টলিউডে ফের শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়। সিনেমার শো ঘিরে তৈরি হয়েছে চূড়ান্ত উত্তেজনা, আর সেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এবার দেব (Dev)। অভিনেতা, সাংসদ ও প্রযোজক— এই তিন ভূমিকায় একসঙ্গে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু এবার তাঁর ঠিক সেই জনপ্রিয়তাকেই প্রশ্নের মুখে ফেললেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও অভিনেতা-পরিচালক ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। কুণাল ঘোষের বক্তব্যের সুরে সুর মিলিয়ে তিনি বলেন, “দেব খুব ভাল অভিনেতা, নিঃসন্দেহে। কিন্তু সুপারস্টার বলার জায়গায় এখনও পৌঁছোননি।”
ব্রাত্যের কথায়, একজন সত্যিকারের সুপারস্টার কখনও অন্য কারও নেতৃত্বে দল করেন না। তাঁর এই মন্তব্যেই ইঙ্গিত স্পষ্ট— দেবের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। যদিও নাম না করে মন্তব্য করেন ব্রাত্য, কিন্তু যে দেবের দিকেই আঙুল তোলা, তা কারও অজানা নয়। তাঁর মতে, “সুপারস্টার হলে অন্যের অধীনে দল করত না।” এই এক বাক্যেই যেন দেবের রাজনৈতিক কেরিয়ার এবং চলচ্চিত্রজগতে তাঁর অবস্থান, দুই-ই একসঙ্গে প্রশ্নের মুখে ফেললেন শিক্ষামন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, ক’দিন আগেই অভিনেতা কুণাল ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন দেবকে ঘিরে। তাঁর অভিযোগ ছিল, দেব নিজের সিনেমা ‘রঘু ডাকাত’-এর জন্য নাকি অন্য ছবির তুলনায় বেশি শো পেতে প্রভাব খাটিয়েছেন। মুখে বাংলা সিনেমার উন্নতির কথা বললেও কাজে নিজের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। দেবের নাম না করে কুণালের পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছিল প্রবল আলোচনা। সেই আগুনে ঘি ঢাললেন এবার ব্রাত্য বসু।
ব্রাত্য বলেন, “কুণাল একটা পয়েন্টে ঠিক। ডেমোক্রেসিতে আমি রাজনীতি করি মানে জনসেবা করি। বিজেপি নিয়ে চুপ থাকা বা বিজেপি-ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কাজ করা, যখন অন্যদিকে কুণাল তাঁদের বিরোধিতা করছে— এটা ওর খারাপ লাগাটা স্বাভাবিক।” তিনি আরও যোগ করেন, “কুণাল পলিটিক্যালি ভ্যোকাল। আর দেব, যাঁদের বিরুদ্ধে কুণাল কথা বলে, তাঁদেরই নিয়ে সিনেমা করছে, তৃণমূলের কাউকে নিচ্ছে না— এটা ওর চোখে অন্যায় মনে হচ্ছে।”
তবে শেষ পর্যন্ত এই বিতর্কে সংযমের বার্তাও দিয়েছেন ব্রাত্য বসু। তাঁর মতে, “এইসব দলীয় অভ্যন্তরীণ ব্যাপার সিনেমাকে কেন্দ্র করে টেনে আনা ঠিক নয়। সিনেমা মানুষের আনন্দের জায়গা, সেখানে এই ধরণের বাকবিতণ্ডা বাঞ্চনীয় নয়।”
আরও পড়ুনঃ “মাকে দেওয়া আমার প্রতিজ্ঞা রাখতে পারলাম না!” “মা চলে যাওয়ার পরে উৎসবে আর প্রাণ নেই!”— চরম আক্ষেপে দুর্গাপুজো কাটিয়েছেন কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়! মায়ের মৃ’ত্যুর আগে দেওয়া কোন কথা রাখতে পারেননি অভিনেত্রী?
তবুও একথা বলাই যায়, শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্যে নতুন করে তুঙ্গে উঠেছে দেব বনাম ব্রাত্য-কুণাল বিতর্ক। একদিকে রাজনীতি, অন্যদিকে সিনেমা— দুই মঞ্চেই এখন কেন্দ্রবিন্দু দেব। প্রশ্ন উঠছে, জনপ্রিয়তার দিক থেকে তিনি টলিউডের শীর্ষে হলেও, সত্যিই কি ‘সুপারস্টার’ তকমার যোগ্যতা রাখেন? সেই উত্তর হয়তো সময়ই দেবে।