লগ্নজিতা চক্রবর্তীর অনুষ্ঠান ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই আরও একবার শিরোনামে উঠে এল শিল্পীর স্বাধীনতার প্রশ্ন। শেষ মুহূর্তে শো বাতিল হওয়ার ঘটনায় এবার ক্ষোভ উগরে দিলেন কণ্ঠশিল্পী পল্লব কীর্ত্তনীয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্টে তিনি জানালেন, কীভাবে একের পর এক ঘটনায় তাঁর কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা চলছে। শিল্পী হিসেবে লগ্নজিতার পাশে দাঁড়িয়ে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বললেন, শিল্পীর মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
পল্লব তাঁর লেখায় উল্লেখ করেন, ভগবানপুরে ‘জাগো মা’ গান গাওয়ার পর লগ্নজিতাকে সেকুলার গান গাইতে বলা এবং অপমান করার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সেই প্রতিবাদে তিনি নিজেও শামিল হয়েছেন। টেলিভিশন চ্যানেলে মত প্রকাশের পাশাপাশি প্রকাশ্যেও লগ্নজিতার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে সেই প্রসঙ্গ টানতে গিয়েই তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেন, যা আরও গভীর উদ্বেগের জন্ম দেয়।
শিল্পীর দাবি, বর্ধমানের ভাতারের একটি বইমেলায় ২৫ ডিসেম্বর তাঁর গান গাওয়ার কথা থাকলেও শাসকের চাপে শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। এই ঘটনা নতুন নয় বলেই জানান তিনি। গত এক দশকে বারবার একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনও অনুষ্ঠানেই তাঁকে ডাকতে চাইলে নাকি আয়োজকদের প্রবল চাপের মুখে পড়তে হয়। এমনকি কলকাতার রবীন্দ্রসদন মঞ্চেও তিনি চার অক্ষরের গালাগাল এবং শারীরিক নিগ্রহের হুমকি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
এই সব ঘটনার পরেও কেন তিনি চুপ করে থাকেন, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন পল্লব। তাঁর কথায়, শাসকের বিরুদ্ধে গান গাইলে প্রত্যাঘাত আসবেই, সেটা তিনি জানেন। মূল স্রোতের ইন্ডাস্ট্রি থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন এবং একা বলেই মনে করেন তিনি। তাই সব অপমান এবং বাধা একাই সহ্য করতে হচ্ছে। তাঁর মতে, যাঁরা নিয়মিত মঞ্চে ডাক পাচ্ছেন, তাঁরা শাসকের সুনজরে থাকার কারণেই সেই সুযোগ পাচ্ছেন।
আরও পড়ুনঃ “শুটিং সেটে বাবার হাতে সপাটে চ’ড়”— এমন কি ঘটেছিল ক্যামেরার সামনে যে অঞ্জন চৌধুরীর হাত উঠেছিল নিজের মেয়ের উপর? ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন টলিউডের ‘ভালো মেয়ে’ চুমকি চৌধুরী!
পোস্টের শেষে শিল্পীমহলকে উদ্দেশ করে কড়া বার্তা দেন পল্লব। তিনি বলেন, শিল্পীর স্বাধীনতা কতটা আছে তা বোঝা যাবে তখনই, যখন শাসকের দুর্নীতি এবং ভণ্ডামি নিয়ে গান করা হবে। লগ্নজিতার পাশে দাঁড়ানো শিল্পীদের তিনি নিজের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান করেননি, তবে সমাজ এবং শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে অন্তত একবার বিবেকের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ রেখেছেন। তাঁর প্রশ্ন, শিল্পী কি শুধুই বিনোদনের জন্য, না কি সত্য বলার দায়ও তাঁর আছে।






