বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়কার জনপ্রিয় এবং গুণী অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের নাম বহু বছর ধরেই তার অভিনয়ের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করেছে। তবে তার ব্যক্তিগত জীবন খুব একটা আলোচনায় থাকে না, কারণ তিনি সবসময়ই নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে গোপন রাখতে পছন্দ করেন। এভাবে কখনোই খুব বেশি প্রকাশ্যে আসেননি তিনি, কিন্তু যেভাবে তার কাজ দর্শকদের মন জয় করেছে, তাতে তার জীবন নিয়েও কৌতূহল সৃষ্টি হয়।
বাংলা নাটক এবং চলচ্চিত্র জগতে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার সুবাদে শুভাশিস মুখোপাধ্যায় সবার কাছে পরিচিত। তবে এমন এক নীরব ব্যক্তিত্বকে নিয়ে যখনই কথাবার্তা চলে, তখন তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কিছু না কিছু আলোচনা হতে থাকে। আর তার সম্পর্কের ইতিহাস তো এক অন্য রকম গল্প, যা সবসময়ই মানুষকে মুগ্ধ করেছে।
১৯৮৬ সালে অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায় তার স্ত্রী ঈশিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের সম্পর্কের সূচনা হয় মঞ্চ নাটকে কাজ করার মাধ্যমে। তখন থেকেই তাদের বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসা গভীর হয়। দীর্ঘ ৪ দশক পেরিয়ে আজও তাদের সম্পর্কে তেমন কোনো ফাটল ধরেনি। শুভাশিস নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ঈশিতা আমার জীবনে আসার পর আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। ওর মতো মানুষ সত্যিই আর হয় না।”
তবে এত বছর ধরে দাম্পত্য জীবন কাটানোর পরেও একটি বিষয় তাকে খোঁচা মেরেছে, আর তা হলো সন্তানের অভাব। অনেকেই হয়তো ভাবেন, দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে সন্তান না থাকার জন্য তার মধ্যে কোনো আক্ষেপ রয়েছে কি না। শুভাশিস মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে খুব স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমি সন্তানের বাবা হতে পারিনি তো কী? এই নিয়ে আমার কোনো দুঃখ নেই। আমি এবং ঈশিতা দিব্যি একে অপরের সঙ্গে আছি। একজন আদর্শ জীবনসঙ্গী থাকা, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
আরও পড়ুনঃ “সেদিন তো হলো গাড়ি বিক্রি, কিন্তু বিবেক বিক্রি হলো কবে?” কাশ্মীরের জঙ্গিহানায় কেন চুপ অনন্যা-সুকান্ত, প্রশ্ন তুলছে নেটপাড়া!
অভিনেতার এই বক্তব্য থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা উঠে আসে— জীবনে ভালোবাসা এবং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা অনেক বড় একটি সাফল্য, যা সন্তান থাকাটা বা না থাকাটা থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের দৃষ্টিকোণ থেকে, একজন ভালো সঙ্গী এবং সৎ সম্পর্ক জীবনকে পরিপূর্ণ করে তোলে। এভাবেই, অভিনেতা তার জীবনের দুঃখ ও কষ্টকে পরাজিত করে, একে অপরের সঙ্গেই সুখে-দুঃখে জীবন কাটানোর একটি সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।