বাংলা ধারাবাহিক মানুষ খুব আগ্রহ সহকারে দেখে কিন্তু মাঝে মাঝে এমন কিছু জিনিস সেখানে দেখানো হয় যা দেখে মেজাজ গরম হয়ে যায় আধুনিক দর্শকদের। টিপিকাল মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনা থেকে এখনো বেরোতে পারেননি সিনেমা সিরিয়াল নির্মাতারা। সিনেমা নিয়ে আমরা পরে অন্য কোনদিন লিখব কিন্তু আজ এখন সিরিয়াল নিয়ে এই বিষয়টা উল্লেখ করা আমাদের উচিত বলে মনে হয়। এই ২০২২ সালে দাঁড়িয়ে কারোর চরিত্র আমরা পোশাক দিয়ে বিচার করতে পারি না কিন্তু বাংলা টেলিভিশনে সবসময় সেটাই দেখানো হয়।
আপনারা খেয়াল করে দেখবেন অধিকাংশ ধারাবাহিকের যেখানে নায়িকারা পুরো ঢেকে ঢুকে থাকেন সেখানে খলনায়িকারা সবসময় খোলামেলা পোশাক পরে আর উগ্র মেকআপ করেন। তাদেরকে বদমাইশ বোঝাতে তাদের মেকআপ বেশি করানো হয় আর জামার হাতা থাকে না। আর এতেই এবার আপত্তি তুলেছেন বেশ কিছু নেটিজেন।
তাদের বক্তব্য, খল নায়িকাদের ভেতরে বদবুদ্ধি থাকে আর সেগুলো বেরিয়ে আসে। স্বাভাবিকভাবে বদ বুদ্ধি না দেখালে ধারাবাহিক চলবে না কারণ তাহলে নায়িকা কার বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কিন্তু বর্তমানে অনেক ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে যে যারা খল নায়িকা, তারা স্লিভলেস পোশাকে আসছেন। এটা কেন? তার মানে যারা স্লিভলেস পোশাক পরেন তারাই খারাপ?
একজন নায়িকা কোনদিনও স্লিভলেস পোশাক পরতে পারবে না? আধুনিকা খলনায়িকা দেখাতে গেলে সব সময় হয় স্লিভলেস ব্লাউজ নয়তো স্লিভ লেস টপ বা ফ্রকে দেখা যায়। এটা কেন? তাদেরকে হাতাওয়ালা জামা দিলে লোকে বুঝতে পারবে না তারা খলনায়িকা? সেই পোশাক দিয়েই নারী চরিত্র বিচার করতে হবে? কই যারা খলনায়ক তাদের তো স্যান্ডো গেঞ্জি পরানো হয় না?
বেশ কিছু ধারাবাহিক এর উদাহরণ দেওয়া যাক যেখানে খলনায়িকারা স্লিভলেস পোশাক বা ব্লাউজ পরে থাকেন তাহলে আপনাদের বুঝতে সুবিধা হবে। মিঠাই ধারাবাহিকের তোর্সা, অনুরাগের ছোঁয়া ধারাবাহিকের উর্মি, আয় তবে সহচরীর দেবিনা বন্যা, সাহেবের চিঠির রাইমা, গাঁটছড়ার কিয়ারা, খেলনা বাড়িতে মিতুলের শাশুড়ি, আলতা ফড়িংয়ের আম্রপালি। এরকম অজস্র উদাহরণ রয়েছে। কিছু ধারাবাহিকে অবশ্য খলনায়িকাদের স্বাভাবিক পোশাক দেওয়া হয় যেমন উড়ন তুবড়ি, গৌরী এলো বা আমাদের এই পথ যদি না শেষ হয়। কিন্তু অধিকাংশ ধারাবাহিকে এই যে ট্রেন্ডটা চলছে পোশাক দিয়ে নারীর চরিত্র বিচার করা সেইটা আবার বন্ধ হওয়া উচিত বলে মনে হয়।