“কুঁচকানো চামড়ার জন্য ধারাবাহিক থেকে বাদ পড়েছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়!”— বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে বাংলা ধারাবাহিক এবং বিনোদন জগতের অন্দরমহল নিয়ে বিস্ফো’রক অভিনেতা চন্দন সেন!

অভিনয় তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাস, জীবনজুড়ে সংগ্রাম। তবু অভিনয়ই তাঁর আসল ঠিকানা। বহুদিনের রোগভোগ, ক্যানসারের সঙ্গে কঠিন লড়াই পেরিয়ে তিনি আজও দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন টলিউডের (Tollywood) মাটিতে। তিনি ‘চন্দন সেন’ (Chandan Sen), যাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ বাংলা দর্শক। কখনও থিয়েটার, কখনও ধারাবাহিক আবার কখনও সিনেমার পর্দায় তুলে ধরেছেন জীবনের অনবদ্য ছবি। তবে এই দীর্ঘ যাত্রাপথে তাঁর মনে জমেছে একরাশ অভিমান। অভিনয় যখন প্রাণ, তখন কেন এই অবহেলা? এই মুহূর্তে বাংলা বিনোদন দুনিয়ার যে চেহারা, তার পিছনের অন্ধকার গল্প তিনি তুলে ধরলেন দৃঢ় কণ্ঠে, নিঃসংকোচে।

দেখতে দেখতে বাংলা বিনোদন জগতে এক বিশাল বদল এসেছে। এক সময় যাঁরা প্রতিটি চরিত্রে প্রাণ ঢেলে দিতেন, তাঁরাই আজ কোণঠাসা। এদিন এক সাক্ষাৎকারে চন্দন সেনের কথায় উঠে আসে নতুন প্রজন্মের ধারাবাহিক এবং বিনোদন জগতের অন্দরমহল কথা। অভিনেতা বলেন, বাংলা বিনোদনের জগতে যখন প্রথম স্টার নাম লেখালো, তাঁরই এক বন্ধু দায়িত্বে ছিলেন। সে দায়িত্বে এসেই দুটো বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি একেবারে খোলাখুলি বললেন, ‘দায়িত্বে আসা সেই পরিচিত ব্যক্তি তখন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল – অভিজ্ঞ, পরিণত অভিনেতা লাগবে না।

চাই শুধু রূপে ঝলমলে মুখ আর এমন কেউ, যাকে কম টাকায় বেশি কাজ করানো যায়।’ টিভির চৌকাঠ পেরিয়ে প্রতিভার স্বীকৃতি যেন শুধুই বাইরের চাকচিক্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে দাঁড়িয়েছে, এমনই মনে করেন এই বর্ষীয়ান শিল্পী। তাঁর কথায় আরও উঠে এল বাংলা বিনোদন দুনিয়ার বর্ণবিদ্বেষ আর বয়সবাদের প্রসঙ্গও। তাঁর কথায়, সেই ব্যক্তির দ্বিতীয় সিদ্ধান্তটি ছিলো —কোনও কালো বর্ণের অভিনেতা অথবা বয়স্ক “কুঁচকানো চামড়া” অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নেওয়া হবে না।

এই প্রসঙ্গেই এক বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনলেন তিনি! সেই সময়ে ওই চ্যানেলেই একটি ধারাবাহিকে কিংবদন্তি অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ত্বকের বলিরেখার জন্য তাঁকে বাতিল করা হয়! এটি নিছক অপমানই নয়, বরং একটি প্রজন্মের অভিজ্ঞতা ও অবদানের প্রতি চূড়ান্ত অবহেলা বলেই মনে করেন তিনি। অভিনেতার এই বিস্ফোরক মন্তব্য শুধু একটি ব্যক্তিগত ক্ষোভ নয়, বরং একটি গোটা প্রজন্মের শিল্পীসত্তার আর্তনাদ।

আরও পড়ুনঃ প্রকাশ্যে ‘রাজরাজেশ্বরী রাণী ভবানী’র দ্বিতীয় ঝলক! একরাশ চেনা তারকার ভিড়ে, দর্শকদের জন্য আরও বড় চমক! এবার এই ঐতিহাসিক ধারাবাহিকে যোগ দিচ্ছেন ‘তেতুঁলপাতা’ খ্যাত জনপ্রিয় অভিনেতা!

নতুনদের প্রতিপত্তি, সমাজ মাধ্যমের জনপ্রিয়তা কিংবা মুখের রূপ এখন যেন প্রতিভার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে তাঁর প্রশ্ন, “এই ইন্ডাস্ট্রি কি আর শিল্পের মূল্য বোঝে?” তাঁর কণ্ঠে ধরা পড়ে বিষণ্নতা, কিন্তু প্রতিবাদ থেমে থাকে না। বরং শিল্পের জন্য, সম্মানের দাবিতে, তিনি নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরছেন অকপটে। সেই অভিমান থেকেই তিনি সর্বদা বলেন, “সিনেমা আমাকে প্রয়োজনে ডাকে, আর সিরিয়াল আমার পেট চালায়।”

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।