“দেব-শুভশ্রী স্বেচ্ছায় এক হয়েছে, দেব কেন আমার কাছে ক্ষমা চাইবে এর জন্য?” “ওদের সম্পর্ককে বিকৃত করছেন, ভীষণ রিগ্রেসিভ!”— দেব-শুভশ্রীর পুনর্মিলন নিয়ে জল্পনায় রুক্মিণীর প্রতিক্রিয়া! সমালোচকদের কড়া জবাব অভিনেত্রীর!

টলিউডের বহুদিন পর, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এক অনন্য উৎসবের আমেজে ভরে উঠেছিল। বহু প্রতীক্ষার পর ‘দেব’ (Dev) ও ‘শুভশ্রী গাঙ্গুলী’কে (Subhashree Ganguly) একসঙ্গে বড়পর্দায় দেখার সুযোগ পেলেন দর্শকরা। দীর্ঘ প্রায় এক দশক পর এই জনপ্রিয় জুটি ফিরেছে তাঁদের নতুন ছবি ‘ধূমকেতু’-তে (Dhumketu)। ভোর থেকেই প্রেক্ষাগৃহের বাইরে ভক্তদের ঢল নামে, হাতে ব্যানার-পোস্টার, চোখে মুখে উত্তেজনা আর নস্ট্যালজিয়ার ঝলক।

এ যেন শুধু একটি ছবির মুক্তি নয়, বরং অতীতের এক বড় অধ্যায় পেরিয়ে নতুন শুরুর মুহূর্ত। এই ছবির যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে, কিন্তু নানা কারণে মুক্তি পিছিয়ে গিয়েছিল বহুবার। এই সময়ের মধ্যে দেব ও শুভশ্রী একসঙ্গে কোনও কাজ করেননি, ফলে তাঁদের প্রেম, বিচ্ছেদ ও সম্পর্ক নিয়ে গসিপ ছিল টলিপাড়ার অন্যতম আলোচ্য বিষয়। এরপর শুভশ্রী নতুন জীবন শুরু করেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে এবং দেব বেছে নেন ‘রুক্মিণী মৈত্র’কে (Rukmini Maitra)।

কিন্তু ‘ধূমকেতু’-র মুক্তিই তাঁদের ফের একসঙ্গে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। শুভশ্রীও আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, দেবের সঙ্গে অতীত তাঁর কাছে এখন একেবারেই গুরুত্বহীন। আর সেই মনোমালিন্য ভুলে মুক্তির আগে তাঁদের নৈহাটির বড়মার মন্দিরে একসঙ্গে দেখা যাওয়া ভক্তদের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে দেব-শুভশ্রীর পুনর্মিলন যতটা প্রশংসা কুড়িয়েছে, ততটাই সমাজ মাধ্যমে মিম ও মশকরা তৈরি হয়েছে।

মজার ছলে কেউ বলেছে, নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানের রাতে নাকি রাজ চক্রবর্তী ভাত খাননি! আবার কেউ টেনে এনেছেন দেবের প্রেমিকা রুক্মিণী মৈত্রের নাম। বিষয়টি নিয়ে দেব প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন রাজ, শুভশ্রী ও রুক্মিণীর কাছে। কারণ লাগাতার মিমি আর ট্রোলিং কখনও কখনও সীমা ছাড়িয়ে যায়। এবার এই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন রুক্মিণী মৈত্র। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানিয়েছেন, এসব নিয়ে তিনি একেবারেই বিরক্ত নন, বরং মজার ছলেই নেন।

তাঁর কথায়, “আমি ভীষণ একটা মজার মানুষ। হাসি পাচ্ছে খুব এসব দেখে, এইসবের পর যদি ছবিটা ভাল হয় তবে এর থেকে ভালো কিছু হবে না। আর দেবকে কেন ক্ষমা চাইতে হবে? কোনওদিন ওকে আমার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে না!” রুক্মিণী স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর ব্যক্তিগত মানসিকতা এতটাই পরিণত যে প্রেমিকের প্রাক্তনের সঙ্গে কাজ করা নিয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তাঁকে যখন প্রশ্ন করা হয়, দেব-শুভশ্রীর পুনর্মিলন কি তিনি ভালোভাবে নেননি?

আরও পড়ুনঃ মাধুরী-হেমা-রজনীকান্তের পর এবার বাংলা! ভক্তদের চোখে দেবীর আসনে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, বিনোদিনী থিয়েটারে অদ্ভুত এক পূজার সাক্ষী শহরবাসী!

তখন অভিনেত্রী বলেন, “এগুলো ভীষণ পিছিয়ে পড়া কথাবার্তা। আজকে ২০২৫-এ দাঁড়িয়ে আমদের যদি এমন বিষয় ভাবায়, সেটা ভীষণ রিগ্রেসিভ। যারা এগুলো ভাবছেন, তাঁরা মানসিক ভাবে অনেকটা পিছিয়ে।” তাঁর এই বক্তব্য অনেকের কাছেই এক শক্তিশালী বার্তা, ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও পেশাদার জীবনের মধ্যে পার্থক্য রাখা শুধু সম্ভব নয়, বরং প্রয়োজনীয়ও। ইতিমধ্যেই ‘ধূমকেতু’ টলিউড বক্স অফিসে চমক দেখাচ্ছে, চলছে হাউজফুল শো, আর এই পুরো ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছে একসঙ্গে পেশাদারিত্ব, পুরনো সম্পর্কের পরিণত সমাধান ও দর্শকদের অটুট ভালোবাসা।