“আমার লেখার ধরন আলাদা, চারজন লোক কম দেখলে কিছু হবে না!”—‘চিরসখা’তে পরকীয়া প্রসঙ্গে স্পষ্ট বার্তা দিলেন লীনার!

বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সফল চিত্রনাট্যকার ও লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায় (Leena Gangopadhyay)। তাঁর লেখা একাধিক ধারাবাহিক বছরের পর বছর দর্শকদের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। ‘শ্রীময়ী’, ‘ইষ্টি কুটুম’, ‘ইচ্ছে নদী’, ‘জল নূপুর’-এর মতো জনপ্রিয় সিরিয়ালের কাহিনি ও সংলাপ তাঁর অনন্য লেখনীর ছোঁয়ায় প্রাণ পেয়েছে। শুধু বাংলা নয়, হিন্দি ধারাবাহিকের জগতে তাঁর লেখা গল্পও বেশ জনপ্রিয়। তাঁর চিত্রনাট্যের বৈচিত্র্য এবং সম্পর্কের জটিল দিকগুলো দেখানোর ক্ষমতা দর্শকদের আকৃষ্ট করলেও, সমালোচনা কম হয়নি।

সফলতার পাশাপাশি ট্রোলিং এবং সমালোচনা বরাবরই লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কাজের সঙ্গী হয়েছে। বিশেষত, তাঁর ধারাবাহিকগুলিতে সম্পর্কের জটিলতা, সামাজিক ট্যাবু ভাঙার প্রবণতা অনেকের কাছে বিতর্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তিনি কখনোই এই সমালোচনাকে বিশেষ গুরুত্ব দেননি। তাঁর মতে, গল্প বলার নিজস্ব ধরণই একজন লেখকের পরিচয় তৈরি করে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার সংলাপ লেখার ধরন আলাদা। বাংলা ভাষার ব্যবহার ও প্রকাশভঙ্গি পরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু আমি এতদিন যে ভাবে লিখে এসেছি সেটা বদালবো না কোনও মতেই।

Bengali serial

তাতে আমার ধারাবাহিক যদি চার জন কম দেখেন, তাতেও কিছু যায় আসে না। ভালো গল্প বলার দায়িত্বও রয়েছে, আর আমি সেটাই করতে চাই।” বর্তমানে তাঁর লেখা ধারাবাহিক ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। ধারাবাহিকটির গল্প ও চরিত্রায়ন নিয়ে অনেকেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। কেউ বলছেন, এতে ‘পরকীয়া’কে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়েছে, আবার কেউ ভাবছেন এটি সম্পর্কের বাস্তব রূপ তুলে ধরছে। তবে এই বিতর্কের মধ্যে থেকেও লেখিকা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “আমি পরকীয়াকে ব্র্যান্ড করতে চাই না!

আরও পড়ুনঃ ডিবেট কম্পিটিশনে পারুলের বক্তব্যে হল ভর্তি লোকের হাততালি! পারুলের মন্তব্যে মুগ্ধ রায়ান, জ্বলছে শিরিন!

এমন অনেক সম্পর্ক রয়েছে, যেখানে সব ঠিক থাকলেও প্রাণটা থাকে না। সেই প্রাণ যে দিতে পারে, তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক না-ও থাকতে পারে। কিন্তু সে বুঝতে পারে, একজন আছে বলেই অন্যজন বেঁচে আছে।” এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, সম্পর্কের জটিল দিকগুলোকে আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখানোই লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্য। তিনি মনে করেন, প্রতিটি সম্পর্কের নিজস্ব মানে রয়েছে, যা সমাজের প্রচলিত সংজ্ঞার বাইরে গিয়েও মানুষ অনুভব করতে পারে। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ‘চিরসখা’-র গল্প তৈরি তিনি করেছেন।

তাঁর মতে, সমালোচনা আসবেই, তবে সেটাই একজন লেখকের কাজের মূল্যায়নের অংশ। তবে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে গিয়েও লীনা গঙ্গোপাধ্যায় আজ বাংলা টেলিভিশনের এক শক্তিশালী নাম। নতুনত্ব আনতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লেও, তাঁর গল্প বলার ধরন ও সাহসী সিদ্ধান্তই তাঁকে বাকিদের থেকে আলাদা করে তুলেছে। দর্শকদের গ্রহণযোগ্যতা সময়ই বলে দেবে, তবে লেখিকার নিজের বিশ্বাস অটুট।

You cannot copy content of this page