অপর্ণা সেন না থাকলে আজ শর্মিলা ঠাকুরের সিনেমায় অভিনয় করা হত না! জানুন এই অজানা চমকপ্রদ তথ্য

অপর্ণা সেন এবং শর্মিলা ঠাকুর , ভারতীয় চলচ্চিত্রের মানচিত্রে রঙিন দুই নাম। দুই অভিনেত্রীর অভিনয় একটা প্রজন্মকে মুগ্ধ করেছে। বর্তমানে পরিচালক অপর্ণা সেনের সিনেমা বক্স অফিসে ঝড় তোলে।

কিন্তু এই দুই অভিনেত্রীর শুরুর দিকের কিছু ঘটনা বেশ আকর্ষণীয়। হলিউডে ১৯৪৬ সালে মুক্তি পায় বিখ্যাত সিনেমা ‘টু ইজ ইজ ওন’। বলিউডে এই ছবির অনুকরণে ১৯৬৯ সালে তৈরি হয় আরাধনা সিনেমাটি।

বলিউডে এই সিনেমাটি একটা ল্যান্ডমার্ক হিসেবে ধরা হয়। শক্তি সামন্তের এই সিনেমায় অভিনয় করেন শর্মিলা ঠাকুর। ‘অপুর সংসার’ থেকে উঠে আসা শর্মিলা ১৯৫৯ সালে বাংলা ছবিতে পা রাখেন। যদিও তারপরে খুব বেশি দেখা যায়নি তাকে।পরিচালক শক্তি সামন্তের হাত ধরে বলিউডে আসেন শর্মিলা ঠাকুর। আরাধনা সিনেমায় অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতে নেন।

এরপরেই পর পর হিট করতে থাকে তার সিনেমা। ১৯৬৪ সালে হিন্দিতে কাশ্মীর কি কলি এবং দু’বছর পর ‘এন ইভিনিং ইন প্যারিস’ সিনেমায় বিকিনি পরে বড়ো পর্দায় আসেন তিনি। সেই সময় টাইগারের সাথে তার ভালোবাসার কথা সকলেরই জানা।

আরাধনা সিনেমাটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছয়। সিনেমার গান সহ পুরো সিনেমা বাংলায় ডাবিং হয় এবং ধারাবাহিক সাফল্য পায় বাংলাতেও। এরপরে তামিল ও তেলেগু ভাষায় শিবগামী সেলভান’ ও ‘কন্যা বারি কালালু’ এই সিনেমা তৈরি হয়। এই সিনেমা নিয়ে সেই সময় মানুষের মনে একটা আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।

কিন্তু এই সিনেমার কাস্টিং নিয়ে একটা গুঞ্জন শোনা যায়। পরিচালক শুরুতে এই সিনেমার জন্য অপর্ণা সেনের কথা ভেবেছিলেন কিন্তু বাজেট একটা বড়ো সমস্যা। তাই অপর্ণা সেনের পরিবর্তে শর্মিলা ঠাকুর অভিনয় করেন। এই সিনেমাকে শর্মিলা ঠাকুরের জীবনের টার্নিং পয়েন্ট বলা হয়।বাংলা থেকে পান একের পর এক পুরস্কার, অপর্ণা সেনের পরিবর্তে লাইমলাইটে চলে আসেন শর্মিলা ঠাকুর। ১৯৭০ সালে এবার একই ফ্রেমে দেখা যায় অপর্ণা সেন এবং শর্মিলা ঠাকুর কে।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লেখা অরণ্যের দিনরাত্রি নিয়ে সিনেমা করার সিদ্ধান্ত নেয় পরিচালক সত্যজিৎ রায়। সত্যজিৎ মিলিয়ে দেন দুই অভিনেত্রীকে। যদিও এরপরে আর দুজনকে একসাথে দেখা যায়নি। অপর্ণা সেন টলিউডে সিনেমা করতে শুরু করে অন্যদিকে শর্মিলা ঠাকুর বলিউডে।

প্রায় ৩৯ বছর পর ফের এক সাথে দেখা যায় অপর্ণা সেন এবং শর্মিলা ঠাকুর কে। অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী পরিচালিত ‘অন্তহীন’ সিনেমায় তাদের আবার একসাথে দেখা যায়। সিনেমায় শর্মিলা ঠাকুর পরবর্তীকালে আয়েশা বেগম হলেও জন্মলগ্ন কলকাতার ঠাকুর বাড়ি। আরাধনা ছেড়ে গেলেও অন্তহীন তাদের একই ফ্রেমে মিশিয়ে দিয়েছে।