KGF: রকি ভাইয়ের ‘KGF’-এর আসল নাম কী? ৯৯% মানুষই জানে না আসল রহস্য
করোনা মহামারী পরবর্তী ভারতবর্ষের সিনেমা জগতে রাজত্ব করেছে দক্ষিণ ভারতীয়(South Indian Films) সিনেমাগুলি। প্রথমে পুষ্পা তারপর আরআরআর। বলা যায় করোনা পরবর্তী অবস্থায় ভারতীয় সিনেমার যে দুর্দিন শুরু হয়েছিল সেখান থেকে ভারতীয় সিনেমাকে ফের ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর পিছনে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার অবদানকে কোনভাবেই অস্বীকার করা যাবেনা। আরআরআর(RRR)-এর মধ্য দিয়ে নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙেন এই সিনেমার পরিচালক এস এস রাজামৌলি(S. S. Rajamouli)। কিছুদিন আগেই অস্কার জিতে বিশ্ব দরবারে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করেছে এই সিনেমা।
আরআরআর-এর পর আরও একটি দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার বাজার কাঁপায়। এই ছবিতে কন্নড় সুপারস্টার যশকে দেখা গিয়েছে মূল নায়কের চরিত্রে। আর এই সিনেমায় খল নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন সঞ্জয় দত্ত। এই সিনেমার গল্প ছিল সোনার খনির জন্য অসহায় সাধারণ মানুষের ওপর হওয়া অত্যাচার।
২০১৮ সালে KGF প্রথম চ্যাপ্টার মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই মানুষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা গিয়েছিল। দ্বিতীয় পার্ট দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলেন সবাই। পুষ্পা, আরআরআর সবের রেকর্ড ভেঙে দেয় যশের KGF2। জানেন কী এই KGF নাম টির পুরো নাম কী? আসলে এটি একটি জায়গার নাম। কোলার গোল্ড ফ্লিডস! এটি একটি খনি এলাকা। জায়গাটি বিশ্বখ্যাত। পরিত্যক্ত! এককালে এই জায়গাকে ভারতের মিনি ইংল্যান্ড বলা হত! কিন্তু বর্তমানে ঐতিহ্য হারিয়ে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগের কবলে এই এলাকা।
জানা যায়, ১৮৭৫ সাল থেকে সোনার জন্য খনন শুরু হয় কেজিএফে। তার পর ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত সেখান থেকে সোনা তুলেছে ব্রিটিশ সংস্থা। আগে মাটির এক কিলোমিটার নীচেই সোনার খোঁজ মিলত। পরে সোনার খোঁজে আরও গভীরে খোড়া শুরু হয়। সেই সময়েই কেজিএফের সোনার উৎপাদন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছিল। এটিই এশিয়ার মধ্যে একমাত্র জায়গা যেখানে সোনার জন্য সবচেয়ে গভীরে খনন করা হয়। ধীরে ধীরে প্রতি টন আকরিকে সোনার পরিমাণ কমতে শুরু করে। খরচ পোষাচ্ছিল ছিল না খননকারী সংস্থাগুলির।
এরপর ১৯৭২ সালে কেজিএফের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত গোল্ড মাইন লিমিটেড। কিন্তু কেজিএফ থেকে প্রাপ্ত সোনায় খরচ উঠছিল না খননের। ১৯৬০ এবং ১৯৯২ সালে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয় কেজিএফ-এ। পরীক্ষাগুলি ব্যর্থ হলে ২০০১ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি বন্ধ হয় কেজিএফ বন্ধ করে দেয় ভারত গোল্ড মাইন। কিন্তু কোনও মাইন এলাকা বন্ধ হওয়ার পর সেখানে কিছু বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া মানতে হয়। আসলে খনি এলাকায় রাসায়নিকের অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হয়। আর তাই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সেই এলাকার পরিশুদ্ধি ঘটানো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।
কিন্তু কোলারের ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। সরকারের তীব্র উদাসীনতায় বিষ পাহাড়ে পরিণত হয়েছে কোলার। একটা সময় কোলারের মাটির নীচে নেমে প্রাণ হাতে করে যাঁরা সোনা তুলে আনতেন, তাঁরা কী ভাবে বেঁচে আছেন, তার খোঁজ নেননি খনির মালিকেরা বা সরকার। সায়ানাইডের মতো ভয়ঙ্কর রাসায়নিকের ব্যবহারে আজ ঘরে ঘরে ক্যান্সার রোগী কোলারের। নিজেদের প্রাণ দিয়ে সবার উদাসীনতার দাম দিচ্ছে ভুতুড়ে শহরের তকমা পাওয়া কোলার।