“ছোটবেলা থেকেই রান্না করে তারপর স্কুলে যেতে হতো!”— শৈশবের সংগ্রাম থেকে আজও বাস্তব জীবনকে সহজভাবে সামলান অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য! সংসার, আধ্যাত্মিকতা আর অভিনয় মিলিয়ে তিনি গড়েছেন নিজস্ব জীবনদর্শন!

টলিউডের অভিজ্ঞ অভিনেত্রী ‘অপরাজিতা আঢ্য’কে (Aparajita Adhya) যেমন দর্শকরা বড়পর্দা বা ছোটপর্দায় নানান চরিত্রে দেখেছেন, তেমনই ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি একেবারে ভিন্ন আঙ্গিকে ধরা দেন। আধ্যাত্মিক চর্চা থেকে সংসারের যত্ন, সবেতেই সমান পারদর্শী এই শিল্পী। সংসারের ছোটখাটো কাজগুলো তিনি নিজেই করতে ভালোবাসেন, আর সেই অভ্যাস তাঁর শৈশব থেকেই তৈরি হয়েছে। শুধু অভিনয় নয়, ঘরোয়া জীবনের নানা দিক সামলে নেওয়ার মধ্যে দিয়েই তিনি খুঁজে পান আসল শান্তি।

অভিনেত্রীর সমাজ মাধ্যমের পাতায় চোখ রাখলেই দেখা যায়, নিত্য দিনের ছোটখাটো মুহূর্ত। ওনার এই বিশেষ গুণ দিয়ে তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন যে শিল্পীর পরিচয় কেবল মঞ্চ বা ক্যামেরার আলোতেই সীমাবদ্ধ নয়, তাঁকে গুছিয়ে সংসারটাও করতে জানতে হয়। কিছুদিন আগেই তিনি একটি পোস্টে দেখিয়েছিলেন, লুচি বেলতে কেমন পারদর্শী তিনি। আজও বাপের বাড়িতে তাঁর হাতের লুচির কদর আলাদাই। সম্প্রতি আবার তিনি নিজের আরও একটি অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন।

তিনি বলেন, রান্নাঘরের সব কাজ তিনি সহজেই করতে পারেন ছোট থেকেই। ছোটবেলা থেকেই ফল, সবজি কিংবা মাছ-মাংস কাটতে অভ্যস্ত ছিলেন অপরাজিতা। এমনকি প্রতিবেশীরাও অনেক সময় তাঁর সাহায্য চাইতেন এইসব কাজে! এক সময় এমনও হয়েছে যে, স্কুলে যাওয়ার আগে তাঁকে ভাত-ডাল রান্না করতে হয়েছে, আবার রাতে পড়াশোনা শেষ করেও রান্নার দায়িত্ব নিতে হয়েছে। তাঁর কথায়, জীবনের পথচলায় এসব অভ্যাস তাঁকে অনেকটা শক্ত করে তুলেছে।

মজার বিষয় হল, এদিন যে অনুষ্ঠানে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করলেন তিনি। সেখানেই নিজেই দক্ষ হাতে ইলিশ মাছ কাটতে দেখা গেল তাঁকে। যদিও সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে হাসতে হাসতেই জানালেন, হাতে থাকা বঁটিটিতে ধার প্রায় ছিলই না। তবুও নিজের অভ্যাস ও অভিজ্ঞতার জোরে তিনি সহজেই কাজটা করে ফেলেন। তাঁর মতে, এসব জানা প্রাত্যহিক জীবনের জন্য একেবারে প্রয়োজনীয়। নতুন প্রজন্ম এসব থেকে দূরে সরে যাচ্ছে বলেই তাঁর মনে হয়।

অভিনেত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, এখনকার তরুণ-তরুণীরা হয়তো লেখাপড়ায় খুব এগিয়ে, কিন্তু সংসারের ছোট কাজগুলো করতে পারে না। এই নিয়ে খানিকটা ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন অপরাজিতা। তাঁর কথায়, একসময় যদি এইসব সাধারণ কাজগুলো না জানা থাকত, তবে সমাজে মুখ দেখানোই কঠিন হয়ে পড়ত। আর সেই কারণেই তিনি মনে করেন, পড়াশোনার পাশাপাশি জীবনের ব্যবহারিক শিক্ষা নেওয়াটাও সমান জরুরি।

আরও পড়ুনঃ পর্দায় ভালোবাসার জন্য আত্ম’হ*ত্যা, অবশেষে বাস্তবে মনের মানুষের হাত ধরে নতুন শুরুতে পার্থ! টেলিভিশনে হার দেখালেও, বাস্তবে প্রেমের জয়! শিগগিরিই বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন, সেরে ফেললেন আইবুড়ো ভাত! প্লুটোর হবু স্ত্রীকে চেনেন?

উল্লেখ্য, খাওয়ার ব্যাপারেও অপরাজিতা যথেষ্ট খুঁতখুঁতে। বিশেষ করে ইলিশ মাছ তাঁর বিশেষ প্রিয়। ইরানি ইলিশ, কন্টিনেন্টাল রেসিপি— সবকিছুর ভিড়ে তাঁর পছন্দ বাঙালির চিরচেনা ভাজা ইলিশ, ভাপা কিংবা পাতুরি ইলিশ। তাই ব্যক্তিগত জীবন হোক বা অভিনয়জগৎ, অপরাজিতা আঢ্যের জীবনদর্শনে বারবার ধরা পড়ে সহজ-সরল, অথচ গভীর এক বাস্তবতা। আপনাদের কেমন লাগে অভিনেত্রীকে?