“ভালো কিছু না করাই অনেক সময় ভালো,” “লাল টুকটুকে কনে না সেজেও ভালবাসা যায়।”— সৃঞ্জয়ের অকালমৃ’ত্যুর পর দিলীপ-রিঙ্কুকে কটাক্ষ করে অহনার মা চাঁদনীর বার্তা!

আনন্দের এক মাস পেরোনোর আগেই কান্নায় ভিজলো এক মায়ের আঁচল। সদ্য ‘দিলীপ ঘোষ’ (Dilip Ghosh) এর সঙ্গে আবার ঘর বেঁধেছিলেন ‘রিঙ্কু মজুমদার’ (Rinku Majumdar)। কিন্তু বিয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই এল এক ভয়াবহ দুঃসংবাদ! রিঙ্কুর প্রথম পক্ষের ছেলে সৃঞ্জয় ওরফে প্রীতম দাশগুপ্তের (Srinjoy Dasgupta) রহস্যজনক মৃত্যু। মঙ্গলবার সকালে তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছে সাপুরজি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে তাঁর দেহ খাটে শায়িত অবস্থায় মেলে এবং তার পাশেই ছিল বেশ কয়েকটি ওষুধের পাতা।

এখনও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট নয়, তবে পুলিশ সূত্রে খবর ড্রাগ ওভারডোজ বা আত্মহত্যার সম্ভাবনাকেই নিয়েই তদন্ত এগোচ্ছে। ইতিমধ্যেই আরজি কর হাসপাতালে চলছে ময়নাতদন্ত, সঙ্গে রয়েছে সিসিটিভি ফুটেজও। সন্তানহারা মায়ের এই কান্না এক ধাক্কায় শোকের ছায়া ফেলে দিয়েছে রাজনীতি থেকে টলিপাড়ায়ে। সংবাদমাধ্যমকে কেঁদে কেঁদে রিঙ্কু জানান, তাঁর ছেলের মন ভালো থাকত না একা থাকলে। তবে কখনো মুখে কিছু বলেনি সে, সব সময় বলত সব ঠিক আছে। কিন্তু মা বুঝেছিলেন, সব ঠিক ছিল না। বিশেষ করে খাবারদাবার ঠিকঠাক চলছিল না বলে রিঙ্কুর সন্দেহ হয়।

তিনি এদিন আরও জানান, কিছুদিন ধরেই ভেবেছিলেন ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে আসবেন বা স্বামী দিলীপ ঘোষকে বলবেন তাঁর সঙ্গে ছেলেকে রাখতে দিতে। কিন্তু সেই সুযোগই আর এলো না, মাদার্স ডে উপলক্ষে কেক নিয়ে রিঙ্কুর কাছে ছুটে এসেছিলেন সৃঞ্জয়, একসাথে কিছুটা সময়ও কাটিয়েছিলেন তাঁরা। কে জানত সেটাই হবে দুজনের শেষ সাক্ষাৎ! জানা গেছে সৃঞ্জয়ের ছিল নিউরোলজিক্যাল সমস্যা, দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ চলছিল। রিঙ্কু নিজে তাঁকে ওষুধ খাওয়াতেন, দেখভাল করতেন।

কিন্তু দিলীপ ঘোষকে বিয়ে করে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকে সেই চিকিৎসা নিয়মিত হচ্ছিল না। নিঃসঙ্গতা ও মানসিক চাপ হয়তো দিনকে দিন গ্রাস করছিল তাঁকে। যেই সমস্যাটা কাছের মানুষরাও বুঝতে পারেননি সময়মতো। আর এই অবসাদই শেষমেশ নিয়ে গেল এক তরতাজা প্রাণকে। এই ঘটনার পরেই মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী অহনা দত্তর মা চাঁদনী। যদিও সরাসরি কোনও নাম নেননি, তবে তাঁর ফেসবুক পোস্টে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। একজন মা হিসেবে সন্তান হারানোর যন্ত্রণা যেন ছুঁয়ে গেছে তাঁকেও। তিনি লেখেন, “ভালো থাকার অধিকার সবার আছে।

আরও পড়ুনঃ ‘বাকি মায়েদের মতো মা হতে পারিনি, মেয়েকে সময় দিতে পারিনি’, আজ‌ও আক্ষেপ তাড়া করে বেড়ায় চিরসখার মিটিল তথা অভিনেত্রী লাভলী মৈত্রকে!

কিন্তু একটা বয়সের পর অনেক কিছু ভেবে তবেই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। লাল টুকটুকে কনে না সেজেও নীরবে নিভৃতে ভালোবাসা যায় না কি?” পাশাপাশি তাঁর কথায় উঠে এসেছে আরেকটি স্পষ্ট বার্তা—”অনেক সময় অনেক ভালো জিনিসও না করাই ভালো। সকলের মনের জোর একরকম হয় না।” এই জীবনের করুণ সমাপ্তি তুলে ধরল আমাদের সমাজের আরও গভীর এক বাস্তবকে। ব্যক্তিগত সুখের খোঁজে যাঁরা এগিয়ে যান, তাঁদের পিছনে ছিঁড়ে পড়ে থাকা সম্পর্কগুলোর কী পরিণতি হয়, তা হয়তো কেউই ভাবেন না। সৃঞ্জয়ের অকালমৃত্যু সেই অবহেলিত কোণের দিকেই চোখ ফেরাতে বাধ্য করছে সমাজকে।