‘‘টাকা দিয়ে রফার চেষ্টা! ভিক্টো-শ্রিয়াকে বাঁচাতে পুলিশ উঠেপড়ে লেগেছে”—ঠাকুরপুকুর কাণ্ডে বিস্ফোরক অভিযোগ মৃতের পরিবারের!

নো এন্ট্রি এলাকায় মদ্যপ অবস্থায় (Drunk Driving) গাড়ি চালিয়ে পথচারীদের ধাক্কা মারার ঘটনায় গত রবিবার থেকে উত্তাল দক্ষিণ কলকাতার ঠাকুরপুকুর (Thakurpukur) এলাকা। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ডিএইচ রোড সংলগ্ন ঠাকুরপুকুর বাজার চত্বরে ঘটে যায় এক অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা (Accident)। জানা গিয়েছে, ছোটপর্দার পরিচিত পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টো (Vikto) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়েন নো এন্ট্রি জোনে। নির্মীয়মাণ পাইপলাইনের জন্য যে রাস্তায় যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল, সেই রাস্তাতেই বিপরীত দিক থেকে গাড়ি চালিয়ে মারাত্মক বিপদের সৃষ্টি করেন তিনি।

দুর্ঘটনার ফলে এক ব্যক্তি প্রাণ হারান, এবং আরও একজন গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ভিক্টোর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করে পুলিশ। যদিও মৃত আমিনুর রহমানের পরিবার এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং ইচ্ছাকৃত খুন। পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী, গাড়িটি প্রথমে থেমে ছিল, তারপর হঠাৎ করেই গতি বাড়িয়ে তাঁদের প্রিয়জনকে ধাক্কা মারে। শুধু তাই নয়, একবার ধাক্কা মারার পর গাড়ি কিছুটা এগিয়ে গিয়ে ফের দ্রুতগতিতে এসে তাঁর গায়ে উঠে যায়, ফলে মারাত্মকভাবে জখম হন তিনি।

এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে গাড়ির ব্রেক ফেল করেছিল। কিন্তু মৃতের পরিবারের বক্তব্য, সিসিটিভি ফুটেজে তা স্পষ্ট নয়। বরং তাঁদের সন্দেহ, এটি ছিল পরিকল্পিত এক ঘটনা। পরিবারের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, দুর্ঘটনার পর সাহায্যের জন্য কোনও পুলিশের দেখা মেলেনি, এমনকি অ্যাম্বুল্যান্স ডাকার ক্ষেত্রেও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে পথচারীদের সাহায্যেই তখন ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে হয়। এই গাফিলতির জন্য প্রশাসনকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন তাঁরা।

আরও বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এনেছেন মৃতের ছেলে। তাঁর বক্তব্য, “আমার আব্বার মৃত্যুর পরে রাত বারোটার সময় পুলিশ এসে মিটমাট করার চেষ্টা করে। আমাদের কাছে সরাসরি বলা হয়, রথা করে বিষয়টা মিটিয়ে নেওয়া হোক। একজন সেলেব্রিটি গাড়ি চালাচ্ছে বলে কি আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে? আমরা বাবার জন্য ন্যায়বিচার চাই।” পরিবারের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, গাড়ির ভিতর থেকে মদের বোতল, এমনকি গাঁজার কলকে পাওয়া গেলেও সেসবের কোনও উল্লেখ এফআইআরে নেই।

আরও পড়ুনঃ মদ্যপ পরিচালকের জন্য প্রাণ হারিয়েছেন সাধারণ মানুষ! নামী পরিচালকের ভাগ্নির সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন ভিক্টো! কে সেই নামী ব্যাক্তি জানেন?

তাই তাঁরা মনে করছেন, প্রভাব খাটিয়ে দোষীদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। এই ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তাল হয়েছে সমাজ মাধ্যম। পরিচিত মুখ জড়িয়ে থাকায় জনমনে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে। পরিবারের দাবি, সেলেব্রিটি হলেই কি তারা অপরাধ করে ছাড় পাবে? এক তরতাজা প্রাণের বিনিময়ে কি প্রভাবশালীদের রেহাই দেওয়া হবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে জনমানসে। ঘটনাটি নিয়ে আরও তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে, এবং দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে একাধিক সামাজিক সংগঠনও।