“আমার জীবনটা কোনও ঘর কন্ট্রোল করবে না”— অভয়া আন্দোলনের পর একের পর এক শো বাতিল, লোকে বলে ‘দিদি চাপ আছে’, অভিযোগ দেবলীনা দত্তর

টলিউডের পর্দায় তাকে দেখা না গেলেও, বাস্তবের মঞ্চে তিনি এখন প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর। কাজের ফাঁকে নয়, বরং কাজ হারিয়েও যিনি এখনও নিজের আত্মমর্যাদা নিয়ে আপসহীন। যিনি বলছেন, “আমার জীবনটা কোনও ঘর কন্ট্রোল করবে না”—এই স্পষ্ট বক্তব্য অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত-র। তিনি আজ শিল্পী হিসেবে নয়, এক সংগ্রামী নারীর ভূমিকায় দাঁড়িয়ে আছেন। বারবার ফোন আসছে, আবার ক্যানসেলও হচ্ছে অনুষ্ঠান। ঠিক কী ঘটছে টলিপাড়ায়?

দেবলীনার দাবি, পুজোর আগে যখন অনুষ্ঠান আর খুঁটি পুজোর মৌসুম শুরু হয়, সেই সময়টাই মূলত শিল্পীদের রোজগারের বড় সুযোগ। কিন্তু এবার একের পর এক শো বাতিল হচ্ছে। কেউ বলছেন ‘দিদি, চাপ আছে’, কেউ আবার সরাসরি জানিয়ে দিচ্ছেন, ‘আপনাকে আনা যাবে না’। এমনকি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এক পরিচালক সোজাসুজি বলে দিয়েছেন, “তোকেই যদি নিই, ছবি বিক্রি করব কী করে?” এখানেই ইঙ্গিত স্পষ্ট—রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্য হয়তো কোণঠাসা করা হচ্ছে দেবলীনা দত্তকে।

দেখতে গেলে অনেক কাজ হচ্ছে—সিনেমা, সিরিয়াল, ওটিটি, ফাংশন। কিন্তু ভেতরের পরিস্থিতি আলাদা। দেবলীনার অভিজ্ঞতা বলছে, কাজ করছেন নির্দিষ্ট কয়েকজন শিল্পী। বাকিদের হাতে কাজ পৌঁছচ্ছে না। কারও ক্ষেত্রে সংখ্যাটা শূন্যে এসে ঠেকেছে। এক বছরে ৫০টিরও বেশি শো বাতিল হয়েছে তার। এবার আবার সেই একই চক্র শুরু হয়েছে। অথচ শোয়ের ডেট, পেমেন্ট সব ঠিক ছিল, তবুও শেষ মুহূর্তে বাতিল!

এত কিছুর পরেও দেবলীনা স্পষ্ট জানাচ্ছেন—তিনি প্রতিবাদ থামাবেন না। তাঁর দাবি, অভয়া আন্দোলনের পর থেকেই তার এই কোণঠাসা হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি একা নন, আরও অনেক শিল্পী এই রাজনৈতিক চাপে পড়ে কর্মক্ষেত্র থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। কেউ সংসারের তাগিদে সরে গেছেন, কেউ এখনও লড়ছেন। তবে দেবলীনার প্রশ্ন—”পশ্চিমবঙ্গ কি এমন ছিল? যেখানে শিল্পীদের কাজ পাওয়া রাজনৈতিক চাপের উপর নির্ভর করে?”

আরও পড়ুনঃ “আমি উপযাজক হয়ে কাউকে বলা, কোন কিছু বলা বন্ধ করে দিয়েছি” — নতুন প্রজন্মকে কেন আর পরামর্শ দেন না অঞ্জনা বসু!জানালেন অকপটে!

তবু হাল ছাড়েননি দেবলীনা দত্ত। বলছেন, “আমার দুটো হাত, দুটো পা আর একটা মাথা আছে—আমি কিছু একটা করবই। অভিনয়ের পাশাপাশি অন্য কোনও কাজ করতে হলেও পিছপা হব না।” এমনকি অভিনয় শেখানো, চাকরি কিংবা অন্য কোনও উপার্জনের পথ খুঁজছেন তিনি। তবে তার প্রতিবাদ কখনও বন্ধ হবে না। তার স্পষ্ট বার্তা—”আমাকে যারা থামাতে চাইছেন, তারা ভুল করছেন। আমাদের কাজ বন্ধ করলেই আমরা থেমে যাব, এটা তাদের ভুল ধারণা।”