রুক্মিণী মৈত্র, একজন প্রতিভাবান অভিনেত্রী। সম্প্রতি তার আসন্ন ছবি বিনোদিনী-র জন্য শুটিং সেরেছেন তিনি। বিনোদিনী দাসী ছিলেন বাংলা থিয়েটারের অন্যতম প্রভাবশালী এবং প্রথম দিকের নারী অভিনেত্রী, যার জীবনকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে এই বায়োপিক। রুক্মিণীর এই উদ্যোগ এবং প্রতিশ্রুতি তাকে অভিনয়ের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতার প্রমাণ দেয়।
শুটিংয়ের সময় পায়ে চোট পেয়েছিলেন রুক্মিণী, যার ফলে তার পা ভেঙে যায়। তবে এই চোট তাকে থামাতে পারেনি। বিশ্রামের পরিবর্তে তিনি ব্যথা উপেক্ষা করে শুটিং চালিয়ে যান। একদিকে যেমন চোটের কারণে তাকে শারীরিকভাবে অসুবিধায় পড়তে হয়েছে, অন্যদিকে তেমনই চরিত্রের প্রয়োজনীয় শারীরিক ভাষা ফুটিয়ে তোলা ছিল চ্যালেঞ্জিং। এই ভাঙ্গা পা নিয়েই ‘কানহা’ গানের শুটিং সেরেছিলেন তিনি। জনসমক্ষে আসার পর থেকে এই গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে তারপর থেকেই প্রশংসার সাগরে ভাসছিলেন অভিনেত্রী।
রুক্মিণী নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “বিনোদিনী শুধু একটা চরিত্র নয়, এটা আমার জন্য একটা আবেগ। তার সংগ্রামের গল্প আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।” তার এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, শিল্পীদের জন্য কাজের প্রতি ভালোবাসা এবং চরিত্রের সঙ্গে মানসিকভাবে সংযোগ স্থাপন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই গানের জন্য হতো চার বছর ধরে বিশেষ করে ধ্রুপদী নাচের তালিম নিয়েছিলেন রুক্মিণী, এবং কত্থক শিখেছিলেন মনীষা বসু এবং সৌভিক চক্রবর্তীর কাছ থেকে।
শ্রেয়া ঘোষালের সুরে প্রায় ছয় মিনিটের এই গান প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সুরের সাগরে ভেসেছেন শ্রোতারা। সম্প্রতি গান প্রকাশ অনুষ্ঠানে রুক্মিণী ‘কানহা’-র সঙ্গে মঞ্চে নেচেছেন যা অভিনেত্রীর পুরনো দিনে স্কুলে ফিরে যাওয়ার মত আনন্দের সমান। তবে দর্শকদের মধ্যেও প্রশ্ন উঁকি দিয়েছে যে, এই গানে রুক্মিণীর পারফরম্যান্স দেখে দেব তাঁকে কী বলেছেন? অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ‘‘দেব অনেক আগেই গানটা দেখেছিল। ওকেও অনেকে ফোন করেছেন। আমাকে ও এটাই বলল, ‘তোমার পরিশ্রমটাই পর্দায় ফুটে উঠেছে।’ ও খুবই খুশি।’’
আরও পড়ুনঃ বন্ধু লাস্ট হলে খারাপ লাগে, কিন্তু ফার্স্ট হয়ে গেলে ভীষণ খারাপ লাগে, আমার সবাইকে চেনা হয়ে গেছে! ইন্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দেব
গানের শুটিং এর সময়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে অভিনেত্রী জানান, ‘‘শুরুতে খুব ভয়ে ছিলাম। শুটিংয়ের সময়েও কোনও টেক নেওয়া হত না। কাট মানে পুরো গানে ছ’মিনিট ধরে আবার আমি নাচতাম! এখন মনে হচ্ছে, পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।’’ রুক্মিণীর এই সাহস এবং প্রতিশ্রুতি বিনোদিনী চরিত্রকে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভাঙা পা নিয়েও শুটিং করার এই ঘটনা শুধু তার পেশাদারিত্বের উদাহরণ নয়, বরং তার ধৈর্য এবং অধ্যবসায়ের অনন্য উদাহরণ।