‘বিষ প্রয়োগে খু নের চেষ্টা, আমার গলা ঈশ্বরের দান’! কে মারতে চেয়েছিলেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরকে?
তার কণ্ঠে বাস করতেন স্বয়ং মা সরস্বতী সেই বর্ষীয়ান মহাগায়িকা ভারতবর্ষের সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar) গতবছর ৬ই ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন। তার মৃত্যু ভারতীয় সঙ্গীত জগতের জন্য ছিল এক নিদারুণ ক্ষতি। গতবছর বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। তারপর ৯২ বছর বয়সে প্রয়াত ভারতবর্ষের সুর সম্রাজ্ঞী।
তিনি ভারতীয় সঙ্গীতের মহাগায়িকা। দীর্ঘ জীবনে বহু সম্মান অর্জন করেছেন তিনি। তবে শুধুমাত্রই কি সম্মান? একই সঙ্গে বহু বিদ্রুপ, অসম্মানও তার সঙ্গী হয়েছে। এমনকি তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা পর্যন্ত করা হয়েছিল। ৯২ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হলেও তার জীবন কিন্তু আরও আগেই শেষ হয়ে যেতে পারত।
মহাগায়িকার যখন ৩৩ বছর বয়স তখন তার ওপরে প্রাণঘাতী হামলা করা হয়েছিল। বলাই বাহুল্য খ্যাতির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাড়ছিল তার শত্রুর সংখ্যা। সুর সম্রাজ্ঞীর ওপর জীবনঘাতী হামলার কথা প্রথম জানা যায় পদ্মা সচদেবের লেখা ‘লতা মঙ্গেশকর: অ্যায়সা কাঁহা সে লাউঁ’ গ্রন্থে। এরপরে এক প্রবাসী সাংবাদিক নাসির মুন্নি কবিরের নেওয়া লতাজির একটি সাক্ষাৎকারেও জানা যায়, যে খাবারে বিষ মিশিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল লতা মঙ্গেশকরকে।
জানা যায়, ১৯৬২ সালে একবার গায়িকার খাবারে বিষ মিশিয়ে তাঁকে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। জানা যায়, গায়িকা লতা মঙ্গেশকরের বয়স তখন মাত্র ৩৩ বছর বয়স। খ্যাতির মধ্য গগনে রয়েছেন তিনি। একদিন রাতে খাওয়ার পর হঠাৎই ভীষণ রকম ভাবে তার পেটে শুরু হয় প্রচণ্ড ব্যথা। সেই সঙ্গে হতে থাকে সবুজ বমি। ধীরে ধীরে অসাড় হতে থাকে শরীর। হাত-পা নাড়ানোর ক্ষমতাটুকুও হারিয়ে ফেলেন তিনি। সেই সঙ্গে গোটা শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা।
তড়িঘড়ি তলব করা হয় চিকিৎসককে। তিনি বাড়িতেই এক্স রে-র ব্যবস্থা করেন। এরপর ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেন লতাকে। রিপোর্টে মেলে গায়িকার পাকস্থলীতে বিষের উপস্থিতি। টানা তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে ফেরেন মহাগায়িকা। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, খুন করার অভিপ্রায় নিয়ে কেউ তার শরীরে ইচ্ছাকৃতভাবে বিষ প্রয়োগ করেছে হয়েছে। জানা যায়, এই বিষক্রিয়ার প্রভাবে দীর্ঘদিন পর্যন্ত গায়িকা কোনও গরম খাবার খেতে পারতেন না। বরফের টুকরো মেশানো তরল খাবার খেতেন তিনি।
কে চেয়েছিলেন লতাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে? এই বিষয়ে, জানা যায়, লতার রাঁধুনি নাকি এই ঘটনার পরেই নাকি পারিশ্রমিক না নিয়ে কাউকে কিছু না বলে আচমকাই কাজ ছেড়ে চলে যান। এমনকি সেই রাঁধুনি নাকি এর আগে বলিউডের বেশ কিছু তারকার বাড়িতেও কাজ করেছিলেন। আর তাই থেকেই অনুমান করা হয় লতা মঙ্গেশকরের উপর প্রাণঘাতী হামলার পিছনে নিশ্চয়ই বলিউডের কারর হাত ছিল।