মিথ্যে রিইউনিয়নের প্রমোশনেই বাজিমাত, অভিনয় নয়, মার্কেটিং-ই ভরসা! দুর্বল চিত্রনাট্যের আড়ালে ভক্তদের আবেগ নিয়ে খেলল ‘ধূমকেতু’! দেব-শুভশ্রীর পুনর্মিলন নিয়ে দর্শকের অভিযোগ, ফাঁদে ফেলে ঠকানো হল! “জিৎ ভরসা রাখেন গল্পে, প্রচারে নয়! তাই ‘অসুর’ হেরে গেল বক্স অফিসে!”– বলছেন ক্ষুব্ধ দর্শকরা!

বছরের পর বছর পর্দার বাইরে আলাদা থেকেছেন দেব (Dev) ও শুভশ্রী (Subhashree Ganguly)। এক সময় তাঁদের প্রেমের রসায়ন ঘিরে টলিউডে তৈরি হয়েছিল একের পর এক গুঞ্জন, কিন্তু পরে ভিন্ন পথে হাঁটেন দু’জনেই। শুভশ্রী সংসারী হয়ে উঠলেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে, দেব নিজের রাজনৈতিক দায়িত্ব আর রুক্মিণী মৈত্রর সঙ্গে নতুন অধ্যায় শুরু করলেন। তাই দীর্ঘ প্রায় এক দশক কোনও মঞ্চে একসঙ্গে দেখা মেলেনি তাঁদের। কিন্তু কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ধূমকেতু’র (Dhumketu) ট্রেলার লঞ্চ সেই ভাঙন মুছে দিল এক ঝটকায়।

পুরনো দিনের আবেগ যেন আবারও ফিরে এলো— কালো পোশাকে সেজে “মালা রে” গানে দেব-শুভশ্রীর নাচে অনুরাগীরা ভেসে গেলেন নস্টালজিয়ার ঢেউয়ে। কিন্তু এই পুনর্মিলনের আবেগ বেশিদিন টেকেনি। ১৪ অগস্ট মুক্তি পেল বহুল প্রতীক্ষিত ‘ধূমকেতু’, আর সেখানেই যেন ফেটে পড়ল বাস্তবতার বেলুন। প্রেক্ষাগৃহ ভরে গেল ভক্তদের ভিড়ে, কিন্তু ছবি দেখে বেরোনোর পর মুখে হাসির বদলে শোনা গেল হতাশার গুঞ্জন। দর্শকদের অভিযোগ, গল্পের ভিতটাই দুর্বল—একঘেয়ে প্লট, চিত্রনাট্যের ফাঁক আর মূল জুটির অভিনয়ে তেমন বিশেষ কিছু নেই।

হ্যাঁ, কিছু পার্শ্ব চরিত্রের কাজ প্রশংসা কুড়োলেও দেব-শুভশ্রীর পর্দার রসায়ন আর আগের সেই উজ্জ্বলতা খুঁজে পাননি অনেকে। সমাজ মাধ্যমে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া আরও তীব্রভাবে ধরা দিল। অনেকেই মনে করছেন, দেব ও শুভশ্রী আসলে ভক্তদের আবেগের সঙ্গে খেলেছেন। অনেকে তির্যক মন্তব্য করেছেন—এ যেন একেবারে মার্কেটিং কৌশল! এক দশক পরে প্রাক্তনের সঙ্গে শেষবার জুটি বাঁধার টোপ দেখিয়ে আবেগকে কাজে লাগানো হয়েছে, অথচ ছবির গল্পে বিন্দুমাত্র নতুনত্ব নেই।

এমনকি একজন দর্শক লিখেছেন, ‘‘দেব হয়তো দুর্দান্ত রাজনীতিবিদ, আবার চমৎকার মার্কেটিং হেডও বটে, কিন্তু অভিনেতা হিসেবে এই ছবি একেবারেই প্রমাণ রাখতে পারেনি।’’ আবার অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যদি শুধু আবেগেই সিনেমা চলে, তবে ভালো গল্প আর কঠিন অভিনয় কেন প্রয়োজন? একাংশ বলছে, আজকের টলিউডে দর্শককে প্রলুব্ধ করতে হয়ত পুরনো প্রেমের কেমিস্ট্রি কাজে লাগানো হচ্ছে। কিন্তু এই ‘ফ্যান সার্ভিস’ দর্শকের মন টিকিয়ে রাখতে পারছে না।

আরও পড়ুনঃ হঠাৎই থেমে গেল জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘তেঁতুলপাতা’-র পথ চলা! শেষ দিনের শুটিং ঘিরে আবেগে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলল বিদায়ের ছবি!

ছবির সমালোচনা ঘিরে এমনও বক্তব্য উঠছে যে, মানুষ কেবল পুরনো দিনের স্মৃতি আঁকড়ে ধরেই সিনেমা হলে গিয়েছিলেন, অথচ বেরিয়ে এসেছেন তীব্র হতাশা নিয়ে। সবচেয়ে বড় তুলনাটা উঠে এসেছে জিৎ-এর সিনেমা ঘিরে। সমালোচকদের একাংশ মনে করিয়ে দিয়েছেন, জিৎ-এর ‘অসুর’ ছিল দারুণ গল্প ও নিখুঁত অভিনয়ের মেলবন্ধন, অথচ বক্স অফিসে তার প্রাপ্য সম্মান পায়নি। অন্যদিকে, ‘ধূমকেতু’-র মতো দুর্বল চিত্রনাট্যের সিনেমাও আবেগের জোয়ারে মুক্তির দিনেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।