছিল…ভাষা থেকে পোশাক পর্যন্ত ছিল নিজের গর্ব, এখন সবকিছু কেমন যেন ‘অবাঙালি’!”— বাংলা সিনেমার বর্তমান ধারা নিয়ে আক্ষেপ বর্ষীয়ান অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিকের!

অনেক দর্শকরা বলছেন, এবার তাঁরা নতুন কমলিনীকে দেখতে চান, যাঁর মধ্যে আর কোনও ভয় নেই, কোনও দুর্বলতা নেই। তাদের কথায়, “ভবিষ্যতে যদি কোনদিন বুবলাই পা ধরেও ক্ষমা চায়, কমলিনী যেন সেটা না করে।” সব মিলিয়ে ‘চিরসখা’-র গল্পে এই নতুন মোড় যেন দর্শকদের আবেগের কেন্দ্রবিন্দুতে। বুবলাইয়ের পতনের মধ্যেই তারা এখন দেখতে চায় কমলিনীর পুনর্জন্ম— এক এমন নারী রূপে, যিনি অপমান ভুলে নিজের শক্তির জোরে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শেখাবেন সবাইকে। কারণ আজকের দিনে, এই ধারাবাহিকের নায়িকা শুধু ভালোবাসার নয়, আত্মসম্মানেরও প্রতীক হয়ে উঠছেন।