বড়পর্দায় আসতে চলেছে রামকমল মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি ‘লক্ষীকান্তপুর লোকাল’ (Laxmikantapur Local)। ছবির নাম থেকেই স্পষ্ট যে, গল্পের পটভূমি একেবারে আমাদের চারপাশের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে। সেই সাধারণ ট্রেনযাত্রার মধ্যেই পরিচালক তুলে ধরবেন সমাজের এক অন্য বাস্তব। এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, সঙ্গে আছেন ‘সায়নী ঘোষ’ (Saayoni Ghosh), পাওলি দাম ও চান্দ্রেয়ী ঘোষ— তিনজনেই এখানে গৃহ পরিচারিকার ভূমিকায়। এমন চরিত্রে এত বড় মাপের অভিনেত্রীদের দেখা পাওয়া দর্শকদের কাছে নিঃসন্দেহে আকর্ষণের কারণ।
ছবিতে তিনজনেই আলাদা সামাজিক প্রেক্ষাপটের নারী, যাঁদের জীবন জুড়ে রয়েছে টানাপোড়েন, আত্মসম্মান আর সংগ্রাম। অন্যদিকে, ছবির অন্যতম প্রধান অভিনেত্রী রাজনীতিতে সক্রিয় সায়নী ঘোষের এখন প্রতিটি পদক্ষেপ ভাবনাচিন্তা করেই নিতে হয়। যাদবপুর লোকসভার সাংসদ হিসেবে তাঁর ব্যস্ত সংসদ-জীবনের মাঝেই অভিনয়ের জন্য সময় বের করা সহজ নয়। তাই নতুন ছবিতে তাঁর অংশগ্রহণ অনেককেই অবাক করেছে। কিন্তু তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, অভিনয় এখনও তাঁর মনের গভীরে রয়েছে।
তবে, জনপ্রতিনিধি হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে নারীদের অবস্থান ঠিক কেমন সায়নীর চোখে? মেয়দের ক্ষমতায়ন কি আদৌ হয়েছে? এই প্রসঙ্গে সায়নী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ হলো নারীদের ক্ষমতায়নের প্রাণকেন্দ্র! যত বাংলার বাইরে যাবেন, দেখবেন মেয়েদের কি করুণ অবস্থা। তার তুলনায় বাংলায় নারীদের যে স্বাধীনতা আর সম্মান আছে, সেটা সত্যিই গর্বের।” সায়নীর মতে, বাংলা শুধুমাত্র সংস্কৃতির রাজ্য নয়, এখানে নারীরা নিজেদের মতো করে স্বপ্ন দেখতে পারে। তিনি গর্ব করে বলেন, “নারীদের যা অবাধ বিচরণ এই বাংলায়, সেটাকে কুর্নিশ।
আমার মতে, বাংলার মেয়ে হিসেবে সবার গর্ব হওয়া উচিত।” তাঁর এই মন্তব্যে স্পষ্ট— রাজনীতি হোক বা সিনেমা, তিনি নারী স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবেই নিজেকে দেখতে চান। এরপর অভিনেত্রীকে জানতে চাওয়া হয়, ইন্ডাস্ট্রিতে এবং তার বাইরেও অনেকের ধারণা থাকে যে পর্যাপ্ত কাজ না পাওয়ার ফলেই অভিনেতা-অভিনেত্রীরা রাজনীতিতে যোগ দেন। সায়নীর ক্ষেত্রেও কি বিষয়টা একই? উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, “আমি যখন রাজনীতিতে এসেছি, সেই সময় আমি ধারাবাহিকভাবে একের পর এক ছবিতে কাজ করছি।
২০২১ সালে যখন অনেকেই শাসক দল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন আমি সর্বময়ী নেত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছি। তিনিও আমাকে বিশ্বাস করে এক সময় তাঁর প্রথম ভোটে দাঁড়ানোর কেন্দ্র থেকে দাঁড় করিয়েছেন। এখন আমি সংসদ, মানুষের জন্য কাজ করছি। অনেকের মধ্যেই একটা ধারণা আছে বিলাসিতা বজায় রাখতে শিল্পীরা রাজনীতি করেন। কিন্তু রাজনীতিটা বিলাসিতা নয়, মানুষকে বোঝা। অনেকেই বলেছিলেন রাজনীতিতে চামড়া মোটা করতে হয়।
আরও পড়ুনঃ গঙ্গা বক্ষে ভাসতে ভাসতে গান ধরলেন সায়নী ঘোষ! “দেখে তো মনে হচ্ছে ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের বড় ভিখারি!”, “চটি চাটাদের কাছ থেকে এর থেকে বেশি আর কি আশা করা যায়!” গানের সুরে দর্শকদের মন জয় করতে গিয়ে নেটিজেনদের কাছে কটাক্ষ বিদ্ধ নেত্রী সায়নী ঘোষ!
অভিনেত্রী হিসেবে রাজনীতি করতে গিয়ে আমার চামড়া মোটা করতে হয়নি। আমাকে সব সময় আগলে রেখেছেন, আমাদের দলের সর্বময়ী নেত্রী।” রাজনীতির বাইরে আবার অভিনয়েতে ফেরার ইচ্ছে আছে কিনা জানতে চাওয়া হলে অভিনেত্রী বলেন, “মানুষ যদি চায় তাহলে পাকাপাকিভাবে অভিনয়ে নিশ্চয়ই একদিন ফিরব। সব অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরই একটা খিদে থাকে, তেমন চরিত্র যদি পাই তাহলে অবশ্যই করবো।” অভিনেত্রী এদিন আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বর্তমানে রাজনীতি তার পেশা আর রাজনীতি তার নেশা।






