“শুভশ্রীর সঙ্গে ছিলাম মাত্র ৪ বছর, রুক্মিণীর সঙ্গে ১২ বছর!” শুভশ্রীকে প্রতি কথায় অপমান করেন কেন? ‘বুড়ো ভাম, অন্যকে ছোট করার আগে নিজের দিকে তাকান!’ ‘শুভশ্রী আজ সফল, তোমরা শুধু সহ’বাস করেই যাও!’– দেবকে কড়া ভাষায় নিন্দা ভক্তদের!

বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মুক্তি পেল দেব (Dev) ও শুভশ্রীর (Subhashree Ganguly) বহু প্রতীক্ষিত ‘ধূমকেতু’ (Dhumketu)। প্রায় এক দশক পর ১৪ আগস্ট ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে আসতেই দর্শকরা ভিড় জমিয়েছেন। একসময়ের জনপ্রিয় জুটি দেব–শুভশ্রীকে এতদিন পর একসাথে দেখে ভক্তদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের সীমা নেই। তবে পর্দার বাইরে এই জুটির সম্পর্ক বহু আগেই ভেঙে যায়, শোনা যায় সংসার করতে চেয়েছিলেন শুভশ্রী কিন্তু দেব রাজি ছিলেন না। পরে ব্যক্তিগত জীবনে তারা নিজেদের ভিন্ন পথে হাঁটেন। শুভশ্রী সংসারী জীবনে পা দিয়ে আজ দুই সন্তানের মা, আর দেব রয়েছেন দীর্ঘদিনের সঙ্গিনী রুক্মিণীর সঙ্গে।

সিনেমা মুক্তির পর দেব সংবাদ মাধ্যমে মুখোমুখি হলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে শুভশ্রীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে। অভিনেতা খোলাখুলিই বলেন, “অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছি। একটা সময় আমি আর শুভশ্রী একসঙ্গে ছিলাম, কিন্তু পরে আলাদা পথ বেছে নিই। শুভশ্রীর সঙ্গে ৪ বছর ছিলাম, গত ১২ বছর ধরে রুক্মিণীর সঙ্গেই আছি।” অতীত নিয়ে বেশি না ভেবে বর্তমানকেই গুরুত্ব দেওয়ার কথাই তুলে ধরেন দেব। এমনকি প্রথম প্রেম কি সত্যিই ভোলা যায় না— এমন প্রশ্নের উত্তরে দেব জানান, অতীতের স্মৃতিতে ডুবে থাকা মানেই বর্তমানকে অস্বীকার করা।

তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে দেবের সাম্প্রতিক ব্যবহার। প্রথমত শুভশ্রীর নামের পাশে ‘লেডি সুপারস্টার’ শব্দটি শুনে ব্যাঙ্গাত্মক হাসি হেসেছেন। উপস্থাপক যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করেন ‘ধূমকেতু’ যদি এখন তৈরি হতো তবে শুভশ্রীকে নায়িকা হিসেবে নিতেন কিনা, তখন দেব সোজাসাপটা উত্তর দেন—শুভশ্রীর এখন আর সেই চরিত্রে মানাবে না। কারণ বিয়ে হয়ে গেছে, তিনি দুই সন্তানের মা, তাই আগের মতো ইনোসেন্স নেই। দেবের এমন বক্তব্য ভক্তদের একাংশকে ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি নায়িকাকে ছোট করেছেন এবং একই সঙ্গে নারী শিল্পীদের প্রতি এক ধরনের অবমাননা প্রকাশ করেছেন।

শুভশ্রীর অনুরাগীরা বিষয়টি মোটেও হালকাভাবে নেননি। কেউ সরাসরি দেবকে আক্রমণ করে লিখেছেন, “দেবে ভীষণ বে’ইমান! বিয়ে করেননি বলে দেব মোটেও কচি খোকাটি নয় , বয়স কম হয়নি মোটেও আপনার। ‘বুড়ো ভাম’ই বলা চলে। এই মুহূর্তেও যদি আপনার বাচ্চা হয়, আপনাকে মোটেও সেই বাচ্চার বাবার চরিত্রে মানাবে না। জ্যাঠামশাই, পিসেমশাই দেখতে লাগবে। অন্যকে ছোট করার আগে নিজের দিকে তাকান। আর আপনার ফ্লপ হিরোইন কাম সঙ্গিনী ‘রুক্মিণী’ তো কোনও চরিত্রে ফিট হয় না। নিজের ঢাক নিজে পেটান, যেমন দেব তেমন তার গল্পবাজ সঙ্গিনী।

শুভশ্রীকে ব্যবহার না করলে দেবের কেরিয়ার মুখ থুবড়ে পড়তো প্রথম দিকের। এক তো তোতলা, লম্বা লম্বা পা তিরিং-বিড়িং করে লাফায় শুধু । আর অন্যদিকে কোনও হিট নায়ক ছাড়াও আমাদের শুভশ্রী গাঙ্গুলী লেডি মেগাস্টার!” আবার কেউ সরাসরি সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ করেছেন, “শুভশ্রী সঠিক সময় চলে গিয়ে অনেক ভালো কাজ করেছে। শুভশ্রীর থেকে আমাদের প্রত্যেকটা মেয়েকে শেখা দরকার যে, প্রেমিকাকে বিয়ে করে ঘরের বউ করার সাহস নাই যার তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক না থাকাই ভালো। সম্পর্ক মানে শুধু পাশে থাকা না সম্পর্ক মানে হচ্ছে সুন্দর একটা সংসার গড়ে তোলা আর বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত বিষস্ত হাত দুটি ধরে থাকা।”

একইসঙ্গে এক ভক্ত বলেন, “শুভশ্রী কেরিয়ার আর দাম্পত্য জীবন দু’দিকেই অনেক সফল এবং সুখি আছে। নিঃসন্দেহে শুভশ্রী আজ সাকসেসফুল আর তুমি ও তোমার সঙ্গিনী ফ্লপের পর ফ্লপ খেয়ে যাচ্ছো।” এমনকি কেউ কঠোর ভাষায় আক্রমণ করেছেন, “সারাজীবন সহ’বাস করেই কাটিয়ে দিল, বিয়ে আর করলো না। এই সব মানুষ শুধু গাছেরটা খাবে আর তলারটা কুড়নোর দায়িত্ব নেবে না। শুভশ্রী ঠিক করেছে ওর কাছ থেকে সরে। তুমি শুধু লিভইন করেই যাও বিয়ে লাগবে না, সবাই তোমার রুক্মিনীর মতো অস’ভ্য রক্ষি’তা নয়!

আরও পড়ুনঃ “আমি কি মূ’র্খ না পা’গল যে সংসদে সিঁদুর পরে বলব বিয়ে করিনি? আমার তো পাগ’লাগা’রদ যাওয়া উচিত!” “রেজিস্ট্রি করিনি, নিখিলের সঙ্গে বিয়েটা অ’বৈধ ছিল!”— নুসরতের দাবি, মন থেকে বিয়ে করেছিলেন! যশের সঙ্গে সুখের সংসার পেতে প্রথম বিয়েকে অস্বীকার নায়িকার

মনে রাখবে একটা জাতের মেয়ে কখনো এইভাবে বারো বছর ধরে সার্ভিস দিয়ে আসে না!” সব মিলিয়ে সিনেমার সাফল্যের আনন্দে ভেসে যাওয়ার কথা থাকলেও দেবের বিতর্কিত মন্তব্য যেন সেই আনন্দে কাঁটা বিঁধিয়েছে। যেখানে দর্শকরা ১০ বছর পর দেব–শুভশ্রীকে একসাথে দেখে নস্টালজিয়ায় ভেসেছেন, সেখানে নায়কের এমন তির্যক মন্তব্য নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, অভিনয়শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবনের সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, অন্য শিল্পীর মর্যাদাকে ছোট করার মতো মন্তব্য করলে তা শুধু তাঁর ইমেজকেই খর্ব করে।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।