টলিউডের (Tollywood) অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী বর্তমানে রাজনীতির সাথে জড়িত। তাদের মধ্যে একাধিক বার রাজনৈতিক কার্যকলাপের কারণে আলোচনা-সমালোচনার শিকার হয়েছেন। রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং চলচ্চিত্রের জগৎ প্রায় একত্রিত হয়ে, প্রায়ই কিছু ঝামেলা বা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এমনই একটি বিতর্ক ঘিরে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মতো নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে গত আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে রাজপথে নামেন বহু শিল্পী। তাদের মধ্যে ছিলেন লগ্নজিতা চক্রবর্তী, যিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে অবস্থান নিয়ে প্রশাসন এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই সময় এসব শিল্পীরা নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে সরকার ও প্রশাসনের সমালোচনা করেছিলেন। এ ঘটনার পরই তাদের সঙ্গে এক নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে, যা টলিউডে এখন চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনাটি শুরু হয় গত সোমবার কলকাতার কুল কোয়েস্ট কার্নিভালের গানের অনুষ্ঠানে লগ্নজিতা চক্রবর্তীর গাওয়ার কথা ছিল। আয়োজক ছিলেন ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুপর্ণা দত্ত, যিনি ফেসবুকে লগ্নজিতার নাম ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু কুণল ঘোষের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের পর, হঠাৎ করে সেই অনুষ্ঠানে নচিকেতা চক্রবর্তীর নাম ঘোষণা করা হয়। এমন ঘটনার পর, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। কুণল ঘোষ তার পোস্টে কিছু শিল্পীদের কটাক্ষ করেন, যাঁরা আগে সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তিনি বলেন, “এই শিল্পীরা এখন মঞ্চে ডাক পাবেন না, তাদের বিরুদ্ধে তৃণমূল কর্মীরা বয়কট করবেন।”
কুণল ঘোষ আরও বলেন, যে সমস্ত শিল্পীরা তিন মাস ধরে সরকারের বিরোধিতা করেছিলেন, তাদের আবার তৃণমূলের মঞ্চে আসতে দেওয়া উচিত নয়। তিনি মন্তব্য করেন, “তৃণমূলপন্থীদের অনুষ্ঠানে এসব শিল্পীদের কোনো জায়গা থাকা উচিত না।” তিনি অভিযোগ করেন, অনেক নেতা-নেত্রী তখন একেবারে চুপ ছিলেন এবং এখন তারা নিজেদের সমর্থক হিসেবে পরিচিত করানোর জন্য আবার মঞ্চে আসছেন। এই মন্তব্যের পর, টলিউডের মধ্যে সাসপেন্স তৈরি হয়েছে এবং অনেকেই মনে করছেন, এই ধরনের মন্তব্যের ফলে শিল্পীদের পেশাগত জীবনে প্রভাব পড়বে।
আরও পড়ুনঃ ‘দেবের সঙ্গে সিনেমার লড়াইয়ে নেমেছি বলে এত কটাক্ষ, অপমান সহ্য করতে হয়েছে বলে বোঝাতে পারব না’ অকপট মানসী সিনহা
তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সুপর্ণা দত্ত জানান, লগ্নজিতা চক্রবর্তীকে বাদ দেওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না, এবং নচিকেতা চক্রবর্তীর নাম ঘোষণা একটি ভুল ছিল। তবে, কুণল ঘোষের মন্তব্য এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে টলিউডে এখন উত্তপ্ত আলোচনা চলছে, যা আগামী দিনগুলিতে আরও বড় বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।