বহুদিন হয়ে গেল তার কণ্ঠস্বর আমরা রেডিওতে শুনতে পারি না। সকালবেলা রেডিও মিরচিতে সকালম্যানের কন্ঠ না শুনে অনেকেই দিন শুরু করতে পারতেন না এবং তাদের এখন খুব অসুবিধা হচ্ছে তাই মীরের পুরনো সানডে সাসপেন্স এর এপিসোড গুলো তারা শোনেন। তার কণ্ঠস্বর এতটাই আকর্ষণীয় যে একটা সাধারণ লাইন বললেও সেটা শুনতে মধুর লাগে।
তার ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত বলে অনেকে মনে করেন না তবে বিভিন্ন কারণে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিশেষ করে ধর্ম সংক্রান্ত কারণে তিনি খুব জড়ান কারণ অনেকেই মনে করেন তিনি হিন্দু ধর্মকে নিয়ে সারাক্ষণ খিল্লি করেন তবে নিজের ধর্মকে নিয়ে মজা করার সাহস তার নেই। তবে যারা মীরের জীবনী টি পড়েছেন তারা জানেন যে কতটা কষ্ট করে বড় হয়েছে এবং আজকে এই জায়গায় পৌঁছেছেন যেখানে তাকে টলিউড বলিউড দুটো জায়গা থেকেই অভিনয়ের জন্য ডাকা হয়।
রিপন স্ট্রিটের পাশে একটি অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পরিবারের বাড়ির সিঁড়ির নিচে যে এক কামরা ঘর হয় সেখানেই সপরিবারে থাকতেন মীর আফসর আলি।আমরা তার জীবনী থেকে এটাও জেনেছি যে এই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পরিবারের কাছেই কিন্তু তিনি ইংরেজি বলা শিখেছেন। বহু কষ্ট করে তারা থাকতেন। কিন্তু কোনভাবে প্রোমোটার ওই বাড়ি ভাঙতে উদ্যত হয় এবং কেস জিতে যায়।
৩১শে আগস্ট ১৯৮৭ সালে তাদেরকে এক দুপুরে রাতারাতি ঘরছাড়া করে দেওয়া হয়। তখন তার বয়স ছিল ১২।তিনি স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে এসে দেখেন সমস্ত বাসনপত্র খাবার দাবার আসবাবপত্র সব রাস্তায় পড়ে রয়েছে। মাথার উপর কোন ছাদ নেই, কোথায় যাবেন জানেন না। আজ এত বছর পরেও এত বৈভবের মধ্যে থেকেও ওইদিনের জন্য তার মন কেঁদে ওঠে এবং তিনি কিছুতেই ভুলতে পারেন না ওই দিনের ভয়াবহতাকে।
View this post on Instagram
পরে তার বাবা যে কারখানায় কাজ করতেন সেখানে তাদের থাকার জায়গা হয় কিন্তু তার বাবা মীরকে তাদের দেশের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপরে অনেক স্ট্রাগল করে তার বড় হওয়া এবং কলকাতায় এসে তিনি যখন লন্ড্রিতে জামা কাপড় দিতে যাচ্ছেন তখন সেই কাগজে রেডিও মিরচির বিজ্ঞাপন ছিল নতুন রেডিও জকি খোঁজা হচ্ছে। সেই দেখে ১৯৯৮ সালে যান এবং তারপরে ইতিহাস।তাই আজ যে হাসি খুশি মীরকে আপনারা দেখেন এটার পেছনে অনেক দুঃখের দিন রয়েছে।