বাংলার সফলতম অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন তিনি। তাঁর নাম আজও সম্ভ্রমের সঙ্গে উচ্চারণ করা হয়। তিনি বাংলায় বিখ্যাত ‘কলকাতার রসগোল্লা’ নামে। আজ ৬০ বছর বয়স পেরিয়েও তিনি এভারগ্রীন দেবশ্রী রায়। নৃত্যশিল্পী থেকে সফল অভিনেত্রী তিনি। তবে এরপর ৭০-এর দশকের শেষের দিকে সেলুলয়েডের পর্দায় তিনি একজন সুঅভিনেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
কিন্তু শৈশব থেকেই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন দেবশ্রী রায়। শিশু চরিত্রেও বেশ কিছু ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন তিনি। একইসঙ্গে সফল তাঁর বাংলা সিনেযাত্রাও। বলা যায় নিজের সময়ে দাপিয়ে অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী। বলা যায় বিগত প্রায় ৫৬-৫৭ বছর ধরে এই ইন্ডাস্ট্রির অঙ্গ দেবশ্রী রায়। সম্প্রতি এই ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে সরব হয়েছিলেন অভিনেত্রী।
একটি ইউটিউব সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের সময়ের থেকে এখনকার সময়ের অনেক পার্থক্য। এখন অভিনেতাদের মধ্যে ধৈর্য্য কমছে। সবাই অল্পেতেই নাম কামাতে চায়। আর তাই কিছু অপ্রাপ্তিতেই ঘটে যায় আত্মহত্যার মতো ঘটনা।
একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, আগেকার মতো এখন আর পরিচালক ও অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে সেই বন্ডিংটা নেই। এখন সবাই খুব স্বার্থকেন্দ্রিক। এরপর ইন্ডাস্ট্রিতে চলা নেপোটিজম অর্থাৎ স্বজনপোষণ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন কথা টা শোনা যখন যায় তখন আছে বলেই হয়ত শোনা যায়। অবশ্যই আছে। একইসঙ্গে তিনি বলেন এর থেকে মুক্তি পেতে হলে স্বমূলে বিনাশ করতে হবে।
একটা সময়ে রাজনীতির কারণে অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন এই অভিনেত্রী। তবে দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি উপলব্ধি করেন রাজনীতি তাঁর জায়গা নয়। আর তাই আবারও ফেরেন অভিনয়ে। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, রাজনীতি ভীষণই অস্বাস্থ্যকর একটি জায়গা। খুনোখুনি, অশান্তি তাঁর ভালো লাগছিল না। সম্মানহানি হচ্ছিল তাঁর। আর তাই ধীরে ধীরে সরে আসেন তিনি।
উল্লেখ্য, বাংলার সফল অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। প্রচুর পুরস্কার, প্রচুর সম্মাননা, প্রশংসা রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রখ্যাত অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরীর অকাল মৃত্যুর পর যখন বাংলা চলচ্চিত্রে শূন্যতা তৈরি হয়, আর সেই শূণ্যস্থান পূরণে আসেন দেবশ্রী রায়। দাদার কীর্তি, বিষবৃক্ষ, ভালবাসা ভালবাসা, জীবন ঝঙ্কার, অপরাহ্ণের আলো উনিশে এপ্রিল-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।