বাংলা সিনেমা ও টেলিভিশন জগতে প্রতিনিয়ত নতুন মুখ আসছে। তবে যাঁরা শৈশব থেকেই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের গল্প আলাদা মাত্রা যোগ করে। ঠিক তেমনই ‘অঙ্গনা রায়’ (Angana Roy)। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তরুণ মজুমদারের পরিচালনায় ‘আলো’ (Alo) ছবিতে শিশু শিল্পী হিসেবে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। ছোট্ট বয়সেই দর্শক-সমালোচকদের নজর কেড়েছিলেন, কিন্তু তারপরেই অভিনয় থেকে খানিকটা দূরে সরে যান। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের পথ খুঁজে ফের বড় পর্দা ও ওটিটির জগতে নতুন পরিচয়ে ফিরে আসেন তিনি।
অঙ্গনার অভিনয়ে ফেরার গল্পটা একেবারেই সাধারণ নয়। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা চলাকালীনও তিনি অভিনয়ের প্রতি নিজের টানকে অস্বীকার করতে পারেননি। নিজের মেধা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যে পথটা অনেকেই এড়িয়ে যান, সেই ঝুঁকির পথটাই বেছে নেন অঙ্গনা। হইচই প্ল্যাটফর্মে ‘সেই যে হলুদ পাখি’ দিয়ে আবার যাত্রা শুরু। এর পরেই ধারাবাহিকভাবে ‘পাপ’, ‘তানসেনের তানপুরা’, কিংবা ‘শ্রীকান্ত’-এর মতো ওটিটি প্রজেক্টে তিনি নিজের অভিনয় ক্ষমতা দিয়ে আলাদা পরিচয় গড়ে নেন। কম বয়সে এমন আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি তাঁকে আলাদা করে দেয় অন্যদের থেকে।
ওটিটিতে সাফল্যের পাশাপাশি রূপালি পর্দাতেও সমান শক্তিশালী ছিলেন অঙ্গনা। তথাগত মুখোপাধ্যায়ের ‘পারিয়া’ ছবিতে তাঁর অভিনয় তাক লাগিয়ে দেয় দর্শককে। আবার ছোটপর্দার দর্শকদের কাছেও তিনি প্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন। স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘তুমি আশে পাশে থাকলে’-এ অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ঘরের মেয়ে হয়ে ওঠেন দর্শকদের কাছে। একধরনের বহুমাত্রিকতা তাঁর কাজের মধ্যে স্পষ্ট, যেখানে ওটিটি, টেলিভিশন আর সিনেমা— সব ক্ষেত্রেই তিনি নিজের উপস্থিতি জাহির করেছেন।
তবে আলোচনার কেন্দ্রে তিনি আরও বেশি করে আসেন শুভশ্রী গাঙ্গুলির সঙ্গে ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ সিরিজে একসঙ্গে কাজ করার পর। অঙ্গনার সাবলীল ও নির্ভরযোগ্য অভিনয় নতুন প্রজন্মের এক প্রতিশ্রুতিশীল মুখ হিসেবে তাঁকে সামনে নিয়ে আসে। এত অল্প বয়সেই অভিনয়ে এমন শক্তিশালী দখল আজকের দিনে সত্যিই বিরল। সমালোচক থেকে দর্শক, সকলেই তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অঙ্গনা বিনোদন জগতের অন্ধকার দিক, বিশেষত কাস্টিং কাউচ নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তাঁর মতে, আজকের দিনে ইন্ডাস্ট্রি অনেকটাই স্বচ্ছ ও নিরাপদ, রে’প হয় না সেই অর্থে।
আরও পড়ুনঃ বাংলার বুকে হিন্দু গণহ’ত্যা হয়েছে! মেনে নিলেন একদা তৃণমূলী ‘বেঙ্গল ফাইলস’-এর গোপাল পাঠা সৌরভ দাস! সিনেমার ট্রেলারে ‘হিন্দু গণহ’ত্যা’র বার্তা! সত্যি বলতেই মুখ ফিরিয়েছে দল?
তিনি বলেন, যদিও ব্যতিক্রম এখনও ঘটে। আগেকার দিনে প্রবীণ অভিনেত্রীরা ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতেন, যেখানে দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কাজ আদায় করার প্রবণতা ছিল স্পষ্ট। সেই সময়ের তুলনায় এখন পরিবেশ অনেক বদলেছে, তবে সমস্যাটা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি বদলালেও, সমাজের পরিবর্তন শুরু হয় পরিবার থেকেই—এই বার্তাই দেন অঙ্গনা। ছোটবেলা থেকেই ছেলে-মেয়েদের মধ্যে যদি নারীদের প্রতি সম্মানবোধ তৈরি হয়, তবে ভবিষ্যৎ আরও সুস্থ এবং নিরাপদ হবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।