‘এবার বাজারে লেবু বিক্রি করব’ চরম আর্থিক অনটনে দিন কাটছে টলিপাড়ার একাধিক অভিনেতার! এবার কী সেই তালিকায় নাম লেখালেন অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য?

অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য—আজ তিনি বাংলা বিনোদন জগতের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ। বড় পর্দা থেকে ছোট পর্দা, কিংবা ওয়েব সিরিজ—সব ক্ষেত্রেই তাঁর উপস্থিতি যেন অনন্য। কিন্তু সাফল্যের এই জৌলুসের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক গভীর সংগ্রামের গল্প। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের সেই অধ্যায় খুলে বললেন তিনি। কথার ফাঁকে আবেগে চোখ ভিজে উঠল অভিনেত্রীর।

অপরাজিতা জানিয়েছেন, “তখন আমি স্কুলে পড়ি, বাবা সদ্য মারা গেছেন। সংসারে আর্থিক অনটন চরমে। মা, আমি আর দাদা—আমাদের তিনজনের দিন কেটেছে খুব কষ্টে। আমি প্রতিদিন বাজার থেকে মাত্র তিন পিস মাছ কিনতাম। তারপর স্কুলে যাওয়ার আগে নিজেই রান্না করে যেতাম।” তিনি আরও বলেন, “ওই বাজারেই এক বৃদ্ধা মাছ বিক্রেতা ছিলেন, যিনি আমার খুব আপনজনের মতো হয়ে উঠেছিলেন। প্রায়ই বলতেন—‘তুই এত রোগা, তিন পিস মাছ নিয়ে তোর গায়ে লাগবে না।’ তারপর জোর করেই কুঁচো মাছ, ছোট মাছ দিয়ে দিতেন। এমনকি আমায় মাছ কাটা পর্যন্ত শিখিয়েছিলেন।”

অভিনেত্রীর কথায় উঠে আসে সেই মহিলার প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা—“ওই মানুষটা আমার জন্য খুব চিন্তা করতেন। একদিন বললেন, ‘তুই এত সুন্দরী, তোর যদি ভুল বিয়ে হয়, তোর জীবনটা আমাদের মতো নষ্ট হয়ে যাবে। একটা চাকরি করিস।’ তখন আমি মুচকি হেসে বলেছিলাম—‘আমি কিছু না পারলে, তোমার পাশে একটু জায়গা দিও, আমি এক ঝুড়ি লেবু নিয়ে বসব, তবু নিজের পরিচিতি নিয়ে বাঁচব।’”

অপরাজিতা বলেন, “আজ এত বছর পর বুঝতে পারি, কত মানুষ আমায় নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করেছেন। তাঁদের অনেকে আজ আর নেই, অনেকের সঙ্গে দেখা হয় না। কিন্তু আমার জীবনের প্রতিটি সাফল্যের পেছনে তাঁদেরই অবদান। সুযোগ পেলে তাঁদের একবার ধন্যবাদ জানাতে চাই।”

আরও পড়ুনঃ “বুবলাই আজ সত্যিকারের নায়ক, সবাই স্বতন্ত্রকে অপমান করলেও, নতুন কাকুর পাশে দাঁড়িয়ে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করছে!”— একদা ঘৃণিত বুবলাই এখন প্রশংসার পাত্র! আপনাদের চোখে কেমন লাগছে বুবলাইয়ের এই পরিবর্তিত ভাবমূর্তি?

বর্তমানে অপরাজিতা আঢ্য আবারও পর্দায় ফিরছেন তাঁর নতুন ছবি ‘শ্রীদুর্গা’ নিয়ে। তবে অভিনয়ের গ্ল্যামারের বাইরেও তাঁর জীবনের এই মানবিক কাহিনি প্রমাণ করে—আসলে তিনি শুধু একজন সফল অভিনেত্রী নন, বরং এক মমতাময়ী মানুষ, যিনি কখনও নিজের শিকড়কে ভোলেননি।

You cannot copy content of this page