Hiran: ভাঙা টালির ছাদ থেকে ঝরে পড়ত জল,বিনা চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে থেকে মারা যান হিরণের বাবা!

আমরা তাকে চিনি বাংলা ইন্ডাস্ট্রির নায়ক হিসেবে।চকলেট বয় হিসেবে পরিচিত হিরণকে ভালোবাসেন অনেকেই।তবে সেরকম ভাবেই হিট কোন ছবি না দিতে পারায় তাকে হিরো হরিণ বলে মজা করেন সকলেই। জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছেন তিনি চলতি বছরে খড়্গপুরের বিধায়ক হিসেবে জিতে। কিন্তু রাজনৈতিক জীবনে যেন চলছে টালমাটাল কারণ কিছুদিন আগেই বিজেপি রাজ্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন হিরণ। এর মাঝেই বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উঠে এলো তার জীবনের ভয়ঙ্কর অজানা সব কথা যা জানতে পারলে শিউরে উঠবেন আপনি।

অনেকেই জানতে চাইছিলেন বাস্তবের হিরণ কিরকম?তিনি কি আদৌ মানুষের দুঃখ-কষ্ট বোঝেন? সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই উঠে এলো তার ছোটবেলার কথা। জানালেন নিজের জীবনে দারিদ্র্যকে সামনে থেকে দেখার ভয়াবহ কাহিনী।

হিরণের বাড়ি উলুবেড়িয়ার প্রত্যন্ত গ্রামে। অভিনেতা নিজ মুখে বলেছেন, ‘‘মাটির বাড়ির টালির ছাদের ঘরে মানুষ। নুন আনতে পান্তা ফুরায়। বর্ষা এলেই খুব খুশি হতাম। কারণ, ভাঙা টালি চুঁইয়ে অঝোরে জল ঝরত। ঘর ভাসত বৃষ্টিতে। আমায় আর পড়তে হত না!’’ এছাড়া বর্ষাকালে এক হাঁটু কাদা পেরিয়ে যেতেন স্কুলে পড়তে। সেখানে কোন টেবিল চেয়ার বেঞ্চ ছিল না মাটিতে চাটাই পেতে বসে পড়তে হতো। এরপরও ক্লাস টুয়েলভ পর্যন্ত তিনি প্রথম হয়েছিলেন!

এর পরেই তিনি অভাবের যে চিত্র তুলে ধরেন তা জানতে পেরে শিউরে ওঠেন তাঁর অনুরাগীরা। তিনি বলেন যে, ‘‘অর্থের অভাবে অসুস্থ বাবার চিকিৎসা করাতে পারিনি। ১৯৯৭-এ বিনা চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন বাবা। তার তিন মাসের মাথায় মা-ও চির-বিদায় নেন। আমি অসহায়ের মতো শুধু দেখেছি।’’ এরপর এই হিরন মানসিকভাবে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েন। অনাহারে আধপেটা দিন চলত তখন তার। একটা সময় এমন ছিল যখন সোজা হয়ে হাঁটতে পারতেন‌ না হিরণ!

এরপরে রবীন্দ্রভারতীতে ইংরেজিতে স্নাতক বর্ষে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু মানসিক পরিস্থিতির জন্য প্রথম বর্ষের পরে আর পড়তে পারেননি। বদলে তাঁর প্রিয় রাখালদার হাত ধরে চলে এসেছিলেন রাজা রামমোহন রায় রোডের নগেন্দ্র মঠে। সেখানে তিন বছর ব্রহ্মচর্য আশ্রমও পালন করেছিলেন। কিছুটা মানসিক স্বস্তি পেয়ে ফিরে যান বিশ্ববিদ্যালয়ে। আবার শুরু করেন পড়াশোনা। এরপরে দ্বিতীয় তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেন এবং কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। তাই জীবনের লড়াইটাকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন হিরণ। সেজন্য মানুষের ট্রোলিং আর তার গায়ে লাগেনা।