বিনোদন জগতে সফলতার একমাত্র চাবিকাঠি পরিশ্রম। এরকম কথা বারবার শোনা যায় সিনেমা এবং ধারাবাহিকের কলাকুশলীদের মুখে। তারকাদের মধ্যে অনেকেই আছে যাদের জীবন সংগ্রাম বারবার অনুপ্রাণিত করে সাধারণ মানুষদের। মাটি কামড়ে দিনে পর দিনে কঠিন লড়াই চালিয়ে আজ সফলতার শীর্ষে পৌঁছেছেন তারা। কঠিন পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে তারা আজ নিজেদের নাম দাখিল করেছে স্টারদের তালিকায়।
যদিও এই অভিনয় জগতে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য এসেছেন অনেকেই। তাদের মধ্যে অনেকেই মুখ দেখতে পাননি সফলতার। আবার অনেকেই খুঁজে পেয়েছেন সাকসেসের চাবি। আজ যার বিষয়ে কথা হবে তিনিও বর্তমানে একজন অতি জনপ্রিয় ধারাবাহিক অভিনেত্রী। অভিনেত্রীর বাবা ছিলেন একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। কিন্তু বাবার নাম, যশের সুবিধা তিনি পাননি কখনও। বাবা জনপ্রিয় পরিচালক হওয়ার শর্তেও মাইলের পর মাইল হেঁটে যাতায়াত করেছেন তিনি।
৪৩ বছর বয়সে পেলেন সাকসেস, ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী রূপালী গাঙ্গুলি
থিয়েটারের মাধ্যমেই অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন তিনি। নাটক দলে অভিনয় করে তিনি উপার্জন করতেন মাত্র ৫০টাকা। এরপর ধারাবাহিক এবং সিনেমাযতেও অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। কিন্তু তাতেও ফেরেনি ভাগ্য। তবে গুরুজনেরা বলেন সৎ পথে কঠোর পরিশ্রম করলে ভাগ্যের চাকা একদিন না একদিন ঘুরবেই। অভিনেত্রীর ক্ষেত্রেও ঘটে তাই। ৪৩ বছর বয়সে এসে পরিবর্তন হয় তার ভাগ্য। আজ তার বয়স ৪৭ বছর। বর্তমানে টেলিভিশনের জগতে অন্যতম দামী এবং খ্যাতনামা অভিনেত্রী তিনি। টিআরপি তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে তার ধারাবাহিক। ধারাবাহিকটিতে তিনি অভিনয় করেছেন লিড রোল। বর্তমানে ধারাবাহিকের জগতের অতি পরিচয় মুখ অভিনেত্রী রূপালী গাঙ্গুলি।
বাবা অনিল গাঙ্গুলির সিনেমা ফ্লপ হওয়ার আর্থিক অনটনের শিকার হন রূপালী গাঙ্গুলি
অভিনেত্রীর বাবার অনিল গাঙ্গুলি ছিলেন একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা। পর পর বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করলেও ১৯৯১ সালে তার পরিচালিত ‘দুশমন দেবতার’ সিনেমাটি মুখ থুবড়ে পড়ে বক্স অফিসে। পরিচালকের জীবনে নেমে আসে আর্থিক অনটন। প্রায় দেউলিয়া হয়ে যান অনিল গাঙ্গুলি। একটি সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের সেই অধ্যায়ের কথা স্মরণ করে অভিনেত্রী জানিয়েছেন “আমি ওয়ারলি থেকে পৃথ্বী থিয়েটার পর্যন্ত মানে প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে যেতাম। কারণে আমার বাবার সিনেমাটি ফ্লপ করার পর আমরা খুব আর্থিক সংকটে পড়ে গিয়েছিলাম। আমাদের যা কিছু ছিল সবটাই বিক্রি করে দিতে হয়েছিল। সেইসময় মানসিক চাপের কারণে ডায়বেটিসের শিকার হন বাবা। তাছাড়াও সেইসময় একের পর এক ঝড় আঁচড়ে পড়েছিল আমাদের জীবনে।”
আরও পড়ুন: ফের ছোটপর্দা কাঁপাতে ফিরছেন মেয়েবেলার ডোডোদা ওরফে অর্পণ! কোন ধারাবাহিক? মুখ খুললেন স্বয়ং অভিনেতা
কোন নাটকের মাধ্যমে অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন রূপালী গাঙ্গুলি, কত টাকা উপার্জন করেছিলেন তিনি?
অভিনেত্রী রূপালী গাঙ্গুলি এও জানিয়েছেন “সেইসময় চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কোন কর্পোরেট ব্যবসা না থাকার কারণে সিনেমা তৈরি করার জন্য সকলকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির ঝুঁকি নিতে হত। তখনকার দিনে বাড়ি বন্দক দিয়ে, গয়না বিক্রি করে চলচ্চিত্র নির্মাতারা চলচ্চিত্র তৈরি করতেন। তখন তাদের কাছে সেটাই ছিল আবেগ, ভালোবাসা।” অভিনেত্রী বলেছেন তার জীবনের প্রথম নাটক ছিল দীনেশ ঠাকুরের প্রযোজিত ‘আত্মজীবনী’। পৃথ্বী থিয়েটারের সেই নাটকটির মাধ্যমে প্রথমবার অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন রূপালী। সেইসময় সেই নাটকে অভিনয় করে তিনি উপার্জন করেছিলেন ৫০ টাকা। তবে সেইসময় থেকে আজ পর্যন্ত বদলে গেছে অনেককিছু। বর্তমানে পর্ব প্রতি তিনি উপার্জন করেন তিন লাখ টাকা। প্রসঙ্গত, বর্তমানে স্টার প্লাসের অনুপমা ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন রূপালী গাঙ্গুলি।