উনিশ লক্ষ বকেয়া টাকা আটকে রাখা থেকে সমাজ মাধ্যমে ‘অপমানের ভাষা’, রুদ্রনীল ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক বি’স্ফো’রক অভিযোগ! যৌথ প্রযোজনার জট, অর্থ ফেরত না পাওয়ায় ফেডারেশনের কড়া হুশিয়ারি অভিনেতাকে! ভবিষ্যতে হতে পারে বয়কট?

ফেডারেশনের টেকনিশিয়ানদের একাংশের ক্ষোভ এখন সরাসরি এসে পড়েছে অভিনেতা তথা প্রযোজক রুদ্রনীল ঘোষের (Rudranil Ghosh) দিকে। বিগত দুই বছরে তার প্রোডাকশন সংস্থার কাছে বহু টেকনিশিয়ানের পারিশ্রমিক আটকে আছে, এমন অভিযোগই গতকাল সম্মেলনে তুলে ধরেছেন ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, বহুবার মেল করা এবং অন্যান্য উপায়ও যোগাযোগ করার পরেও বকেয়া মেটানোর কোনও স্পষ্ট ব্যবস্থা দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে স্বরূপ বিশ্বাসের বক্তব্য ছিল তীব্র। তার দাবি, যারা শিল্পের স্বচ্ছতা নিয়ে কথা বলেন আবার তারা নিজেরাই নাকি হিসেব মেলাতে দেরি করছেন!

এদিকে ওয়েব সিরিজ ‘মাতঙ্গী’র প্রযোজনাকে কেন্দ্র করে অভিযোগ আরও জটিল হয়ে উঠেছে। রুদ্রনীলের সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল যে, যেহেতু এটি যৌথ প্রযোজনা তাই ক্যামেলিয়া প্রোডাকশন বকেয়া পরিশোধ করবে। কিন্তু ক্যামেলিয়ার দাবি একেবারেই উল্টো! তাদের কথায়, চুক্তির নানা শর্ত পূরণ হয়নি, এমনকি সেটা ভাঙার প্রমাণপত্রও রয়েছে, ফলে সেই অর্থ দেওয়ার দায় তাদের নয়। পরে ফেডারেশনকে জানানো হয়, সব মিলিয়ে এই টাকা নাকি পরিশোধ করবে অভিনেতার সংস্থা। কিন্তু কার ওপর দায় বর্তাবে?

এইসব নিয়ে এত মতবিরোধের কারণে টেকনিশিয়ানরা আরও বিপাকে পড়েছেন। এর মধ্যে নতুন একটি অভিযোগ জমা পড়েছে ফেডারেশন দফতরে যে, অঙ্কুশ আগরওয়াল নামে এক ব্যক্তির দাবি তিনি এবং প্রান্তিক গায়েন নামে আরেকজন মিলিয়ে ২০২২ ও ২০২৩ সালে একটি ওটিটি সিরিজের কাজের জন্য রুদ্রনীলের প্রোডাকশন সংস্থাকে প্রায় উনিশ লক্ষ টাকা দেন। সেই অর্থ নাকি ফেরত মেলেনি। অঙ্কুশ ফেডারেশনকে অনুরোধ করেছেন, বিষয়টি নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে। প্রসঙ্গত, এই অভিযোগ সামনে আসায় রুদ্রনীলকে ঘিরে আর্থিক বিতর্ক আরও বেড়েছে।

অর্থনৈতিক অভিযোগের বাইরে আরও একটি তিক্ত প্রসঙ্গ ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। প্রায় এক বছর আগে রুদ্রনীল সমাজ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেন, যেখানে তিনি দাবি করেন যে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কিছু ক্ষমতাশালী গোষ্ঠী নাকি নিজেদের মতো নিয়ম তৈরি করে চাপ সৃষ্টি করে। এমনকি কম্পিটিশন কমিশন অফ ইন্ডিয়ার বিধিও নাকি মানা হয় না। তার মতে, প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিত্বদের নির্দেশে শুটিং বন্ধ হয়ে যায় আর কলাকুশলীদের ‘বয়কট’ করা হয়, এর ফল ভোগ করেন সাধারণ টেকনিশিয়ানরা।

আরও পড়ুনঃ জিতুর সঙ্গে শুটিংয়ে ‘না’ দিতিপ্রিয়ার! অভিনেতা-অভিনেত্রীর দ্বন্দ্ব তুঙ্গে, আর্টিস্ট ফোরামের দ্বারস্থ নায়িকা

তিনি আরও লিখেছিলেন, এসব কারণেই নাকি বাংলা সিনেমার উৎপাদন সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এই পোস্টকে অনেক টেকনিশিয়ান আজও অপমানজনক বলে মনে করেন। ফেডারেশনের বহু সদস্যের বক্তব্য, সামাজিক মাধ্যমে রুদ্রনীলের ভাষা এবং অভিযোগগুলো অযথা কলাকুশলীদের নাম খারাপ করেছে। স্বরূপ বিশ্বাস বলেছেন, ইন্ডাস্ট্রিতে রুদ্রনীলের সাফল্যের পিছনে অসংখ্য কর্মীর পরিশ্রম রয়েছে। তাই তাদের প্রতি এমন মন্তব্য তারা মেনে নিতে পারছেন না। বকেয়া অর্থ, চুক্তি-সংক্রান্ত জট এবং তাঁর বক্তব্য মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন যথেষ্ট উত্তপ্ত।