সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতায় উৎযাপন করা হয়েছে নারী এবং প্রকৃতির একটি অসাধারণ মেলবন্ধন শাড়ি এবং অলংকারের প্রদর্শনীর মাধ্যমে। শৈলী মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছিল গ্রাম বাংলার শিল্পীদের হাতে বানানো শাড়ি এবং গয়নায়। অনুষ্ঠানটিতে সূচনায় শৈলীর কর্নধার শিক্ষক শৈবাল বসু জানিয়েছেন শাড়ির এবং প্রকৃতির অদ্ভুত মেলবন্ধনের কথা। তিনি এও বলেছেন শাড়ি বা গয়না শুধুমাত্র হিন্দু বাঙালি মেয়েদের জন্যেই নয়, এতে অধিকার আছে সকলের। জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই এই ধারাবাহিকতাকে সম্বৃধ করে।
অনুষ্ঠানটিতে কবিতা পাঠ করেছিলেন কবি জয় গোস্বামী। এছাড়াও বিবি রাসেল, মমতা শংকর, ব্রততী বন্দোপাধ্যায় তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে জানিয়েছেন শাড়ি, প্রকৃতি এবং নারীত্বের বাস্তব সংজ্ঞা। ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় তুলে ধরেছেন সাহিত্যের সঙ্গে পোশাকের মিল। শেষের কবিতার একটি লাইনকে উল্লেখ্য করে তিনি বলেছেন “ফ্যাশন মুখোশ, স্টাইল মুখশ্রী”। ওই অনুষ্ঠানেই মমতা শংকর বলেছিলেন “পুরনো দিনের আভিজাত্য ফিরিয়ে আনা দরকার। আজকালকার মেয়েদের শাড়ির আঁচল ঠিক থাকে না। ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাড়িয়ে থাকা মেয়েরা যেভাবে শাড়ি পরে আজকালকার মেয়েরা সেইভাবে শাড়ি পড়ে।”
তিনি এও বলেছেন “ওরা তো পুরুষদের আকর্ষণ করার জন্য পড়ে কিন্তু বাকিরা কেন পড়ছে। মেয়েরা শীলতা বজায় রাখলে পুরুষরাও তাদের সম্মান করবে। আমি এর বিরোধিতা করি। আমি ভালো মেয়ে হলে এরকম পোশাক পরব কেন?” অভিনেত্রী নৃত্য শিল্পীর এই বক্তৃতা শুনেই শুরু হয়েছে ভয়ানক ট্রোলিং। নানা মানুষ নানাভাবে করছেন অভিনেত্রীকে ট্রোল। অনেকেই বলেছেন একজন মহিলা হয়ে মহিলাদেরকেই অসম্মান করছেন তিনি। তাদের চরিত্র, পোশাক নিয়েই এরকম কুরুচিকর মন্তব্য। অনেকে একথাও বলেছেন যৌনকর্মীদের এরকম ভাবে বলা উচিত হয়নি তার।
সেই কথাতেই এবার মুখ খুলেছেন আরেকজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। বৃহস্পতিবার ফেসবুক একটি পোস্ট করেন শ্রীলেখা। সেখানে তিনি লিখেছেন “মমতা শংকরের নামে অভিযোগ করার আগে বা তাকে ট্রোল করার আগে বোঝার চেষ্টা করুন আসলে উনি কি বলতে চেয়েছেন। হ্যাঁ এটা হয়তো ঠিক এই কথায় একটু আত্মদর্শনের প্রয়োজন আছে। তবে আমি নিশ্চিত উনি লাইসেন্সপ্রাপ্ত যৌনকর্মীদের কোনওভাবেই আঘাত করতে চাননি। (লাইসেন্সবিহীনদের বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।)”
আরও পড়ুনঃ ‘ডাকু মঙ্গল সিংহ!’ দেড় কোটি টাকা চুরি করে মেয়েবাজি, ফুর্তি করতে গিয়ে ধরা পড়ল জনপ্রিয় ইউটিউবার!
যদিও মনে হচ্ছে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বর্তমানে মেয়েদের শরীর দেখিয়ে শাড়ি পরার প্রবণতাকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন মেয়েদের সকলের সামনে নিজেকে সহজলভ্য একটি জিনিস করে তোলা একদমই উচিত নয়। তাই মেয়েদের পোশাক নিয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তবে হয়তো তার কথায় ভুল বার্তা পৌঁছেছে নেটিজেনদের কাছে। সেই ক্লিপ ভিডিওগুলিরও কারণেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তোলপাড়।