বাড়ি থেকে দূর করে দিয়েছিলেন বাবা, মুম্বইতে বাড়ি কিনে সেই বাবাকেই গর্বিত করেন মিঠুন চক্রবর্তী

মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) অভিনীত ছবি ‘সন্তান’ (shontaan) বর্তমানে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে আলোচনার কেন্দ্রে। রাজ চক্রবর্তীর পরিচালনায় এই ছবিতে এক বাবা-ছেলের সম্পর্কের জটিলতা এবং আবেগঘন মুহূর্তগুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মিঠুন শেয়ার করেছেন নিজের জীবনের কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, যা এই ছবির গল্পের সঙ্গে মিলে যায়।

মিঠুন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তাঁর ছোটবেলায় তাঁদের কোনো বাড়ি ছিল না। পরিবার নিয়ে তাঁরা ভাড়া বাড়িতে থাকতেন, যেখানে আর্থিক অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। সিনেমায় পা রাখার পর নিজের পরিশ্রমের টাকায় তিনি একটি বাড়ি কিনেছিলেন। সেই বাড়ি প্রথমবার দেখে তাঁর বাবা-মা এতটাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন যে, সেই মুহূর্ত তাঁর জীবনের অন্যতম স্মরণীয় হয়ে উঠেছিল। মিঠুন বলেন, “বাবা-মায়ের মুখে সেই আনন্দ দেখে আমার চোখেও জল চলে এসেছিল। আজকের দিনেও সেই মুহূর্ত আমাকে ভীষণ আবেগপ্রবণ করে তোলে।”

Mithun Chakraborty

এই সাক্ষাৎকারে মিঠুন তাঁর বাবার কঠোর শাসনের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত শাসনপ্রিয়। ছোটবেলায় একবার এমন শাস্তি পেয়েছিলাম যে, সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেই কঠোরতার মধ্যেও বাবার ভালোবাসা ছিল অসীম।” মিঠুন জানান, তাঁর বাবার সেই কঠোরতা তাঁকে জীবনে শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে এবং কঠিন পরিস্থিতিতে লড়াই করার মানসিকতা গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। এই অভিজ্ঞতাগুলো তাঁকে আজকের মিঠুন চক্রবর্তী হতে সাহায্য করেছে।

ছবির গল্পও এমনই এক বাবার কথা বলে, যিনি নিজের সন্তানের প্রতি কঠোর হলেও, সেই কঠোরতার অন্তরে থাকে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। মিঠুন এই চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে বারবার নিজের জীবনের সঙ্গে সংযোগ খুঁজে পেয়েছেন। তিনি বলেন, “ছবির একটি দৃশ্যে বাবা তাঁর ছেলের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করেন। সেই দৃশ্য করতে গিয়ে আমি নিজের বাবার কথা ভেবে আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। এই ধরনের কাজ আমাকে নিজের জীবনের গল্প মনে করিয়ে দেয়।”

আরও পড়ুনঃ বড় বিপদের মুখে অভিনেত্রী ঊষসী চক্রবর্তী! অভিনেত্রীর বড় ক্ষতি হয়ে গেল

‘সন্তান’ শুধুমাত্র একটি সিনেমা নয়, এটি একটি পরিবারের গল্প। এটি বাবা-ছেলের সম্পর্কের গভীরতা, ভুল বোঝাবুঝি, এবং ভালবাসার এক অসাধারণ উপস্থাপনা। মিঠুন চক্রবর্তীর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং তাঁর অনবদ্য অভিনয় ছবিটিকে আরও হৃদয়গ্রাহী করে তুলেছে। এই ছবি দেখে দর্শকরা হয়তো নিজেদের জীবনের সম্পর্কগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হবেন।