বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে (Sheikh Mujibur Rahman) কে না চেনেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের জাতির পিতা এবং বঙ্গবন্ধু নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন বঙ্গবন্ধু। অন্যদিকে ঋষি কৌশিক (Rishi Kaushik) হলেন একজন ভারতীয় অভিনেতা এবং পরিচালক, যিনি জি বাংলা জনপ্রিয় একদিন প্রতিদিন ধারাবাহিকের মাধ্যমে নিজের অভিনয় যাত্রা শুরু করেছিলেন। এরপর এখানে আকাশ নীল, মুখোশ মানুষ, ইষ্টি কুটুম ইত্যাদি বিভিন্ন জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি। শুধু বাংলা নয় হিন্দি ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন তিনি।
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন টেলি অভিনেতা ঋষি কৌশিক (Rishi Kaushik), যা নিয়ে তিনি অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। অভিনেতা জানান, বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত নাকি তাঁকে এই চরিত্রের জন্য নির্বাচন করেছেন নিজের ইমার্জেন্সি ছবিতে। কঙ্গনার প্রযোজনা ও পরিচালনায় নির্মাণাধীন এই ছবিতে বঙ্গবন্ধুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরা হবে।
কঙ্গনার ইমার্জেন্সি ছবিটি মুক্তি পেয়েছে সদ্য এক সপ্তাহ আগে। তবে এতদিন মুখে কুলুপ ছিল অভিনেতার। এদিন নিজের চরিত্রের সাজের ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাগ করে নিলেন তিনি। সেই সঙ্গে ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতাও ভাগ্য করে নিলেন অভিনেতা। ঋষি কৌশিক বলেন, “শুনেছি, কঙ্গনা নিজেই আমাকে নির্বাচন করেছেন। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। বঙ্গবন্ধুর মতো মহান এক নেতার চরিত্রে অভিনয় করা একাধারে চ্যালেঞ্জিং ও সম্মানের।” তিনি আরও জানান, এই চরিত্রের জন্য তাঁকে নানা দিক থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়েছে যেমন শারীরিক ভাষা থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠস্বর, চালচলন এবং ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তোলার কাজ চলছে।
ঋষি কৌশিকের অভিনীত বাংলা টেলিভিশন সিরিয়াল এবং সিনেমাগুলো তাঁকে বাঙালি দর্শকের প্রিয় করে তুলেছে। এবার তাঁর এই নতুন পদক্ষেপ শুধু তাঁর ক্যারিয়ারেই নয়, বাংলা ও হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মেলবন্ধনেও একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হবে বলে মনে করছেন অনেকে। জানা গেছে ২০২২ সালে কঙ্গনার প্রযোজনা সংস্থা থেকে ঋষির কিছু ছবি চাওয়া হয়, এরপরেই তিনি জানতে পারেন যে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের জন্য তাকে নির্বাচন করা হয়েছে। তিনি বলেন,‘‘আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম। কারণ আমার চেহারার সঙ্গে ওঁর কোনও মিল নেই।’’ তার পর চরিত্রের লুকসেট করতে এক দিনের জন্য মুম্বই পাড়ি দেন ঋষি।
অভিনেতা আরও বলেন, ‘‘মেকআপের পর নিজেকেই চিনতে পারছিলাম না। মেকআপ শিল্পীরাও বললেন যে তাঁরা ৯০ শতাংশ লুক মিলিয়ে দিয়েছেন।’’ শুধু ঋষিই নং সেই সঙ্গেই ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশর চরিত্রের জন্য অভিনেতা মিলিন্দ সোমনের লুকসেট করা হয় একই সঙ্গে বলে জানালেন অভিনেতা। দিল্লি সহ অসমেও ছবির শুটিং ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন অভিনেতা ঋষি। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা আগে থেকে বিষয়টা জানতেন তাঁরা ছবি দেখে প্রশংসা করছেন। আবার অনেকেই রয়েছেন যাঁরা আমাকে দেখে চিনতেও পারেননি। বিষয়টি বেশ মজার।’’
ইমারজেন্সি ছবিতে কঙ্গনা ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তবে তার সঙ্গে কোন দৃশ্যেই অভিনয় করেননি ঋষি। যদিও পরিচালক কঙ্গনা কে সবসময়ই ফ্লোরে পেয়েছেন তিনি। তিনি জানান, ‘‘অসাধারণ একজন মানুষ। পরে ইউনিটের থেকেই জানতে পারি, বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের জন্য কঙ্গনাই নাকি আমাকে নির্বাচন করেছিলেন।’’ কঙ্গনা পরিচালক হিসেবে কেমন জানতে চাওয়া হলে ঋষি জানিয়েছেন, অভিনয়ের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন কঙ্গনা তাঁকে। শুটিংয়ের সময় কিছু অবাঙালি অভিনেতাদের বাংলা বলতে সমস্যা হচ্ছিল। ঋষির জানান, ‘‘আমি বাঙালি বলে কঙ্গনা আমাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলেন, যাতে অবাঙালি অভিনেতারা সঠিক বাংলা বলেন। পরে ডাবিং করতে গিয়েও সহকারী পরিচালক জানান, কঙ্গনা বলেছেন, আমাকে আমার মতো বুঝে ডাবিং করতে। ভাল লেগেছিল।’’
আরও পড়ুনঃ কেয়া বাত! রাজনীতি ছেড়ে ব্যবসায়ী, চুঁচুড়ার মেলায় এবার শাড়ির স্টল দিলেন সাংসদ অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জি
শুধু দিল্লী নয় শুটিং চলছিল আসামে। এদিকে আবার ঋষি তেজপুরের ছেলে। অভিনেতার থেকে তা শুনেই কঙ্গনা নিজের কলেজ জীবনের অনেক গল্প শোনান। অভিনেতার কথায়, ‘‘তার পরেই কঙ্গনা জানালেন যে কলেজ জীবনে তাঁর আসামের অনেক বন্ধু ছিল। তাঁদের সঙ্গে কঙ্গনার যোগাযোগ অটুট রয়েছে।’’ ঋষি জানালেন, চরিত্র ছোট হলেও ‘ইমার্জেন্সি’ ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা দীর্ঘ দিন তাঁর মনে রয়ে যাবে যা তাঁর জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়।