‘অপরাজিত’-র পর ‘বাবু সোনা!’ জিতু’কে মেনে নিতে পারলেন না দর্শকরা, নিজের সিনেমা নিয়ে সন্তুষ্ট নন খোদ নায়ক

সাম্প্রতিক সময়ে অভিনেতা জিতু কামাল তাঁর নতুন ছবি ‘বাবু সোনা’ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই ছবিতে শ্রাবন্তী চ্যাটার্জীর বিপরীতে কাজ করেছেন তিনি। ছবির মুক্তির পর থেকেই নানান রকম মন্তব্য আসতে শুরু করেছে দর্শকদের কাছ থেকে। কেউ ছবির কনসেপ্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, আবার কেউ ছবির চরিত্র চিত্রণে সন্তুষ্ট নন। তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো, জিতু নিজেই এই ট্রলকে স্বীকার করে নিয়ে মজার ছলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সাধারণত অভিনেতারা যখন সমালোচনার সম্মুখীন হন, তখন তাঁরা নীরব থাকেন বা আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা করেন। কিন্তু জিতুর এই নির্ভার মনোভাব এবং আত্ম-ট্রল দর্শকদের নজর কেড়েছে।

তবে এই বিতর্কের মূল কারণ শুধু ট্রল নয়, বরং দর্শকদের প্রত্যাশা বনাম বাস্তবতা। জিতু কামাল তাঁর আগের ছবি অপরাজিত তে সত্যজিৎ রায়ের ভূমিকায় অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসিত হন। সেই ছবিতে তাঁর অভিনয় এতটাই বাস্তবসম্মত ছিল যে, দর্শকরা সত্যজিতের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি দেখতে পেয়েছিলেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তী ছবির ক্ষেত্রে দর্শকদের প্রত্যাশার পারদ ছিল অনেক উঁচুতে। কিন্তু বাবু সোনা ছবির প্রচার এবং ট্রেলার দেখে অনেকেই মনে করছেন, এটি সেই গভীরতা বহন করছে না, বরং একেবারেই আলাদা ঘরানার ছবি। ফলে দর্শকরা হতাশ হয়েছেন এবং জিতুকে সেই আগের ছকে দেখতে না পেয়ে কিছুটা অবাকও হয়েছেন।

অনেকেই মনে করছেন, জিতু কামালের এই ছবির নির্বাচন একধরনের পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ। অপরাজিত দিয়ে তিনি যেমন প্রশংসিত হয়েছেন, তেমনই সেই ইমেজ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টাও করছেন। বাংলা সিনেমার দর্শকদের মধ্যে এক ধরনের প্রবণতা আছে—একজন অভিনেতাকে এক নির্দিষ্ট চরিত্র বা ঘরানার মধ্যে আটকে ফেলা। জিতু হয়তো সেই গণ্ডি ভাঙতে চেয়েছেন, কিন্তু দর্শকদের একাংশ সেটা সহজভাবে নিতে পারেননি। অন্যদিকে, নির্মাতারাও হয়তো ছবির প্রচারের সময় দর্শকদের ভুল বার্তা দিয়েছেন, যার ফলে প্রত্যাশা ও বাস্তবতার মধ্যে ফারাক তৈরি হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম জিতু কামালের নতুন ছবির পোস্টার শেয়ার করে তাতে লিখেছে, ‘যুক্তিহীন গল্প ও স্নায়ুর পরীক্ষা’। আশ্চর্যের বিষয় জিতু নিজেই সেটি শেয়ার করে তাতে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। এরপরই সেখানে কমেন্টের ঝড় দেখা যায় যেখানে সবাই তার এই আত্মট্রোলের ধরণকে বাহবা দিয়েছেন। একজন বলেছেন, “সমালোচনা আসবেই তবে এই সমালোচনা গুলো হয়তো আপনাকে পরবর্তী সময় ছবি বেছে নিতে হেল্প করবে। আপনি আরো কমার্শিয়াল ছবি করুন। গল্প বুঝে, বিশ্বস্ত কারো সাথে।”

আরও পড়ুনঃ পরম-পিয়ার পর আদৃত কৌশাম্বি! নতুন দম্পতির জীবনে এলো খুদে সদস্য? ভাইরাল ছবি

এই প্রসঙ্গে আবার অন্যজন বলেন, “শ্রদ্ধা বেড়ে গেলো। বড়ো অভিনেতা হয়েও এই সমালোচনা গুলো কত সহজ ভাবে নিতে পারেন। আমরা সাধারণ মানুষ রা অনেকেই পারিনা। আসলে অপরাজিত জিতু কামালের পর বাবু সোনা জিতু কামাল কে কেউ মানতে পারছেনা।” এই কমেন্টের উত্তরে জিতু বলেন, “প্রশংসা আর সমালোচনা দুটোই যদি আমি সমানভাবে সাদরে গ্রহণ না করি তাহলে আমি বিচারশূন্য”।

আরেক নেট নাগরিক বলেন, “আসলে ব্যাপার টা কি বলুন তো আপনাকে লোকে যে ধরনের ছবি তে দেখে অভ্যস্ত.. সেখান থেকে এখানে হঠাৎ করে এই কিউমূলেটিভ চেঞ্জ টা মানুষ গ্রহণ করবে না এটা স্বাভাবিক। কমার্শিয়াল ছবি নিয়ে যে আবার নতুন হাইপ টা ক্রিয়েট হচ্ছে সেটাকে ভেঙে ফেলতে দেবেন না। আপনারা চাইলেই সেই জায়গা থেকে নিজেদের দিক টা মজবুত করতেই পারতেন। আজকে শুধুমাত্র নামের ভিত্তিতে সিনেমা চলে না দাদা গল্প টাও মারাত্মক ম্যাটার করে।” যার উত্তরে অভিনেতা বলেন, “ভাই আমার গল্প এক শুনিয়েছিল, কাজ অন্য করেছিল । এটা ২০২২ এর ছবি । তার পর থেকে আমি ছবিই ছেড়ে গেছি।” জিতুর এই দাবি অবাক করেছে সকলকে। যদিও তাঁর এই সমালোচনা গ্রহণের ধরণ বেশ প্রশংসিত হয়েছে।