একদিকে যেমন খলনায়িকার চরিত্র তিনি এমনভাবে ফুটিয়ে তুলতেন যে দর্শক তাঁকে দেখলে চরম রেগে যেত তেমন অন্যদিকে স্নেহময়ী মায়ের চরিত্রেও অনবদ্য। হ্যাঁ, আমরা কথা বলছি অভিনেত্রী রীতা কয়রালকে নিয়ে। টেলিভিশনের এই অভিনেত্রীকে চিনতে নামই যথেষ্ট।
ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা সর্বক্ষেত্রে নিজের অভিনয়ের প্রতিভার ছাপ রেখে গেছেন এই অভিনেত্রী। ১৯৫৯ সালে কলকাতাতেই জন্ম হয় তাঁর। কেরিয়ারে পা দিতেই সঙ্গে সঙ্গে সাফল্য আসে।
দূরদর্শনে সংবাদ পাঠিকা হিসেবে শুরু হয়েছিল অভিনেত্রীর কাজ। আবার একজন প্রতিভাবান নৃত্যশিল্পীও বটে। বিষ্ণু পাল চৌধুরী পরিচালিত ‘জননী’ ধারাবাহিকে অভিনয় দর্শকদের মনে থেকে যাবে চিরকাল। এই ধারাবাহিকে পার্থ মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী হয়েছিলেন রীতা। এই একটা ধারাবাহিকেই যে কাজ করলেন তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি অভিনেত্রীকে। ঋতুপর্ণ ঘোষ, অপর্না সেন, অঞ্জন দত্তের মতো তাবড় পরিচালকদের ছবিতেও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
অভিনেত্রীর একটি বিশেষ নাম ছিল লেডি বিবেকানন্দ কারণ তিনি নাকি ২০ পাতার স্ক্রিপ্ট একবার পড়েই শট দিতে পারতেন। অভিনেতা সৌমিত্র বন্দোপাধ্যায়ের স্ত্রী ছিলেন রীতা কিন্তু সেই সুখের সংসার দীর্ঘস্থায়ী হয়নি কারণ কিছুদিনের মধ্যেই অভিনেতা প্রয়াত হন।
সবথেকে দুঃখের বিষয় হলো বেঁচে থাকাকালীন তিনি যোগ্য সম্মান পেলেন না। ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত ‘বাড়িওয়ালি’ ছবিতে কিরণ খেরের গলায় ডাবিং করেছিলেন রীতা। তাতে জাতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল এই নায়িকার নাম। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কিরণ রীতা দু’জনকেই দেওয়া হবে সম্মান। অবশেষে সেটা আর হলো না। ২০১৭ সালেই লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মনের কষ্ট নিয়ে চিরতরে চলে গেলেন এই নায়িকা। আর আজ কেউই সেভাবে মনে রাখেনি এই যোগ্য নায়িকাকে।