আর জি কর কাণ্ডে প্রতিবাদের জের! একের পর এক কাজ হারাচ্ছেন দেবলীনা দত্ত, উঠছে রাজনৈতিক চাপের অভিযোগ!

শীতকাল, বাংলার সাংস্কৃতিক পরিসরে বিশেষ একটা স্থান দখল করে থাকে। শহর কিংবা গ্রামে নানা ধরনের জলসা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা, আর্ট শো—সব কিছুই চলে। সেই অনুষ্ঠানে শিল্পীরা, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা (Actor – Actress) চলে আসেন, সবার মধ্যে আনন্দের পরিবেশ সৃষ্টি করেন। একদিকে, যখন বাংলার সাংস্কৃতিক পরিবেশ তুঙ্গে, তখন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্তের( Debolina Dutta) গলা শুকিয়ে যাচ্ছে একের পর এক অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ার পর। এমন এক পরিস্থিতি যেখানে শিল্পী-অভিনেত্রীরা একে একে অনুষ্ঠানে ডাক পাচ্ছেন, সেখানে দেবলীনা কেন একেবারে বাইরে থেকে গেছেন?

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন অভিনেত্রী। এই ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন, যার কারণে আগের বছরের দুর্গাপুজোর কাজ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, “এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে তার মানে এই নয় যে, পুজোয় যাঁরা শামিল থাকছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আমার কোনও বক্তব্য রয়েছে। পুজোর কাজ কিন্তু আমাদের রুজিরুটিও। এর সঙ্গে আন্দোলনকে গুলিয়ে ফেলার কোনও কারণ নেই। আমি থাকছি না। কারণ, মানসিকভাবে আমি পেরে উঠছি না।”

এর আগেও দেবলীনা হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি খোলা চিঠি লিখে বৈদ্যবাটী এলাকার একটি পুজো মণ্ডপে উটকে বেঁধে রাখার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, “প্রিয় রচনাদি, বৈদ্যবাটী এলাকায় নার্সারি রোড দুর্গাপুজো ওরফে ঐক্যতানের পুজোতে একটি উটকে মানুষের বিনোদনের জন্য প্রদর্শনী স্বরূপ বেঁধে রাখা হয়েছে। মণ্ডপের থিম হরপ্পা মহেঞ্জোদাড়ো। আমাদের রাজ্যের শিক্ষার মান অনুযায়ী উট বেঁধে প্রমাণ করতে হচ্ছে যে এটা সেই যর্থাথ থিম। অথচ এই অসভ্য, বর্বরোচিত কাজটা যে আইনত অপরাধ, এবং এই কাজটি অ্যানিম্যাল ক্রুয়েলটি অ্যাক্ট-এর আওতায় পড়ে তা স্থানীয় পুলিশ বা অনুদান প্রাপ্ত ক্লাব কর্তারা কেউ জানেন না।”

বর্তমানে দেবলীনা জানিয়েছেন, শীতকালীন জলসায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। তিনি বলেন, “আমাদের ভাতে মেরে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আমিও সেই তালিকায় আছি। পশ্চিমবঙ্গের শৈল্পিক সত্ত্বাকে গলা টিপে মেরে ফেলা হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, চলতি সিজনে গোটা বাংলায় তাঁর যতগুলো অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল, সবকটি ক্যানসেল করা হয়েছে।অর্গানাইজার তাঁকে মেসেজে লিখেছেন, ‘দিদি রাজনৈতিক কারণে আপনাকে আনতে পারছি না। ক্ষমা করবেন।’ দেবলীনার দাবি, এভাবেই ভয় দেখানো হচ্ছে সবাইকে। তবে নাম প্রকাশ করলে বিপদ হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ ছাতা বাড়িতে ঝিলিকের সাহসী পদক্ষেপ! প্রিয়রঞ্জনকে উচিত শিক্ষা দিয়ে ছাতার ব্যবসা শুরু করল ঝিলিক

দেবলীনার এই সাহসী পদক্ষেপ সত্যিই অন্য অভিনেত্রীদের জন্যও প্রেরণা হতে পারে। তার বক্তব্য শুধু একটি শিল্পী সমাজের সমস্যা নয়, বরং বৃহত্তর সমাজে এক ভয়াবহ চাপের পরিস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও।

You cannot copy content of this page