বাংলা সংগীত জগতে ‘ইমন চক্রবর্তী’র (Iman Chakroborty) নাম নতুন নয়। রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে শুরু করে লোকগান কিংবা আধুনিক গান— সব ক্ষেত্রেই তাঁর গলার জাদু শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে বারবার। মাটির গন্ধ মাখা সুর হোক বা অন্তরের গভীর থেকে উঠে আসা আবেগময়ী গান, তাঁর পরিবেশনায় প্রতিটি ধারা পায় নতুন প্রাণ। বহু ছবির জনপ্রিয় প্লে-ব্যাক শিল্পী হিসেবে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন, পাশাপাশি একক গানেও দর্শক-শ্রোতাদের কাছ থেকে ভালোবাসা কুড়িয়েছেন। এই অসাধারণ গায়কী প্রতিভার জন্যই তিনি পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার থেকে মহানায়ক সহ একাধিক সম্মান।
বেশকিছু বছর ধরে তাঁকে বিচারকের আসনে বসতে দেখা যাচ্ছে, জি বাংলার জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘সা রে গা মা পা’-তেও। কিন্তু সাফল্যের মঞ্চে থেকেও ইমন নিজেকে নিয়ে বরাবরই খোলামেলা। সম্প্রতি এক পডকাস্টে শোতে গায়িকা এমন একটি বক্তব্য রেখেছেন, যা নেটিজেনদের মধ্যে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “একজন নারী যতই শক্তিশালী হোক না কেন, শারীরিক সামর্থ্যের দিক থেকে তিনি কোনওদিন পুরুষের সমান হতে পারবেন না, অন্তত একটা সময়ের পর তো হবেই না!
এর কারণ, হরমোনজনিত পরিবর্তন থেকে শুরু করে মাসিক চক্রের মতো জটিলতায় নারীরা প্রতিনিয়ত যে শারীরিক কষ্ট সহ্য করেন। তার সঙ্গে পুরুষদের অভিজ্ঞতার কোনও মিল নেই।” নিজের বক্তব্যে ইমন এই বাস্তবতাই তুলে ধরেছেন তিনি। ইমন মনে করেন, সমাজে নারীরা প্রায়শই প্রথম থেকেই লড়াই শুরু করেন নিজেদের প্রমাণ করার জন্য। তাঁকে বলতে শোনা গেছে, “একজন নারীকে সবসময় প্রমাণ দিতে হয় যে তিনি পুরুষের সমান। কেন প্রমাণ করতে হবে? আমি যেমন, তেমনই থাকবো!
আমার পরিচয় তোমার দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করবে কেন?” এই আত্মবিশ্বাসী কথাগুলো শুধু তাঁর ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গিই নয়, বরং সমগ্র নারীদের মনের কথা বলে দিয়েছে। গায়িকার এই স্বীকারোক্তি শুনে নেটিজেনরা তাঁকে ভরিয়ে দিয়েছেন ভালোবাসায়। কেউ কেউ বলেছেন, “সত্যিই এই কথাটি এখন কেউ বলতে সাহস পান না, অথচ ইমন তা অকপটে উচ্চারণ করেছেন।” আবার কেউ লিখেছেন, “প্রমাণ করার চেষ্টা মানেই বোঝায় সমাজ আগেই নারীদের পিছিয়ে রাখার মানসিকতা তৈরি করেছে।
আরও পড়ুনঃ বিয়ের পর শ্বেতা-রুবেলের প্রথম দুর্গাপুজো আরও রঙিন করতে চলেছে এক বিশেষ মুহূর্ত! উৎসবের আগে আসছে শ্বেতার জীবনে বড়ো সুখবর! সংসারে আসছে নতুন অতিথি? কোন ইঙ্গিত দিলেন তারকা দম্পতি?
তাই এমন স্পষ্টবাদী বক্তব্য তাঁকে আরও বেশি অনন্য করে তুলেছে।” তবে একাংশের কথা, “ছোট থেকে পুরুষের যদি প্রমাণ করার তাগিদ থাকে, মেয়েদেরও থাকা উচিত!” সব মিলিয়ে বলা যায়, ইমন কেবলমাত্র একজন প্রতিভাবান গায়িকা নন, বরং সমাজের নানা প্রশ্ন নিয়ে খোলাখুলি কথা বলতে সাহসী এক নারীও বটে। গান দিয়ে তিনি যেমন মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যান, তেমনই জীবনের বাস্তবতা নিয়ে তাঁর খোলামেলা স্বর সমাজে তৈরি করছে ভিন্ন মাত্রার আলোচনা। আর এই খোলামেলা স্বভাবই তাঁকে আজকের দিনে ভক্তদের কাছে আরও কাছের করে তুলেছে।