বাংলা টেলভিশনের জনপ্রিয় মুখ ‘পায়েল দে’ (Payel De) শুধু পর্দার দেবী মায়ের চরিত্রেই নয়, বাস্তব জীবনেও মা হিসেবে নিজের ভূমিকা সমানভাবে পালন করে চলেছেন। অভিনয়ের ব্যস্ততা যতই থাকুক, এর মাঝেও তিনি কখনওই ভুলে যান না যে পর্দার বাইরে তাঁর ছ’বছরে ছোট্ট ছেলে রয়েছে। পায়েল অনেক অল্প বয়সেই অভিনেতা ‘দ্বৈপায়ন দাস’কে (Dwaipayan Das) ভালোবেসেই বিয়ে করেন। এর বেশকিছু বছর পর, পুত্র মেরাকের জন্ম হয়। বর্তমানে তারকা দম্পতি ছেলেকে বড় করে তোলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট যত্নবান এবং সচেতন।
মেরাককে নিয়ে তাঁর মাতৃত্বের সেরা অভিজ্ঞতা বলতেই আজও প্রথম দিনের স্মৃতিতে ভেসে যান পায়েল। জন্মের পরপরই কোলে নেওয়ার মুহূর্তকে তিনি জীবনের সবচেয়ে বিশেষ সময় বলে মনে করেন। পায়েলের কথায়, “আমাদের ছেলের জন্ম হয়েছিল সকালে, কিন্তু বিকেলের পর ওকে প্রথম কোলে পেয়েছিলাম। জ্ঞান ফিরতেই দেখলাম ঘর পরিষ্কার করছে নার্সরা। জিজ্ঞেস করতেই ওরা বলেছিল তোমার রাজপুত্র আসছে তাই। তারপরেই দেখলাম ছোট্ট একটা মানুষকে তোয়ালে জড়িয়ে আমার কোলে দেওয়া হলো খাওয়ানোর জন্য।”
সেই প্রথম দেখাতেই এমন সংযোগ তৈরি হয়েছিল মা ও সন্তানের মধ্যে, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলেই মত পায়েলের। অভিনেত্রীর বিশ্বাস, স্তন্যপান করানোর সময়েই মা ও সন্তানের মধ্যে যে বন্ধন তৈরি করে, সেটা আজীবন একই ভাবে অটুট থাকে। উল্লেখ্য, ছেলের জন্মের কয়েক মাস পরেই কাজে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। প্রথমদিকে পায়েলের মনে হতো সন্তানের যত্ন ঠিকমতো হচ্ছে তো? তবে ধীরে ধীরে সেই ভয় কাটিয়ে ওঠেন অভিনেত্রী। এখন তিনি জানেন, কিভাবে কর্মজীবনের পাশাপাশি মাতৃত্বের দায়িত্বও সমানভাবে সামলাতে হয়।
আজ যখন মেরাককে একটু একটু করে বড় হতে দেখেন, পায়েলের কথায়, অবাক হয়ে যান কত তাড়াতাড়ি সময় কেটে যাচ্ছে ভেবে। ছেলেও কি মা-বাবার মত অভিনেতাই হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে পায়েল বলেন, “মেরাকের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট স্বপ্ন নেই। অভিনয় হোক বা অন্য পেশা— ও যেই পথে হাঁটতে চাইবে, সেই পথে হাঁটার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেব। তবে একটাই ইচ্ছে, ছেলে যেন সবার আগে একজন ভালো মানুষ হয়ে ওঠে। কারণ পৃথিবীতে ভালো মানুষের অভাব বাড়ছে দিনদিন।
আরও পড়ুনঃ দুই সন্তানের মা শুভশ্রীকে নিয়ে দেবের মন্তব্যে বিতর্ক, আবার ‘দেশু’ জুটির মধ্যে অশান্তি চরমে! এবার সমাধানে এগিয়ে এলেন টলি কুইন তথা আরেক দুই সন্তানের মা, কোয়েল মল্লিক! কী উপায় দিলেন তিনি?
আর তাই মানুষ হওয়ার শিক্ষা দেওয়াই সবচেয়ে জরুরি।” অভিনেত্রী আরও মনে করেন, মেরাকের অভিভাবক হিসেবে তাঁরা সাফল্য হবে, যেদিন মেরাকের দিকে তাকিয়ে গর্ব করে বলতে পারেন যে তাঁরা তাঁকে সঠিক শিক্ষা দিতে পেরেছেন। মাতৃত্ব নিয়ে এমন খোলামেলা চিন্তা ভাবনার জন্যই, অভিনেত্রী পায়েল দে অন্যদের থেকে আলাদা। দর্শকদের কাছে তিনি যেমন জনপ্রিয় অভিনেত্রী, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেবী, তেমনই মেরাকের কাছেও তিনি একজন আদর্শ মা।