দিল্লিতে ধর্মেন্দ্রকে ঘিরে আয়োজিত স্মরণসভায় উপস্থিত হয়ে নিজের আবেগ আর আটকে রাখতে পারলেন না হেমা মালিনী। অভিনেত্রীর কথায় স্পষ্ট হয়ে গেল জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কাগুলোর একটির সঙ্গে তিনি কীভাবে লড়ছেন। তাঁর চোখ ভিজে উঠেছিল বারবার। তিনি বলেন যে কখনও ভাবেননি তাঁকে স্বামীকে কেন্দ্র করে স্মরণসভা আয়োজন করতে হবে। জীবনের এত লম্বা সময় তাঁরা একে অপরকে ধরে রেখেছিলেন এবং সে সম্পর্কের পরিণতি এই দিন দেখতে হবে তা তাঁর কল্পনার বাইরে ছিল।
এই অনুষ্ঠানটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে কারণ মুম্বইয়ের প্রথম স্মরণসভায় ছিলেন না হেমা। সেখানে আয়োজন করেছিলেন ধর্মেন্দ্রর প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌর এবং তাঁদের দুই ছেলে সানি ও ববি। এই অনুপস্থিতিকে ঘিরে নানা জল্পনা তৈরি হলেও দিল্লির স্মরণসভায় হেমা সব জল্পনার অবসান ঘটালেন। তিনি জানান যে ভালবাসা কখনও প্রতিযোগিতা নয় এবং তিনি কাউকে বিরক্ত করতে চাননি বলেই সবসময় দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল যে ভালবাসা দাবি করে না বরং নিজেকে সমর্পণ করে।
ধর্মেন্দ্র এবং হেমার সম্পর্ক বরাবরই আলোচনার বিষয় ছিল। কারণ অভিনেতা প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহিত অবস্থাতেই হেমাকে বিয়ে করেন। ধর্ম পরিবর্তন করতে হয়েছিল তাঁকে, সমাজের নানা সমালোচনা শুনতে হয়েছিল দুজনকেই। তাঁদের পরিবারে মতবিরোধ ছিল ঠিকই তবে হেমা কখনও প্রকাশ কৌর বা তাঁদের সন্তানদের প্রতি অসম্মান দেখাননি। অভিনেতা নিজেই জানিয়েছিলেন যে তিনি কারও জীবনে অশান্তি আনতে চাননি এবং তাঁর আদর্শ ছিল সম্পর্ককে সম্মান দেওয়া।
স্মরণসভায় হেমা আরও জানান যে ধর্মেন্দ্রর পরিবারের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব কখনও শত্রুতা নয়। তিনি বরাবরই সম্মান প্রদর্শন করেছেন এবং নিজের ভালবাসাকে নীরবতার মধ্যেই বাঁচিয়ে রেখেছেন। তাঁর কথায় বোঝা গেল যে সমাজের চোখ রাঙানি বা পরিবারের চাপ তাঁদের সম্পর্ককে কখনও নাড়া দিতে পারেনি। তাঁরা দুজনেই বিশ্বাস করতেন যে সত্যিকারের ভালবাসা ভয়ের ঊর্ধ্বে এবং সে কারণেই একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
আরও পড়ুনঃ ভারতজুড়ে পরিচিত মুখ এখন বাংলার অভিনেত্রী ইশিকা দে! ‘সেক্রেড গেম’ থেকে ‘ব্যাডস অফ বলিউড’, হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে একের পর এক সাফল্যে উঠে আসছেন এই বঙ্গ-তনয়া! টলিউডে কেন কাজ পাননা তিনি?
অভিনেত্রী শেষ পর্যন্ত বলেন যে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তিনি নিজেকে একমাত্র এই মানুষটির জন্যই উৎসর্গ করেছিলেন। ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর পর তাঁর ভিতরের শূন্যতা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তবে তাঁর স্মৃতি এবং ভালবাসাই তাঁকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দিচ্ছে। হেমার এই অকপট স্বীকারোক্তি ধর্মেন্দ্রর প্রতি তাঁর গভীর ভালবাসার সাক্ষী হয়ে রইল।






