বাংলা টেলিভিশনের পর্দায় তিনি খুব চেনা মুখ, অভিনেত্রী ‘স্বর্ণকমল দত্ত’ (Swarnakamal Dutta)। বর্তমানে ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হচ্ছে দর্শকমহলে। তবে পর্দার আলো ঝলমলে সাফল্যের পেছনে যে ব্যক্তিগত জীবনে অন্ধকার ছায়া নেমে এসেছে বহুদিন ধরে, সেটাই সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে খোলাখুলি প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী। জীবনের ঝড় সামলাতে গিয়ে তিনি যে কতটা ভেঙে পড়েছেন, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট।
অভিনেত্রীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, মাত্র দেড় মাসের আলাপেই তিনি বসেছিলেন বিয়ের পিঁড়িতে। তখন বয়সও বেশি নয়—২২ বা ২৩ বছর। সংসার শুরু করেছিলেন স্বামী সুদীপ্ত ঘটকের সঙ্গে। শুরুতে কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি, কিন্তু বিয়ের পর পরই তাঁকে আঘাত করতে শুরু করে বাস্তবের নির্মমতা। শ্বশুরবাড়ির পক্ষপাতিত্ব, স্বামীর লাগাতার অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো এবং গালিগালাজ— সব মিলিয়ে দমবন্ধ অবস্থায় কাটছিল তাঁর দিন।
তবু এত কিছুর পরও দাম্পত্য টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন স্বর্ণকমল, কারণ সংসার ভাঙা তাঁর কাছে সহজ সিদ্ধান্ত ছিল না। কিন্তু বারবার ভাঙতে থাকা বিশ্বাসের দেয়াল আর সহ্য করতে পারেননি অভিনেত্রী। তাঁর অভিযোগ, স্বামীর নারীসঙ্গের গল্প নতুন কিছু নয়। একাধিকবার অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছেন সুদীপ্ত। প্রতিবাদ করলেই গায়ে হাত উঠত। এমনকি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফের এক নতুন সম্পর্কের জেরে শুরু হয় তীব্র অশান্তি।
এবারও যখন প্রতিবাদ করেন স্বর্ণকমল, তখন শারীরিক নির্যাতনের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। দীর্ঘ ১৫ বছরের দাম্পত্য টানাপড়েনের পর অবশেষে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বর্তমানে তিনি মেয়েকে নিয়ে একা থাকছেন। তবে মা হিসেবে সন্তানের সামনে নেতিবাচক কিছু না আনার চেষ্টা করেন। আবারও এক সাক্ষাৎকারে তিনি আক্ষেপের সুরে বললেন, “একাকীত্ব ভীষণই একটা কঠিন জিনিস। সব কথা তো আর বয়স্ক মা-বাবাকে বলা যায় না, ওদেরও নিজেদের অনেক শারীরিক সমস্যা।
আরও পড়ুনঃ এবার পর্দায় রঞ্জিত মল্লিক-কোয়েল জাদু! জামাই রানের প্ল্যানে দীপাবলিতে আসছে নতুন ছবি! পর্দায় কোয়েলের বাবা নাকি আধুনিক যুগের ফিলোসফার-গাইড হতে চলেছেন অভিনেতা ? বাবা -মেয়ের যুগলবন্দী দেখতে অপেক্ষায় দর্শক!
আবার সব কথা মেয়েটাকেও বলতে পারি না। কারোর সম্পর্কে খারাপ কথা শুনতে আমার মেয়ে স্বচ্ছন্দ বোধ করে না। আর তা ছাড়াও ও এখন বাচ্চা, ওর মনটাকে আমি বিষিয়ে তুলতে চাই না। খুব একা লাগে। কেউ নেই আমার মনের দুটো কথা শোনার জন্য। একাকীত্ব জিনিসটা পুরো সমুদ্রের মতো, তুমি শুধু তলিয়ে যাবে কিন্তু ওপরে উঠতে পারবে না।” পেশাগত জীবনে যতই সাফল্য আসুক না কেন, ব্যক্তিগত জীবনের লড়াই তাঁকে আজও কুরে কুরে খাচ্ছে। লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন একা, নিঃসঙ্গতার সঙ্গে।