টলিউড ইন্ডাস্ট্রি এবং রাজনৈতিক জগতের একজন পরিচিত মুখ হল লকেট চ্যাটার্জি। বহুদিন ধরে বাংলার অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকার পরে তিনি ২০১৫ সালে রাজনীতিতে যোগদান করেন। তাকে সাধারণ মানুষ চেনেন একজন চিত্রাভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে।
লকেট ১৯৭৪ সালে ৪ঠা ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণেশ্বরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা প্রয়াত অনিল চট্টোপাধ্যায় দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন। তার বোনের নাম মালা চ্যাটার্জি তিনিও একজন ক্লাসিক্যাল নৃত্যশিল্পী ছিলেন।
ছোটবেলায় গ্রামীণ স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং ছোট থেকে নাচের প্রতি খুবই আগ্রহ ছিল লকেটের তাই তার মা তাকে ছোট থেকে নাচে স্কুলে প্রশিক্ষণ দেয়াতে নিয়ে যান। তারপরে বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্করের কাছে নাচ শেখেন তিনি কৈশোর থেকেই নানা জায়গায় নৃত্য পরিবেশন করতেন তিনি।
তারপরে মাধ্যমিকের পর মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৮৯ সালে প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্যের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য হলেন দা হিন্দু নিউজ পেপারে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার। বিয়ের পরে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা তিনি আরো বাড়ান যোগমায়া কলেজ থেকে জীব বিদ্যার স্নাতক অর্জন করেন তিনি। তারপরে ২০০০ সালে লকেটের একটি ছেলে হয়।
তারপরে ২০০২ সালে ‘একটু ছোঁয়া’ ছবির মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন তিনি। এই ছবিটা তিনি অভিনয় করেছিলেন অভিনেতার যিশু সেনগুপ্তের বিপরীতে।কখনো নায়িকা আবার কখনো চরিত্রাভিনেত্রী হিসাবে নানা বাঙলা ছায়াছবিতে অভিনয় করেছেন ৷ তার সাম্প্রতিক ছায়াছবিগুলির মধ্যে অপর্ণা সেন পরিচালিত মৃণালিনী অন্যতম৷ এছাড়া ছয় ছুটি ছায়াছবিতে তিনি একজন সমকামী নারীর চরিত্রে অভিনয় করেন৷
টলিউডের তাবড় তাবোড় অভিনেতাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অভিনয় করেছেন একটা সময়। ২০০২ সাল থেকে শুরু করে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন লকেট কখনো মুখো চরিত্রে আবার কখনো স্পর্শ চরিত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে।
তারপর তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতিতে পা দেন। তারপর ২০১৫ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে ভারতীয় জনতা পার্টি জয়েন করেন লকেট।২০১৯ সাল থেকে তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ভারতীয় জনতা পার্টির একজন সাংসদ৷ ওই বছর লোকসভা নির্বাচনে লকেট হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৭৩,৩৬২ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার প্রধান মুখ এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি।২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়ে তিনি ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে তৃণমূল কংগ্রেসের অসিত মজুমদারের কাছে চুঁচুড়া কেন্দ্রে হেরে যান।