বাংলার বড় থেকে ছোটপর্দা, দুই দিকেই সমান দক্ষতায় নিজের ছাপ রেখে চলেছেন অভিনেত্রী ‘অঞ্জনা বসু’ (Anjana Basu) । বড়পর্দায় কখনও তিনি মায়ের চরিত্রে দর্শকের মন জয় করেছেন, আবার ছোটপর্দায় কঠোর অথচ সংবেদনশীল গৃহকর্ত্রীর চরিত্রে মুগ্ধ করেছেন অসংখ্য দর্শককে। দেবের মায়ের মতো কোমল আবেগপূর্ণ চরিত্র হোক বা জিতের পিসির মতো দৃঢ় ও গম্ভীর রূপ— প্রতিটি ভূমিকায় তিনি দেখিয়েছেন অভিনয়ের সূক্ষ্মতা।
সম্প্রতি ‘শ্রীমান ভার্সেস শ্রীমতী’ ছবিতে মিঠুন চক্রবর্তীর বিপরীতে তাঁর অভিনয় আবারও প্রমাণ করেছে, জটিল চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে তাঁর দক্ষতা অতুলনীয়। বর্তমানে জি বাংলার নতুন ধারাবাহিক ‘কুসুম’-এ (Kusum) তিনি ‘ইন্দ্রানী গাঙ্গুলী’-র ভূমিকায় দেখা দিচ্ছেন। চরিত্রটি একাধারে দাপুটে, আত্মবিশ্বাসী এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ— যিনি শুধু ব্যবসার দিকেই নয়, নিজের পরিবারের ক্ষেত্রেও সর্বেসর্বা। সংসারের প্রতিটি সিদ্ধান্ত তাঁর নির্দেশেই গৃহীত হয়, যা তাঁকে ধারাবাহিকের অন্যতম শক্তিশালী চরিত্রে পরিণত করেছে।
এই ধরনের প্রভাবশালী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য যে অভিজ্ঞতা, ব্যক্তিত্ব ও মানসিক দৃঢ়তা প্রয়োজন, তা অঞ্জনার মধ্যে বহুদিন ধরেই বিদ্যমান। তবে দর্শকের একাংশের মতে, শুধু চরিত্র নয়, বাস্তব জীবনেও নাকি তিনি তেমনই দাম্ভিক ও অহংকারী। এই ধারণা নিয়েই সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে খোলাখুলি কথা বলেন তিনি। নিজের অতীতের কথা স্মরণ করে অঞ্জনা জানান, জীবনের এক সময় প্রচণ্ড অভাবের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে— এমনকি ছেঁড়া শাড়ি পরে, একবেলা না খেয়েই দিন কাটিয়েছেন।
সেই অভিজ্ঞতা আজ তাঁকে দৃঢ় ও আত্মবিশ্বাসী করেছে। তাঁর ভাষায়, শূন্য থেকে উঠে এসে যা অর্জন করেছেন, তার জন্য আজ যদি কেউ তাঁকে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ বলে, তাতেও তাঁর আপত্তি নেই। অভিনেত্রীর মতে, তিনি সবসময় স্পষ্ট কথা স্পষ্টভাবে বলেন, যা অনেক সময় কারও কাছে কড়া মনে হতে পারে। কিন্তু তিনি নীতিতে অটল, জীবনে এমন কিছু করেননি যার জন্য আফসোস হয়। তাঁর মতে, সততার সঙ্গে কথা বলা এবং নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকা অন্যায় নয়।
আরও পড়ুনঃ মৌয়ের চাল বুঝেও চুপ মিঠি, হাসিমুখে আড়াল করল কষ্ট! মায়ের মর্যাদা রক্ষায় মেয়ের লড়াই, কমলিনীর পাশে অনড় মিঠি! পারিবারিক অপমানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, মিঠির সিদ্ধান্তে থমথমে পরিবেশ!
পরিবার এবং কাছের মানুষের কাছ থেকে শেখা মূল্যবোধই আজও তাঁর জীবনের মূল ভিত্তি। অঞ্জনা বিশ্বাস করেন, মানুষের জীবনে কষ্ট আর সংগ্রামই আসল শিক্ষাগুরু। যে অভিজ্ঞতা তাঁকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে, তা নিয়েই তিনি গর্বিত। সমালোচনা বা ভুল ধারণা নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় তাঁর নেই। বরং তিনি চান, নিজের অভিনয় ও জীবনযাপনের মাধ্যমেই উত্তর দিতে। তাই হয়তো বাস্তবের অঞ্জনা যেমন দৃঢ়, পর্দাতেও তাঁর উপস্থিতি তেমনই অদম্য ও অবিচল।