বহু বছর ধরে নিজের অভিনয়ের গুণে দর্শকদের মুগ্ধ করে এসেছেন এই বাঙালি অভিনেত্রী। টেলিভিশনের পর্দায় যেমন জনপ্রিয় তেমনি সুপ্রতিষ্ঠিত তিনি। ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা সব ক্ষেত্রে সমানভাবে নিজের অভিনয় প্রতিভার ছাপ ফেলে গেছেন।
এই স্বনামধন্য অভিনেত্রী হলেন অনুরাধা রায়। বরাবর নানা শান্ত স্নিগ্ধ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে তাঁকে। প্রায় ৩০ থেকে ৩২ বছর কাটিয়ে ফেললেন টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। তিনি মানুষ হিসেবেও বেশ মিষ্টি স্বভাবের। তবে এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের এক অন্যরকম কাহিনী শেয়ার করেছেন অনুরাধা।
এই কাহিনী নায়িকার শ্বশুরবাড়ির। এমন গল্প সচরাচর যে কোনো শ্বশুরবাড়ির ক্ষেত্রে দেখা যায় না বা শোনা যায় না। ফলে তাঁর শ্বশুরবাড়ি যে ব্যতিক্রম এমনটা বলাই যায়।
নায়িকা বলেছেন তাঁর অভিনয়ের কেরিয়ারে আসা একেবারেই অনিচ্ছাকৃত ছিল। দুরন্ত সেটা সম্পূর্ণ জোর করে হয়েছে এবং হঠাৎ করেই হয়েছে। তিনি ভীষণ লাজুক এবং মুখচোরা প্রকৃতির ছিলেন। তাই সিনেমাতে অভিনয় করতে চাননি তিনি।
তিনি নাচ গান করতেন ছোট থেকেই। তারপরে থিয়েটারে যুক্ত হন। প্রায় ২৫ বছর ধরে থিয়েটার করেছেন। থিয়েটার করতে করতে যোগাযোগ হয় এবং ছবিতে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। অভিনয়ের ক্ষেত্রে নায়িকার যাত্রা খুবই মসৃণ ছিল। কাজের জন্য কখনো কাউকে অনুরোধ করা বা কারো কাছে গিয়ে হাত পাতা এমনটা করতে হয়নি অনুরাধা রায়কে।
নায়িকা প্রথম যে সিনেমায় কাজ করেছিলেন সেখানে তাঁকে জোর করে কাজে নেওয়া হয়েছিল। অজয় বন্দ্যোপাধ্যায় যিনি সত্যজিৎ রায়ের বেশ কিছু ছবিতে কাজ করেছেন তাঁর সঙ্গে অনুরাধা রায়ের শ্বশুরমশাইয়ের আলাপ ছিল। তাই শ্বশুরের মাধ্যমে তিনি এই প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন অভিনেত্রীর কাছে।
কিন্তু নায়িকা যেহেতু সিনেমা জগতের সঙ্গে একেবারেই পরিচিত ছিলেন না তাই তিনি ইতস্তত বোধ করছিলেন। তাই নতুন কাজের ক্ষেত্রে ঢোকার বিষয় নিয়ে খুব ভয় পাচ্ছিলেন। শ্বশুরবাড়ির সবাই জোর করেছিলেন কাজ করার জন্য। পরবর্তীকালে যখন কাজ করা শুরু করলেন তখন বিভিন্ন মজার এবং ভয়ের অভিজ্ঞতাও হয়েছে নায়িকা।
এরপর একটা চরিত্রে নায়িকাকে অভিনয় করতে হয়েছিল যেখানে তাঁকে মেরে ফেলা হচ্ছে এবং তিনি প্রেতাত্মা হয়ে যান তারপর। এই শুটিংয়ের জন্য সকাল আটটা থেকে খোলা চুল, রক্ত মাখা শরীরে বসে থাকতেন তিনি রাত এগারোটা পর্যন্ত। তখন নিজের প্রতি নিজের রাগ হত নায়িকার যে কেন তিনি হ্যাঁ বলেছিলেন। আজ শ্বশুরবাড়ির যাঁরা নেই কাকে জোর করেছিলেন কাজ করার জন্য তাঁদের প্রতি রাগ হতো নায়িকার।