বলিউডের একটা সময়ে অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে দর্শকদের কাছে সমাদর পেয়েছেন দেব আনন্দ। সুপুরুষ , সুঠাম দেহের অধিকারী এই অভিনেতাকে একবার সামনে থেকে দেখার জন্য রীতিমত ভিড় জমে যেত দর্শকদের মধ্যে।
তার মধ্যেই কালো পোশাক পরলে সেই জনপ্রিয়তা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এমনকি বাড়ির বারান্দা থেকে ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে অভিনেতাকে দেখার নিদর্শন আছে। বাধ্য হয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়।বোম্বে আদালতে রীতিমত ফতোয়া জারি করে কালো পোশাক পরার বিষয়ে।
অদ্ভুত বিষয় হলো অভিনেতার পরিবারের কেউই চলচ্চিত্র জগতে মানুষ নন। তিনি নিজেও ইংরেজি ভাষা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। কলেজ জীবন থেকে হঠাৎ করেই সিনেমায় আসা।
অশোক কুমার অভিনীত সিনেমা দেখে তার অভিনেতা হবার সখ। তখন নাম ছিল ধরম । পুরো নাম ধরমদেব পিশোরিমল আনন্দ।শুরুতে যাত্রা টা একেবারেই সহজ ছিল না। সিনেমায় সুযোগ পাওয়ার আগে মিলিটারি পোস্টাল সার্ভিসে মাসে ৪৫ টাকা বেতনের চাকরি পান। পরে দাদা চেতনের সঙ্গে একটি থিয়েটারের দলেও নাম লেখান।
বাবু রাও চোখে পড়ে যান অভিনেতা। দেব আনন্দের হাসি দেখে তিনি এতটাই মুগ্ধ হন যে তিনি জানান ওই হাসি দেখতেই দর্শক হলে আসবে। মাসে ৪০০ টাকার চুক্তিতে তাঁকে তিন বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ করেন বাবু রাও। প্রথম ছবির কাজও শুরু করেন— ‘হাম এক হ্যায়’।
দেব আনন্দের সাথে সুরাইয়ার সম্পর্কের কথা সকলের জানা। ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম একসাথে ছবি বিদ্যা সিনেমায় কিনারে কিনারে চলে যায়েঙ্গ’ গানের সময় নৌকা উল্টে যাচ্ছিল। দেবদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় দেব আনন্দ। তার পর থেকেই প্রেম শুরু।
সুরাইয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, দেব আনন্দের ব্যক্তিত্বের সাদাসিধে দিকটাই তাঁকে আকৃষ্ট করেছিল। প্রাণরক্ষার পরে সুরাইয়া বলেছিলেন, ‘তুমি যদি না বাঁচাতে, আজ আমার জীবন শেষ হয়ে যেত।’ শুনে নাকি দেব আনন্দ বলেছিলেন, ‘তোমার জীবন শেষ হলে সেইসঙ্গে আমারটাও শেষ হয়ে যেত।’
একাধিক বার বিয়ের প্রস্তাব এসেছে আবার সেই বিয়ে ভেঙ্গেও গেছে।সুরাইয়ার বাড়ি থেকে কখনো দেব আনন্দ কে জামাই হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। তাই হিরের আংটি দিয়ে দেব আনন্দ প্রেমের কথা জানালেও অভিনেত্রীর দিদা সেই আংটি সমুদ্রে ফেলে দেন।
দীর্ঘ টানা বহালার পর তাদের দেখা সাক্ষাৎ কমেই যায়। সুরাইয়া বাবা মা চাইলেও দিদিমার ওপরে কথা বলতে পারেননি। এরপরে নবকেতন ফিল্মস’-এর কর্মী মোনা সিংহ ওরফে কল্পনা কার্তিকের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন দেব আনন্দ।