টলিউডের অনেক সম্পর্কই নানা কারণে আলোচনায় আসে, কিন্তু অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্ত (Sohini Sengupta) এবং সপ্তর্ষি মৌলিকের (Saptarshi Maulik) গল্পটা একটু অন্যরকম। তাঁদের ভালোবাসার সূত্রপাত, সংসারের ধরণ, সবকিছুতেই এক ধরনের স্বাভাবিকতা আছে। যেটা খুব জাঁকজমকপূর্ণ না হলেও বাস্তব জীবনের সঙ্গে বেশ মানানসই। বয়সের ফারাক নিয়ে চারপাশে যত কথা হয়েছে, দু’জনের কাছে ততটা গুরুত্ব পায়নি ব্যাপারটা। বরং তাঁরা একে অপরকে যে জায়গা দিয়েছেন, সেই পরস্পরের বোঝাপড়াই সম্পর্কটাকে এতটা শক্ত রেখেছে।
কাছের মানুষদের কথা শুনলে মনে হয়, বন্ধুর মতো পাশাপাশি হাঁটতে পারাটাই তাঁদের শক্তি, কোনও আদর্শ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা নয়। সোহিনীর এই সুখী জীবনের যাত্রাটা সহজ ছিল না, এটা অনেকে জানে। ছোটবেলা থেকেই নাটকের সঙ্গে যুক্ত, পরে ক্যামেরার সামনে নিজের জায়গা তৈরি আর ব্যক্তিগত জীবনেও উঠা-নামা মিলিয়ে অভিজ্ঞতা তাঁর কম নয়। প্রথম সংসারের ভাঙন কাটিয়ে উঠে তিনি নতুন করে জীবন সাজিয়েছেন, নিজের কাজেও সাফল্য পেয়েছেন। অন্যদিকে, সপ্তর্ষির তখনও কর্মজীবন শুরু হয়নি, অভিনয় শেখার সময়েই সোহিনীর সঙ্গে তাঁর পরিচয়।
ধীরে ধীরে কাছাকাছি আসা, একে অন্যের ওপর আস্থা তৈরি হওয়া, এসব খুব সাধারণ কিন্তু সম্পর্কের ভিত গঠনের জন্য জরুরি জিনিসই। আজ তাঁদের সংসার দীর্ঘদিনের, কিন্তু সেটায় নেই কোনও ঘোষণা বরং আছে একসঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি। তবে, যে প্রশ্নটা বহুদিন ধরে তাঁদের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়েছে। বয়সের অনেকটা ব্যবধান, সোহিনীর এটা দ্বিতীয় দাম্পত্য, এসবের সঙ্গে জুড়ে সমাজ মাধ্যম থেকে পরিচিত অনেক মানুষই জানতে চেয়েছে যে সন্তান নিয়ে তাঁদের ভাবনা কী? চারপাশের কৌতূহল অনেক সময়ই অস্বস্তিকর করে তুলেছে দম্পতিকে, কিন্তু তাঁরা তেমন প্রতিক্রিয়া দেখাননি।
বরং যেটা তাঁরা করতে চেয়েছেন, সেটা নিজেদের মতো করেই করেছেন। সমাজের প্রত্যাশা অনুযায়ী পরিবার গড়ার কোনও বাধ্যবাধকতাকে তাঁরা কখনোই চোখে দেখেননি। এই ক্ষেত্রে অবশ্য, সব বিষয়ের মতো জীবনের এই বিষয়েও ব্যতিক্রমী উদ্যোগ তাঁদের। তাদের সন্তান আছে, কিন্তু জানেন কি তাঁর নাম বা কোথায় থাকে সে? সম্প্রতি এই নিয়ে স্বয়ং মুখ খুলেছেন সপ্তর্ষি। তিনি জানিয়েছেন, তাদের আদরের সন্তানের নাম ‘বাবু’। আসলে একেবারেই মানবশিশু নয়, বরং একটি শিম্পাঞ্জি। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন! সোহিনী আর সপ্তর্ষি একটি শিম্পাঞ্জিকেই দত্তক নিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ‘তোমাদের সন্তানদের সঙ্গেও এমন হোক আমি চাই, কর্মফল ফিরেই আসেই!’ ‘ছেলে-মেয়েদের মাধ্যমে একদিন না একদিন পা’পের মূল্য চোকাতেই হবে!’ দীর্ঘ নীরবতার পর ক্ষোভ উগরে সায়কের তীব্র বার্তা!
তাঁর ঠিকানা হচ্ছে আলিপুর চিড়িয়াখানায় আর সেখানেই তার যত্নের দায়িত্ব তাঁরা নিয়েছেন বছরের পর বছর ধরে। সেখানে তাঁর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য, এই তারকা দম্পতি অর্থ প্রদান করেন। সপ্তর্ষির কথায়, “আইনত আমরাই ওর বাবা-মা!” অভিনেতার মতে, বাবুই তাঁদের সন্তান। যাকে তাঁরা মন থেকে নিজের মনে করেন। সন্তানের সংজ্ঞা যে শুধু জৈবিক সম্পর্কে বাঁধা নয়, সেটা তাঁরা খুব সহজভাবে দেখিয়ে দিয়েছেন। এক কথায়, এই সম্পর্কের মূল শক্তি বয়স নয়, সমাজের বিচারও নয়। তাঁদের গল্পে বড় কোনও নাটকীয়তা নেই। আছে শুধুই নিজেদের মতো করে বাঁচার স্বাধীনতা।






