টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা-পরিচালক ‘অনির্বাণ ভট্টাচার্য’র (Anirban Bhattacharya) আবার জড়িয়েছেন বিতর্কে! বর্তমানে তিনি যতটা না বেশি নায়ক, তার থেকে বেশি গায়ক বলা যায়। তাঁর ব্যান্ড ‘হুলিগ্যানিজম’ (Hooliganism) নিয়ে রীতিমতো ঝড় উঠেছে বিনোদন থেকে রাজনৈতিক মহলে। সম্প্রতি সমাজ মাধ্যমে তাঁদের একটি রাজনৈতিক ব্যঙ্গাত্মক গান বা যাকে বলে প্যারোডি সং, ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই গেরুয়া শিবিরের একাংশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে। তাদের দাবি, এই গানের মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে সনাতন ধর্মের ভাবাবেগকে আঘাত করা হয়েছে।
এমনকি তাঁদের তরফে লালবাজারের সাইবার থানায় অনির্বাণ ও তাঁর ব্যান্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে! নয় মিনিটের ওই গানটিতে মন্দির-মসজিদ বিরোধ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের উত্থান-পতন, এমনকি শাসকদলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের চরিত্র নিয়েও কটাক্ষ করা হয়েছে। কুণাল অবশ্য গানটির প্রশংসা করেছেন খোলাখুলি এবং নিজের সমাজ মাধ্যমের পাতায় সেটি শেয়ারও করেছেন। তাঁর মতে, এই ধরনের রাজনৈতিক ব্যঙ্গ সমাজের জন্য দরকার।
তবে সবাই যে তাঁর মতো ভাবছেন তা নয়। সিপিএম এই নিয়ে প্রকাশ্যে না হলেও নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছে, আর বিজেপি সরাসরি আইনের পথে হাঁটতে প্রস্তুত। এই ঘটনার পর বিজেপির আইনজীবী তরুণজ্যোতি তেওয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ইমেল করে পুলিশকে বিষয়টি জানান। অভিযোগের সঙ্গে গানটির একটি ক্লিপও পাঠানো হয়েছে বলে খবর। তবে অভিযোগ জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক মামলা রুজু হয়েছে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। অভিযোগকারী জানিয়েছেন, যদি পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করে তবে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
ফলে, বিতর্ক যে এত তাড়াতাড়ি শেষ হচ্ছে না তা স্পষ্ট। এদিকে, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষও এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, “মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবারই আছে, কিন্তু তার সীমারেখা থাকা জরুরি।” তাঁর মতে, শুধু জনপ্রিয়তার জন্য কারও ধর্ম বা নীতিকে আঘাত করা উচিত নয়। ব্যঙ্গ থাকলেও তাতে যেন শালীনতার মাত্রা লঙ্ঘন না হয়, সেই বিষয়ে শিল্পীদের সতর্ক থাকতে হবে। অন্যদিকে, নেটিজেনদের একাংশ আবার কটাক্ষ করে বলছেন, “যারা বাকস্বাধীনতার নামে বড় বড় কথা বলে,
আরও পড়ুনঃ “আমি হৃদয় দিয়ে কথা বলি, আমার মাথাটা কাজ করে না, করলে আজকে যতটা জনপ্রিয়, আরও বেশি হতে পারতাম!” ‘নিজের স্বামীকে যখন তখন অপমান করছেন, আর মাথা কাজ করেনা?’,’ আপনি অহংকারী, দাম্ভিক’ কটাক্ষ নেটপাড়ার
তারাই এখন শিল্পীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে।” সব মিলিয়ে, অনির্বাণ ভট্টাচার্যের গানকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে রাজ-রাজনীতি তো বটেই, পুরো সমাজ মাধ্যম সরগরম। কেউ বলছেন, “এটি স্রেফ শিল্পীর স্বাধীনতার ব্যবহার।” আবার কেউ এটিকে, ইচ্ছাকৃত উসকানি বলেই মনে করছেন। তবে তদন্ত শুরু করেছে সাইবার দপ্তর, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিতর্ক কি আদালতে গড়াবে, নাকি এখানেই থেমে যাবে, সেটার উত্তর সময় দেবে।